1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : জাতীয় অর্থনীতি : জাতীয় অর্থনীতি
শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০২:০৫ অপরাহ্ন

আঁটি ছোট রসে টসটসে মঙ্গলবাড়িয়া লিচু

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট : শনিবার, ২২ মে, ২০২১

গ্রামজুড়ে চলছে লিচু ভাঙার মহোৎসব। রসাল, সুমিষ্ট, সুন্দর গন্ধ ও গাঢ় লাল রঙের কারণে এ লিচুর খ্যাতি ছড়িয়ে গেছে দেশজুড়ে। অনুকূল আবহাওয়ায় এবার লিচুর ফলনও হয়েছে বাম্পার। রফতানিও হচ্ছে ঢাকা, সিলেট, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়। বলছিলাম কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া পৌর এলাকার পূর্ব-দক্ষিণে অবস্থিত ছোট্ট গ্রাম মঙ্গলবাড়িয়ার লিচুর কথা। গ্রামের নামেই লিচুর নাম রাখা হয়েছে ‘মঙ্গলবাড়িয়া লিচু’।

স্থানীয় বাজারে অনেক জাতের লিচু উঠলেও ক্রেতাদের চোখ রসে টসটসে সুস্বাদু মঙ্গলবাড়িয়ার লিচুর দিকে। করোনা ভীতি উপেক্ষা করে লিচুর স্বাদ নেওয়ার জন্য মঙ্গলবাড়িয়া গ্রামে ভিড় করছেন রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার লিচু রসিক ক্রেতা।

বাগানেই এ লিচু বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে। প্রতি একশ লিচু বিক্রি হচ্ছে ৪০০-৫০০ টাকায়। মঙ্গলবাড়িয়ার অধিকাংশ লিচু বাগানই আগাম বিক্রি হয়ে যায়। কিছু পাইকার অগ্রিম গাছ কিনে অতিরিক্ত দামে লিচু বিক্রি করে থাকেন। এবার ভালো দাম পেয়ে চাষি ও পাইকার সবার মুখে হাসি।

জানা গেছে, প্রায় দুইশ বছর আগে সুদুর চীন থেকে কোনো এক ব্যক্তি প্রথমে একটি চারা গাছ এনে লাগায় কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার পৌর এলাকা মঙ্গলবাড়িয়া গ্রামে। অধিক ফলন ও রসে টসটসে ছোট বিচির কারণে এ লিচুর প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়ে উঠে এলাকাবাসী। কিছু দিনের মধ্যেই এ জাতের লিচুর কলম চারা ছড়িয়ে পড়ে গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে বাড়িতে। লাভজনক হওয়ায় দ্রুতই বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদনে আগ্রহী হয়ে উঠে গ্রামবাসী। বর্তমানে এলাকার বাড়িতে বাড়িতে শোভা পাচ্ছে এ লিচুর গাছ।

লিচু চাষি ছলিম উদ্দিন ঢাকা পোস্টকে জানান, দীর্ঘ দিন ধরে তিনি লিচু চাষের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। তার ৫০-৬০টি লিচু গাছ রয়েছে। লিচু চাষ করে তিনি আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছেন। প্রতি বছর লিচু থেকে ২-৩ লাখ টাকা আয় করেন তিনি। এ বছর সময়মতো বৃষ্টি না হওয়ায় ফলন কিছুটা কম হয়েছে বলে জানান।

লিচু চাষি শামীম জানান, এ বছর লিচুর ফলন কম হওয়ায় তার লিচু বাগানের ১৬টি লিচু গাছ বেপারির কাছে ২ লাখ ২০ হাজার টাকায় বিক্রি করেছেন।

কিশোরগঞ্জ শহর থেকে লিচু কিনতে যাওয়া ক্রেতা জুবায়েদ হাসান উৎপল ঢাকা পোস্টকে জানান, লোকমুখে মঙ্গলবাড়িয়ার লিচুর অনেক প্রশংসা শুনেছি। তাই এবার লিচু কিনতে কয়েকজন বন্ধুসহ মঙ্গলবাড়িয়ায় এসেছি। প্রশংসা যেমন শুনেছি আসলে তেমনই রসে টসটসে সুস্বাদু এ লিচু। তবে দাম অনেক বেশি।

যাত্রবাড়ী থেকে মঙ্গলবাড়িয়ায় লিচু কিনতে আসা ব্যবসায়ী আশিকুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মঙ্গলবাড়িয়ার সুস্বাদু লিচুর খবর পেয়ে লিচু কিনতে যাত্রাবাড়ী থেকে এসেছি। করোনার কারণে একা এসেছি। তবে করোনা না থাকলে পরিবারে সবাইকে নিয়ে আসতাম। লিচু বাগানে বসে অনেক লিচু খেয়েছি। পরিবার ও আত্মীয়-স্বজন এবং বন্ধু-বান্ধবদের জন্যও লিচু কিনে নিয়েছি।

লিচুর ব্যাপারি মো. জিল্লুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা প্রতি বছরই মঙ্গলবাড়িয়া গ্রাম থেকে লিচু কিনে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠায়। কিছু গাছ আমরা অগ্রিম কিনে থাকি। আবার কিছু গাছ আমরা এ সময়ে কিনে থাকি। এ বছর লিচুর মুকুল থাকা অবস্থায় বৃষ্টি কম হওয়ায় ফলন কিছুটা কম হয়েছে। গত বছর ব্যবসায় আমাদের অনেক লাভ হয়েছিল। আশা করছি এ বছরও লাভ হবে।

পাকুন্দিয়া উপজেলা কৃষি অফিসার সাইফুল হাসান আলামিন ঢাকা পোস্টকে জানান, মঙ্গলবাড়িয়ার মাটি লিচু চাষের জন্য উপযোগী। এ গ্রামের উৎপাদিত লিচু অত্যন্ত সুস্বাদু। প্রতিটি লিচুই গোলাপি রঙের। শাঁস মোটা, রসে ভরপুর, গন্ধও অতুলনীয়। উপজেলা কৃষি বিভাগ থেকে লিচু উৎপাদনের ক্ষেত্রে চাষিদের যাবতীয় পরামর্শ ও প্রযুক্তিগত সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, এ বছর বৈশাখের প্রথমে ঝড়-বৃষ্টি না হওয়ায় মুকুলের ক্ষতি হয়নি। তবে সময়মতো বৃষ্টি না হওয়ায় ফলন কিছুটা কম ও লিচুর আকার একটু ছোট হয়েছে।

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© ২০২০ দৈনিক জাতীয় অর্থনীতি