ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদপ্তর রাজধানীর গুলশানে একটি অভিজাত ফ্যাশন স্টলে অভিযান চালিয়ে ৩৯ কোটি টাকার গোপন বিক্রয় হিসাব উদঘাটন করেছে। এই ঘটনায় ভ্যাট আইনে মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে।
গুলশানের প্রতিষ্ঠানটির নাম জারা ফ্যাশন, হাউজ ৭, রোড ১৪। এই স্টলটি অভিজাত ও বিদেশি ব্রান্ডের জামাকাপড়, ঘড়ি, জুতা, ব্যাগ ও গহনাসহ নানা ধরনের পণ্য বিক্রয় করা হয়।কোন কোন পণ্যের দাম লক্ষ টাকা উপরে।
জারা ফ্যাশনের মূসক নম্বর : ০০১৪০৬৮৪৮-০১০১।
সংস্থার উপপরিচালক নাজমুন্নাহার কায়সার গতকাল ২৩ মার্চ অভিযানটি পরিচালনা করেন।অভিযানকালে অধিদপ্তরের গোয়েন্দা দল জারা ফ্যাশন থেকে হিসাবপত্র জব্দ করে আনেন।
আজ জব্দকৃত কাগজপত্র যাচাই করে প্রাথমিকভাবে দেখা যায়, গত পাঁচ বছরে প্রতিষ্ঠানটি ৩৮.৮১ কোটি টাকার বিক্রয় হিসাব গোপন করে ব্যবসা পরিচালনা করছে।এতে সরকারের ৩.৩৮ কোটি টাকার ভ্যাট ফাঁকি সংঘটিত হয়েছে।
অনুসন্ধান অনুসারে, জানুয়ারি ২০১৫ থেকে ফেব্রুয়ারি ২০২১ পর্যন্ত সময়ে জারা ফ্যাশন ৫২.৩৪ কোটি টাকার পণ্য বিক্রি করেছে।এসব বিক্রয়ের হিসাব জব্দকৃত কাগজপত্রে লিপিবদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।
কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি স্থানীয় ভ্যাট সার্কেলে মাসিক রিটার্নে ১৩.৫৩ কোটি টাকার বিক্রির হিসাব প্রদর্শন করেছে। রিটার্ন ও প্রকৃত বিক্রয়ের পার্থক্য পাওয়া যায় ৩৮.৮১ কোটি টাকা।
জারা ফ্যাশন ঐ একই সময়ে রিটার্নের মাধ্যমে ভ্যাট দিয়েছে ৬৩.৪৪ লক্ষ টাকা।প্রকৃত বিক্রয় তথ্য গোপন করায় ১.৭৯ কোটি টাকার নিট ভ্যাট ফাঁকি হয়েছে। সময়মতো ভ্যাট না দেয়ায় ভ্যাট আইন অনুযায়ী মাসিক ২% হারে আরো ১.৫৯ কোটি টাকার সুদ আদায়যোগ্য হয়েছে।
নতুন ভ্যাট আইন অনুসারে পোশাকের উপর ৭.৫% হারে ভ্যাট প্রযোজ্য।পূর্বে এই হার ৫% ছিল।
একজন কাস্টমারের অভিযোগের উপর ভিত্তি করে এই অভিযানটি করা হয়।কাস্টমার লক্ষ টাকার পণ্য কিনলেও তাকে যথাযথ ভ্যাট চালান দেয়া হয়নি। পরে তিনি ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদপ্তরে অভিযোগ দেন।
অনুসন্ধানে অভিযানে প্রাপ্ত অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়।প্রতিষ্ঠানটি ক্রেতার নিকট থেকে ভ্যাট নিলেও তা সরকারি কোষাগারে জমা করেনি।প্রতিষ্ঠানটি কোন কোন মাসে ৫০ লক্ষ টাকার বিক্রয় করলেও ভ্যাট সার্কেলে ঘোষণা দিয়েছে মাত্র ১০ লক্ষ টাকার হিসাব।
ভ্যাট আইন লংঘনের দায়ে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।