বিএনপি-জামায়াতের আন্দোলনের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, অগ্নিসন্ত্রাস-অবরোধে সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। দুর্ভাগ্যের বিষয় ইদানিং আবার সেই অগ্নিসন্ত্রাস আর অবরোধের নামে আন্দোলন শুরু হয়েছে। আমি জানি না এতে কার কতটুকু লাভ হচ্ছে। কিন্তু কিছু মানুষ তো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বিশেষ করে সাধারণ মানুষের ক্ষতি হচ্ছে।
আজ শুক্রবার (১০ নভেম্বর) গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণভান্ডারে বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের দেওয়া অনুদান গ্রহণকালে তিনি এসব কথা বলেন। আসন্ন শীত-মৌসুমে শীতার্ত মানুষের সহায়তায় কম্বল ও শীতবস্ত্র প্রদানের জন্য এই অনুদান নেওয়া হয়।
তিনি বলেন, একজন মানুষ হয়তো কষ্ট করে সারাজীবনে একটা বাস (কেনেন), সেটা পোড়ালো। বাসের ভেতর হেলপার ঘুমিয়ে আছেন, সেই ঘুমন্ত মানুষকে পুড়িয়ে মারা। এই ধরনের ঘটনা কেন ঘটাচ্ছে আমি জানি না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা তো সেই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পর থেকে, সেই ২০০৮ এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ এককভাবে ২৩৩ সিট পেয়েছিল। বিএনপি পেয়েছিল মাত্র ৩০টা সিট। আর বাকিগুলো পায় অন্যরা। আমরা সরকারে এসেছি, এরপর ২০১৪, ২০১৮ সালের নির্বাচন। তখনো অগ্নিসন্ত্রাস এবং নানান ঘটনা। সেগুলো অতিক্রম করে প্রায় ১৫ বছর আমরা সরকারে।
বর্তমান বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে দেশের অর্থনীতি ঠিক রাখতে ব্যাংকসহ আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সহযোগিতা চেয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বৈশ্বিক পরিস্থিতির কারণে এখন যেমন একটা অর্থনৈতিক মন্দার প্রভাব পড়ছে, সেখানে আপনাদেরও একটু নজর দিতে হবে। আপনারা সহযোগিতা করবেন যেন আমাদের অর্থনীতি কোনোমতেই ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, নিজেদের দেশে টাকা-পয়সা থাকলে সেটা দেশের জন্যও লাভ, আর নিজেদেরও একটা নিশ্চয়তা থাকে। সেই জিনিসটা সবাইকে মাথায় রাখতে হবে। নিজের দেশটার দিকে আগে তাকাতে হবে। অনুরোধ করব সেই বিষয়টার দিকে বিশেষ দৃষ্টি দেবেন।
গত ১৫ বছরে বাংলাদেশের উন্নয়ন-অগ্রগতির কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকের বাংলাদেশ বদলে যাওয়া বাংলাদেশ।’
দারিদ্র্য বিমোচনে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, দরিদ্রের হার ৪১ শতাংশ থেকে ১৮ দশমিক ৭ শতাংশে নামিয়ে এনেছি। হতদরিদ্র ২৫ দশমিক ১ শতাংশ ছিল, সেটা আমরা ৫ দশমিক ৬ শতাংশে নামিয়ে এনেছি। আগামীতে সেইটুকুও থাকবে না। দেশে হতদরিদ্র থাকবে না। একেবারে হতদরিদ্রদের বিনা পয়সায় খাবার, ওষুধ, চিকিৎসার ব্যবস্থা আমরা করে দিচ্ছি। পাশাপাশি ঘরবাড়ি তৈরি করে দিচ্ছি।
এ সময় দেশের শীতার্ত মানুষের জন্য অনুদান প্রদান করায় ব্যাংকসহ আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে জনগণের পক্ষ থেকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান সরকারপ্রধান।