1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : জাতীয় অর্থনীতি : জাতীয় অর্থনীতি
বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:৫৭ অপরাহ্ন

বিশ্বজুড়ে ১৮০ কোটি মানুষ স্বাস্থ্যসেবাকেন্দ্রে ঝুঁকিতে

রিপোর্টার
  • আপডেট : মঙ্গলবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২০

কূটনৈতিক প্রতিবেদক : নিরাপদ পানি ব্যবহার বা মৌলিক পানিসেবা ব্যতীত স্বাস্থ্যসেবাকেন্দ্রগুলো ব্যবহার করা বা এগুলোতে কর্মরত ১৮০ কোটি মানুষ কোভিড-১৯ বা অন্য রোগে আক্রান্ত হওয়ার ক্রমবর্ধমান ঝুঁকিতে রয়েছে বলে সতর্ক করেছে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) এবং জাতিসংঘ শিশু তহবিল (ইউনিসেফ)। গতকাল সোমবার (১৪ ডিসেম্বর) ডব্লিউএইচও-ইউনিসেফ এক যৌথ বিবৃতিতে এ তথ্য জানায়। ডব্লিউএইচওর মহাপরিচালক তেদ্রোস আধানম গ্যাব্রিয়েসাস বলেন, ‘পানি, স্যানিটেশন এবং স্বাস্থ্যবিধি ব্যতীত নার্স ও চিকিৎসকদের স্বাস্থ্যসেবাকেন্দ্রগুলোতে কাজ করতে পাঠানো, তাদের ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম ছাড়া কাজ করতে পাঠানোরই অনুরূপ। কোভিড-১৯ ঠেকানোর জন্য স্বাস্থ্যসেবাকেন্দ্রগুলোতে পানি সরবরাহ, স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করা একেবারে মৌলিক বিষয়। তবে এসব সমস্যা কাটিয়ে ওঠার ক্ষেত্রে এখনও অনেক ঘাটতি রয়ে গেছে, বিশেষ করে স্বল্পোন্নত দেশগুলোতে। ‘স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোতে ওয়াশ সম্পর্কিত বৈশ্বিক অগ্রগতি প্রতিবেদন: মৌলিক বিষয়গুলো আগে’- শীর্ষক প্রতিবেদনটি এমন সময়ে প্রকাশ করা হলো, যখন কোভিড-১৯ স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাগুলোতে সংক্রমণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকাসহ প্রধান দুর্বলতাগুলো দেখিয়ে দিয়েছে।’
স্বাস্থ্যকর্মী ও রোগীদের নিরাপত্তার জন্য পানি, স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্যবিধি (ওয়াশ) নিশ্চিত করা অত্যাবশ্যক, তা সত্ত্বেও বিশ্বব্যাপী এসব পরিষেবাগুলো নিশ্চিত করাকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয় না। প্রতি চারটি স্বাস্থ্যসেবাকেন্দ্রের মধ্যে একটিতে পানিসেবা নেই, সেবাকেন্দ্রগুলোতে সেবা নিতে গিয়ে প্রতি তিনজনের মধ্যে একজন হাত পরিষ্কার করার বা হাতের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার সুযোগ পায় না, প্রতি ১০ জনের মধ্যে একজন কোনো ধরনের স্যানিটেশন পরিষেবা পায় না এবং প্রতি তিনজনের মধ্যে একজন বর্জ্য নিরাপদে আলাদা করে রাখে না।
ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক হেনরিয়েটা ফোর বলেন, স্বাস্থ্যসেবা প্রদানে নিয়োজিত কর্মী এবং চিকিৎসার প্রয়োজন রয়েছে, এমন মানুষদের পরিষ্কার পানি, নিরাপদ টয়লেট বা এমনকি সাবান না থাকা সেবাকেন্দ্রগুলোতে পাঠানো হলে, তা তাদের জীবনকে ঝুঁকিতে ফেলবে। এ বিষয়গুলো আগেও নিশ্চিতভাবেই ছিল, তবে এ বছর কোভিড-১৯ মহামারিতে এসব বৈষম্য উপেক্ষা করা অসম্ভব করে তুলেছে। আমরা যখন পুনরায় কোভিড পরবর্তী একটি বিশ্বের স্বপ্ন দেখছি এবং তা গড়ে তুলতে কাজ করছি, তখন শিশু ও মায়েদের পর্যাপ্ত পানি, স্যানিটেশন এবং স্বাস্থ্যবিধিসম্মত পরিষেবায় সজ্জিত সেবাকেন্দ্রে পাঠানো নিশ্চিত করা এমন কিছু নয়, যা আমরা পারি বা আমাদের করা উচিত, এটা একান্ত আবশ্যক।
