মধ্যপ্রাচ্যের দেশ লেবাননের ব্যাংকগুলো ‘অনির্দিষ্টকালের জন্য’ বন্ধ থাকবে বলে বলে জানিয়েছে দেশটির ব্যাংক অ্যাসোসিয়েশন। নিরাপত্তা না থাকার কারণ দেখিয়ে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত সপ্তাহে লেবাননে বেশ কয়েকটি ব্যাংকে কয়েকজন গ্রাহক আটকে থাকা সঞ্চয়ের অর্থ তোলার জন্য নানাভাবে হামলা চালিয়েছে। এমনকি সম্প্রতি এক নারী নিজের সঞ্চিত অর্থ তুলতেই অস্ত্র নিয়ে লেবাননের রাজধানী বৈরুতের একটি ব্যাংকে প্রবেশ করে।
এছাড়া লেবাননের অন্যান্য অঞ্চলেও বেশ কয়েকটি ব্যাংকে প্রায় একই ধরনের বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটে। এরই প্রেক্ষিতে লেবাননের ব্যাংক অ্যাসোসিয়েশন ‘অনির্দিষ্টকালের জন্য’ ব্যাংক বন্ধের এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
লেবাননের ব্যাংক অ্যাসোসিয়েশন বলছে, ব্যাংকের কর্মীরা ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে এবং এই ঝুঁকি কমানোর জন্য সরকারের পক্ষ থেকে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। গত সপ্তাহে তিনদিন ব্যাংক বন্ধ থাকার পর বৃহস্পতিবার থেকে ফের ব্যাংক খোলার কথা থাকলেও সেগুলো বন্ধই থাকবে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়।
এর আগে গত সপ্তাহে এক নারী খেলনা পিস্তল নিয়ে একটি ব্যাংকের ভেতরে অবস্থান নেন। সেখানে গিয়ে তিনি ব্যাংকে গচ্ছিত তার সঞ্চয়ের অর্থ তুলতে চান। ওই নারীর পরিবারের একজন সদস্য হাসপাতালে ছিলেন এবং তিনি হাসপাতালের বিল পরিশোধ করতে পারছিলেন না।
সঞ্চয়ের টাকা তোলার জন্য এ ধরনের ঘটনা আরও ঘটেছে। গত শুক্রবার একদিনেই এ ধরনের পাঁচটি ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, লেবানন এখন চরম আর্থিক সংকটের ভেতর দিয়ে যাচ্ছে। দেশটির ৮০ শতাংশ মানুষ খাদ্য এবং ঔষধ কেনার জন্য কার্যত সংগ্রাম করছেন। অনেক মানুষ তদের সঞ্চয়ের অর্থ ফেরত পাওয়ার জন্য ব্যাংকের ভেতরে অবস্থান নিলেও সেটি সমর্থন করছেন সাধারণ মানুষ।
ব্যাপক হতাশা এবং ক্ষোভ থেকে সাধারণ মানুষ এসব কাজ করছে বলে মনে করা হয়। মূলত এসব মানুষ আগে কখনও অপরাধ করেনি এবং ব্যাংক থেকে অর্থ তুলতে না পারার কারণে তারা নানা ধরনের বিল পরিশোধ করতে পারছেন না।
২০১৯ সাল থেকে লেবাননের ব্যাংকগুলো ডলার উত্তোলনের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সীমা নির্ধারণ করে দেয়। কারণ তখন থেকেই লেবাননের মুদ্রা পাউন্ডের ব্যাপক দরপতন হয় এবং জিনিসপত্রের দাম ব্যাপকভাবে বেড়ে যায়।