যে ব্যাটিং নৈপুণ্য দিয়ে প্রথমবারের মতো মেয়েদের বিশ্বকাপ ক্রিকেট খেলতে গিয়ে বাংলাদেশের মেয়েরা প্রথম ৪ ম্যাচে প্রশংসা কুড়িয়েছিল। একটিতে জয় তুলে নিয়েছিল পাকিস্তানের বিপক্ষে, সেই ব্যাটিং ব্যর্থতাই এখন আবার মেয়েদের নিত্য সঙ্গী। এ ব্যাটিং ব্যর্থতার কারণে উইন্ডিজকে মাত্র ১৪০ রানে আটকে রেখেও জয় তুলে নিতে পারেনি। ভারতের বিপক্ষেও চরম ব্যাটিং ব্যর্থতায় পড়ে ১১০ রানে ম্যাচ হেরেছিল। এবার সেই ব্যাটিং ব্যর্থতা টেনে এনেছে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষেও।
বৃষ্টি বিঘ্নিত ৪৩ ওভারে ম্যাচে আগে ব্যাট করে বাংলাদেশ পুরো ৪৩ ওভার খেলেও রান করেছে মাত্র ১৪৩। উইকেট পড়ে ৬টি। অস্ট্রেলিয়া সেই রান অতিক্রম করে ৩২ ওভার ১ বলে ৫ উইককেট হারিয়ে। বাংলাদেশের এটি ৬ ম্যাচে পঞ্চম হার। বাংলাদেশ শেষ ম্যাচ খেলবে ২৭ মার্চ ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়েলিংটনে। অস্ট্রেলিয়া এ ম্যাচ দিয়ে লিগ পর্বে তাদের খেলা শেষ করল শতভাগ জয় নিয়ে। আসরে একমাত্র তারাই অপরাজিত দল।
ওয়েলিংটনে বৃষ্টির কারণে খেলা যথাসমেয় শুরু হতে পারেনি। যে কারণে কমে আসে ওভারও। আর এ রকম কন্ডিশনে টস জয়টা সব সময় বড় ফ্যাক্টর থাকে। টস জেতা মানেই চোখ বন্ধ করে বোলারদের হাতে বল তুলে দেওয়া। এখানে জয়ী হন অস্ট্রেলিয়ান কাপ্তান মেগ লাননিং। তার সেই সিদ্ধান্তের শতভাগ প্রতিদান দেন বোলাররা বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের উইকেটে আটকে রেখে। রানই করতে দেননি। অবশ্য বাংলাদেশের শুরুটা বেশ ভালো ছিল।
মুর্শিদা-শারমিন মিলে উদ্বোধনী জুটিতে ৮ ওভার ১ বলে রান এনে দেন ৩৩। ১২ রান করে মুর্শিদা আউট হয়ে জুটি ভেঙে যাওয়ার পর বাংলাদেশের রানের চাকা ক্রমেই মন্থর হতে থাকে। উইকেট পড়ছে না, আবার রানও সংগ্রহ করতে পারছেন না। ব্যাটসম্যানদের রানের সঙ্গে বলের ব্যবধান দেখলেই তা পরিষ্কার হয়ে যায়। সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারী লতা ৩৩ রান করতে বল খেলেন ৬৩টি। বাউন্ডারি ছিল মাত্র ২টি। ফারজানা ২৪ রান করেন ৫৬ বলে। তার ইনিংসেও ছিল বাউন্ডারি ২টি। রুমানা ১৫ রান করেন ৪৫ বল খেলে। তিনিও বাউন্ডারি হাঁকিয়েছিলেন ২টি। এমনকি ফারজানা ৮ ও নিগার ৭ রান করতে বল খেলেছিলেন যথাক্রমে ২২ ও ৩০টি। শুধু সালমা খাতুনের স্ট্রাইক রেট ছিল কিছুটা ভালো। অপরাজিত ১৫ রান করতে তিনি বলে খেলেন ২৩টি। একটি বাউন্ডারি ছিল। অস্ট্রেলিয়ার গার্ডনার ও জোনাসন ২টি করে উইকেট নেন।
অল্প রানের পেছনে ছুটে অস্ট্রেলিয়া ৫ উইকেটে জয় পেলেও শুরুটা কিন্তু এত সহজ ছিল না। সালমা খাতুনের তোপে পড়ে ২৬ রানে ৩ উইকেট হারিয়েছিল। সালমা প্রথম বোলার হিসেবে একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৫০ উইকেট নেওয়ার কৃতিত্ব অর্জন করেন। কিন্তু এ বিপদকে বেশি ঘনিভূত হতে দেননি বেটি মুনি। এক প্রান্ত আগলে রেখে অপরাজিত ৬৬ রানের ইনিংস খেলে তিনি দলকে ১৭ ওভার ৫ বল ও ৫ উইকেট হাতে রেখেই দলকে জয় এনে দেন। আনাবেল সাউদারল্যান্ড ২৬ রানে অপরাজিত থাকেন। ৭০ রানে ৫ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর বেটি ও আনাবেল ৬৬ রান যোগ করে অবিচ্ছিন্ন থাকেন। সালমা ২৩ রানে নেন ৩ উইকেট। ১টি করে উইকেট নেন নাহিদা ও রুমানা।