নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের সড়ক-মহাসড়কে ৩৮৮টি দুর্ঘটনায় আগস্ট মাসে ৪৫৯ জন নিহত হয়েছে। এসব দুর্ঘটনায় আহত হয়েছে ৬১৮ জন। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির সড়ক দুর্ঘটনা মনিটরিং সেলের পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। বুধবার গণমাধ্যমে এই প্রতিবেদন পাঠান যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগস্টে সড়ক দুর্ঘটনায় আক্রান্তদের মধ্যে ১৯৮ জন চালক, ১২৫ জন পথচারী, ৮০ জন নারী, ৪৪ জন শিশু, ৩৮ জন শিক্ষার্থী, ২২ জন পরিবহন শ্রমিক রয়েছেন। ৯ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন ৬ জন পুলিশ, ১ জন বিমানবাহিনীর সদস্য, ১ জন সিআইডি ও ১ জন সেনাবাহিনীর সদস্য। এছাড়া ৯ জন শিক্ষক, ৮ জন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, ৩ জন চিকিৎসক, ১ জন সাংবাদিক ও ১ জন প্রকৌশলীর পরিচয় সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছে।
একই সময় রেলপথে ১৫টি দুর্ঘটনায় ১৪ জন নিহত ও ৩ জন আহত হয়েছে। নৌপথে ৪১টি দুর্ঘটনায় ৮০ জন নিহত ও ৫২ জন আহত এবং ৩১ জন নিখোঁজের সংবাদ পাওয়া গেছে। সড়ক, রেল ও নৌপথে সম্মিলিতভাবে ৪৪৪টি দুর্ঘটনায় ৫৫৩ জন নিহত এবং ৬৬৯ জন আহত হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, মোট দুর্ঘটনার ৫২.৮৩ শতাংশ গাড়ি চাপা, ২৭.৮৩ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ১৩.৯১ শতাংশ খাদে পড়ে, ৪.৮৯ শতাংশ বিবিধ কারণে, ০.২৫ শতাংশ ট্রেন-যানবাহন সংঘর্ষ এবং শূন্য দশমিক ২৬ শতাংশ চাকায় ওড়না পেঁচিয়ে ঘটেছে।
পরিসংখ্যানে দুর্ঘটনার ধরন বিশ্লেষণে দেখা, গেছে এই মাসে মোট সংঘটিত দুর্ঘটনার ৪৮.৯৬ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে, ২৮.৮৬ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ১৪.৬৯ শতাংশ ফিডার রোডে সংঘটিত হয়। এছাড়া সারাদেশে সংঘটিত মোট দুর্ঘটনার ৫.১৫ শতাংশ ঢাকা মহানগরীতে, ২.০৬ শতাংশ চট্টগ্রাম মহানগরীতে ও ০.২৫ শতাংশ রেলক্রসিংয়ে সংঘটিত হয়।
প্রতিবেদন প্রকাশকালে যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, দীর্ঘ লকডাউনে গণপরিবহন বন্ধ থাকার সুযোগে নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক ও জাতীয় মহাসড়কে ব্যাটারিচালিত রিকশা, ইজিবাইক উঠে আসায় এবং বর্ষায় ক্ষতিগ্রস্ত সড়কের কারণে সড়ক দুর্ঘটনা বেড়েছে। মোটরসাইকেলের সংখ্যা ক্রমাগতভাবে বৃদ্ধি ও বেপরোয়া চলাচল সড়ক নিরাপত্তার জন্য বড় ধরনের হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া সড়ক নিরাপত্তায় দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাগুলোর স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম, দুর্নীতি ক্রমাগতভাবে বৃদ্ধি ও জবাবদিহিতার অভাবে সড়ক দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি বাড়ছে। উন্নত বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে ট্রাফিক ব্যবস্থার আধুনিকায়ন, লাইসেন্স ও গাড়ির ফিটনেস পদ্ধতি ঢেলে সাজানো ব্যাতিরেকে সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়।