বিশ্বের ৪৭টি স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) সবগুলোতেই এ পরিস্থিতি সবচেয়ে খারাপ: প্রতি দুটি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রের মধ্যে একটিতে মৌলিক খাবার পানির ব্যবস্থা নেই, প্রতি চারটি স্বাস্থ্যসেবাকেন্দ্রের একটিতে হাত পরিষ্কার করার বা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ব্যবস্থা নেই; এবং প্রতি পাঁচটি স্বাস্থ্যসেবাকেন্দ্রের একটিতে মৌলিক স্যানিটেশন সুবিধা নেই। তবে এসব সমস্যার সমাধান করা সম্ভব। প্রতিবেদনের প্রাথমিক অনুমানগুলো নির্দেশ করে যে, এলডিসিভুক্ত ৪৭টি দেশের স্বাস্থ্যসেবাকেন্দ্রগুলোতে মৌলিক পানিসেবা প্রাপ্তি নিশ্চিত করার জন্য মাথাপিছু মোটামুটি এক মার্কিন ডলার প্রয়োজন হবে। পরিষেবাগুলো পরিচালনা ও বজায় রাখতে প্রতি বছর গড়ে মাথাপিছু ০.২০ মার্কিন ডলার প্রয়োজন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘ওয়াশ’ পরিষেবায় তাৎক্ষণিক ও ক্রমবর্ধমান বিনিয়োগের বড় ফায়দা রয়েছে: স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি উন্নত করা গেলে অ্যান্টিমাইক্রোবায়াল রেজিস্ট্যান্স মোকাবিলায় তা হবে ‘সেরা ক্রয়’। এটি স্বাস্থ্যসেবার ব্যয় হ্রাস করে, কারণ এটি স্বাস্থ্যসেবাজনিত সংক্রমণ কমায় (যার চিকিৎসা ব্যয়বহুল)। যেহেতু স্বাস্থ্যকর্মীদের হাতের পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করার জন্য পানি খুঁজতে হয় না, তাই এটি সময় বাঁচায়। উন্নত স্বাস্থ্যবিধি পরিষেবাগুলো গ্রহণের হার বাড়ায়। প্রতি এক ডলার বিনিয়োগে এসব কিছু মিলে দেড় ডলারের মতো ফেরত আসে।
এ পরিষেবাগুলো গর্ভবতী মা, নবজাতক ও শিশুসহ ঝুঁকির মুখে থাকা জনগোষ্ঠীর জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। স্বাস্থ্যসেবাকেন্দ্রগুলোতে ‘ওয়াশ’ পরিষেবাগুলো উন্নত করা, বিশেষ করে সন্তানের জন্ম দেওয়ার সময় গুরুত্বপূর্ণ, যখন অনেক মা ও নবজাতক সেপসিসের মতো প্রতিরোধযোগ্য সমস্যায় ভোগে এবং মারা যায়। উন্নত ‘ওয়াশ’ পরিষেবা লাখ লাখ গর্ভবতী নারী ও নবজাতকের জীবন বাঁচাতে এবং মৃত শিশু জন্মের হার কমাতে পারে। প্রতিবেদনটি প্রধান যে চারটি পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, সেগুলো হলো: ১. যথাযথ অর্থায়নে জাতীয় কর্মপরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়ন করা। ২.‘ওয়াশ’ পরিষেবা, এগুলোর ব্যবহার এবং ব্যবহার উপযোগী পরিবেশের উন্নয়নে অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ ও নিয়মিত পর্যালোচনা করা। ৩.‘ওয়াশ’ পরিষেবাগুলো চালু রাখতে এবং উন্নত স্বাস্থ্যবিধি প্রয়োগ করা ও তুলে ধরার জন্য স্বাস্থ্যখাতে নিয়োজিত কর্মীবাহিনীর সক্ষমতা গড়ে তোলা। ৪. কোভিড-১৯ মোকাবিলা এবং মানসম্পন্ন পরিষেবা প্রদান পুনরায় চালুর প্রচেষ্টাসহ নিয়মিত স্বাস্থ্যখাতের পরিকল্পনা, অর্থায়ন ও কর্মসূচিতে ‘ওয়াশ’কে অন্তর্ভুক্ত করা।
বৈশ্বিক ‘ওয়াশ’ এবং স্বাস্থ্যখাতের সহযোগীরা বৈশ্বিক ও দেশীয় পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবাকেন্দ্রগুলোর লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী পরিষেবা নিশ্চিতে তাদের সমর্থন ব্যক্ত করেছে। ২০২০ সালের মধ্যে ১৩০-এরও বেশি সহযোগী প্রয়োজনীয় সম্পদ বরাদ্দে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছে, যার মধ্যে ৩৪ সহযোগী বিশেষভাবে এসব পরিষেবার জন্য সাড়ে ১২ কোটি ডলার বরাদ্দ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© ২০২০ দৈনিক জাতীয় অর্থনীতি