ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগকে (আইপিএল) অনেকেই ‘কোটিপতি লিগ’ বলে থাকেন। এই টুর্নামেন্ট শুরু হলে বাতাসে রুপি ওড়ে। আইপিএল এসে ক্রিকেটের ধারাটাই পাল্টে দিয়েছে। বিনোদন, ক্রিকেট আর রুপির মিশেলে আইপিএল হয়ে উঠেছে পৃথিবীর সবচেয়ে আলোচিত ক্রিকেট প্রতিযোগিতা। আইপিএলের ১২ বছরের ইতিহাসে দেশি-বিদেশি একাধিক ক্রিকেটারকে কোটি কোটি রুপি খরচ করে কিনেছে দলগুলো। ১৩তম পর্ব শুরুর আগে দেখে নেওয়া যাক তেমন ১০ জন দামি ক্রিকেটারকে।
যুবরাজ সিং : স্টাইলিশ বাঁহাতি ব্য়াটসম্যান যুবরাজ সিং। কোনো আলাদা করে পরিচয়ের অপেক্ষা রাখেন না তিনি। ২০১৫ সালে নিলামে দিল্লি ডেয়ারডেভিলস ২.৬৭ মিলিয়ন ডলার দিয়ে যুবরাজকে কেনে। তাঁর আগে ২০১৪ সালে রয়াল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর ২.৩৩ মিলিয়ন ডলার বা ১৪ কোটি রুপি দিয়ে যুবরাজকে কিনেছিল। কিন্তু পরের বছরই দল থেকে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
প্যাট কামিন্স : আইপিএলের ইতিহাসে সবচেয়ে দামি বিদেশি ক্রিকেটার হিসেবে নাম লিখিয়ে ফেলেছেন প্যাট কামিন্স। ছয় বছর পর কেকেআরে ফিরেছেন অস্ট্রেলিয়ার এই পেসার। অতীতে ২০১৪ সালে ১ কোটি রুপিতে প্যাট কামিন্সকে নিয়েছিল কেকেআর। কিন্তু ক্যারিয়ারে বরাবরই চোটপ্রবণ ক্রিকেটার কামিন্স। আইপিএলে এখন পর্যন্ত দর্শনীয় কিছু করতে পারেননি। তাঁকে ১৫.৫০ কোটি রুপিতে দলে নিয়েছে কেকেআর।
বেন স্টোকস : ২০১৭ সালে ইংল্যান্ডের অলরাউন্ডার বেন স্টোকসের বেস প্রাইজ ছিল দুই কোটি রুপি। রাইজিং পুনে সুপারজায়েন্টে ২.১৬ মিলিয়ন ডলার ১৪.৫০ কোটি রুপি দিয়ে স্টোকসকে কিনে নেয়। প্যাট কামিন্সের আগে স্টোকসই ছিলেন আইপিএল ইতিহাসে সবচেয়ে দামি বিদেশি খেলোয়াড়। ২০১৮ সালে ১২.৫০ কোটিতে স্টোকসকে কেনে রাজস্থান। যা আইপিএলের ইতিহাসে রেকর্ডের সামিল।
দীনেশ কার্তিক : উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান দীনেশ কার্তিক আইপিএলের জনপ্রিয় খেলোয়াড়। তামিলনাড়ুর এই ক্রিকেটার ঘরোয়া খেলায় নিজের দক্ষতা প্রমাণ করেছেন। ২.০৮ মিলিয়ন ডলার দিয়ে দীনেশকে কিনেছিল দিল্লি। পরে ২০১৫ সালে রয়াল চ্যালেঞ্জার্স ১.৭৫ মিলিয়ন ডলারের বিনিময়ে তাকে কিনে নেয়।
গৌতম গম্ভীর : দিল্লির সাবেক ওপেনার গৌতম গম্ভীরকে ২০১১ সালে ২.৪ মিলিয়ন ডলার দিয়ে কিনে নেয় কলকাতা নাইট রাইডার্স। ২০১১ সাল থেকে কলকাতা নাইট রাইডার্সের অধিনায়কও হন গৌতম গম্ভীর। আইপিএলের ইতিহাসে অন্যতম সবচেয়ে সফল অধিনায়কও বলা যেতে পারে গম্ভীরকে। ২০১২ ও ২০১৪ সালে দুবার টুর্নামেন্ট সেরা হয়েছে কলকাতা।
ইউসুফ পাঠান : বরোদার মারকুটে খেলোয়াড় ইউসুফ পাঠান টি-টোয়নে্টি ফরম্যাটের একেবারে যোগ্য খেলোয়াড় ছিলেন। প্রথম দিকের কয়েকটি আইপিএলে চুটিয়ে খেলেন ইউসুফ। ২০১১ সালে ২.১ মিলিয়ন ডলারের বিনিময়ে ইউসুফকে কিনে নেয় কলকাতা নাইট রাইডার্স। এর আগে রাজস্থান রয়ালসের হয়ে খেলতেন ইউসুফ।
রবিন উথাপ্পা : কর্ণাটকের ওপেনিং ব্যাটসম্যান রবিন উথাপ্পা নিজের আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ের জন্য পরিচিত। পুনে ওয়ারিয়র্স ২.১ মিলিয়ন ডলার দিয়ে উথাপ্পাকে কিনে ছিল। যদিও পরবর্তী সময়ে নাইট রাইডার্সে যোগ দেন তিনি। বর্তমানে রাজস্থানের হয়ে খেলবেন উথাপ্পা।
রোহিত শর্মা : মুম্বাইয়ের বিধ্বংসী ব্যাটসম্যান রোহিত শর্মা বরাবরই দলের তারকা পারফর্মার। ২০১১ সালে ২ মিলিয়ন ডলার দিয়ে মুম্বাই ইন্ডিয়ানস কিনে নেয় রোহিতকে। তার আগে ডেকান চার্জার্সের হয়ে তিনি আইপিএল খেলতেন। মুম্বাইয়ের অধিনাক হিসেবে দলকে চারবার চ্যাম্পিয়ন করেছেন রোহিত। যা এখন পর্যন্ত সর্বাধিক।
রবীন্দ্র জাদেজা : বাঁহাতি বোলিং অলরাউন্ডার রবীন্দ্র জাদেজাকে ২০১২ সালে ২ মিলিয়ন ডলার দিয়ে কিনে নেয় চেন্নাই সুপার কিংস। সৌরাষ্ট্রের ক্রিকেটার, তার পর থেকে চেন্নাইতেই খেলেন। বর্তমানে দেশের অন্যতম সেরা স্পিনারের পাশাপাশি সেরা অলরাউন্ডারও জাদেজা।
ইরফান পাঠান : পেস বোলিং অলরাউন্ডার ইরফান পাঠানকে ২০১১ সালে দিল্লি ডেয়ারডেভিলস ১.৯ মিলিয়ন ডলার দিয়ে কিনে নেয়। দ্রুত উইকেট তুলে নেওয়া ছাড়াও প্রয়োজনে ব্যাট হাতে তিনি অনায়াসে বল বাউন্ডারি লাইনের বাইরে পাঠাতে পারেন। যদিও এখন তিনি ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন।