আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে শেখ ফজলে নূর তাপসের উত্থানটা অনেকটাই এলাম, দেখলাম, জয় করলাম এর মত। যদিও তিনি রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান। তার বাবা শহীদ শেখ ফজলুল হক মনি আওয়ামী লীগের রাজনীতির একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব ছিলেন। আওয়ামী যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে নয়, দৈনিক বাংলার বানীর সম্পাদক হিসেবে একজন ব্যতিক্রমী রাজনৈতিক চিন্তাশীল ব্যক্তি হিসেবে তার স্থান হবে ইতিহাসে। কিন্তু শেখ ফজলে নূর তাপস শেখ ফজলুল হক মনির পুত্র হলেও তিনি রাজনীতিতে আলোচনায় আসেন ওয়ান-ইলেভেনের সময়। যে সময় আওয়ামী লীগ সভাপতি গ্রেফতার হন এবং আওয়ামী লীগের জাঁদরেল আইনজীবীরা শেখ হাসিনার মামলার দায়িত্ব নিতে অস্বীকৃতি জানান, সে সময়ে শেখ ফজলে নূর তাপস মূলত একজন আইনজীবী হিসেবে পাদপ্রদীপে আসেন। এরপর ২০০৮-এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ তাকে ধানমন্ডি আসনে মনোনয়ন দেয়। তিনবার তিনি ধানমন্ডির আসনে এমপি হওয়ার পর ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়রের জন্য প্রার্থীতা ঘোষণা করেন এবং সাঈদ খোকনকে বাদ দিয়ে আওয়ামী লীগ শেখ ফজলে নূর তাপসকে মেয়র পদে মনোনয়ন দেয়। সেই নির্বাচনে তিনি বিজয়ী হন। এখন মেয়র হিসেবে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন।
আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে তিনি কখনোই কোনো বড় পদে ছিলেন না। বরং এখন ঢাকা মহানগরীতে একটি আলংকারিক পদে তিনি রয়েছেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের মধ্যে গুঞ্জন হলো শেখ ফজলে নূর তাপস ক্রমশ আওয়ামী লীগে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছেন এবং আগামী কাউন্সিলে আওয়ামী লীগের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদে তিনি আসতে পারেন বলেও আওয়ামী লীগের মধ্যে গুঞ্জন রয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে মেয়র হিসেবে যেমন তাপস ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন, পাশাপাশি সাংগঠনিক কাজেও তাকে আগের চেয়ে অনেক বেশি মনোযোগী এবং তৎপর দেখা যাচ্ছে। ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ উপলক্ষে কর্মসূচীতে শেখ ফজলে নূর তাপস তাৎপর্যপূর্ণ কথা বলেছেন। প্রথমবারের মতো বিএনপিকে সমালোচনা করে তিনি বক্তব্য রেখেছেন। এই সমালোচনার মধ্যে অনেকেই মনে করছেন যে মূলধারার রাজনীতিতে নেতৃস্থানীয় পদে হয়তো তাপস আসতে পারেন। আগামী আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অধিবেশন নির্দিষ্ট মেয়াদের আগেই হওয়ার গুঞ্জন উঠেছে আওয়ামী লীগে। সেই কাউন্সিলে অনেক তরুণদের প্রধান্য থাকার আভাসও পাওয়া যাচ্ছে। আর সেখানে শেখ ফজলে নূর তাপসের নাম তো আলোচনায় আছে। নানাকারণেই তাপস আওয়ামী লীগের মধ্যে জনপ্রিয়তা পাচ্ছেন। তিনি একজন সৎ এবং দক্ষ প্রশাসক হিসেবে ইতিমধ্যে সুনাম অর্জন করেছেন। তিনি কর্মী বান্ধব এবং রাজনীতিতে তার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ নেই। আর এ কারণেই অনেক মনে করেছেন আওয়ামী লীগের আগামী দিনের গুরুত্বপূর্ণ নেতা হিসেবে শেখ ফজলে নূর তাপস হয়তো আবির্ভূত হতে পারে।
সূত্র : বাংলা ইনসাইডার