জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশনের উচ্চ পর্যায়ের বিতর্ক পর্ব আজ মঙ্গলবার নিউ ইয়র্কে বিশ্ব সংস্থাটির সদর দপ্তরে শুরু হতে যাচ্ছে। এই অধিবেশনে যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল গতকাল সোমবার সকালে নিউ ইয়র্কে পৌঁছেছে।
এদিকে গতকাল সন্ধ্যায় নিউ ইয়র্কে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) বিষয়ক দুই দিনব্যাপী উচ্চ পর্যায়ের রাজনৈতিক ফোরামের আলোচনা শুরু হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা ডা সিলভার বক্তব্যের মধ্য দিয়ে সাধারণ পরিষদের উচ্চ পর্যায়ের বিতর্ক পর্ব শুরু হচ্ছে।
ব্রাজিলের প্রেসিডেন্টের পরপরই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বক্তব্য দেবেন। আজ সকাল ও বিকেলের অধিবেশন মিলে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ৩৬ জন রাষ্ট্রপ্রধানের বক্তব্য রাখার কথা রয়েছে। নিউ ইয়র্ক সময় সোমবার সন্ধ্যায় (বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার ভোরে) সাধারণ পরিষদের অধিবেশন উপলক্ষে নিউ ইয়র্কে যাওয়া বিশ্বের বিভিন্ন দেশের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদের সম্মানে নৈশ ভোজের আয়োজন করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বাইডেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এতে যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে।
সাধারণ পরিষদের উচ্চ পর্যায়ের বিতর্ক পর্ব চলবে আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। বাংলাদেশের পক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী শুক্রবার রাতে বক্তব্য দেবেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে বাংলাদেশের অভাবনীয় উন্নয়ন অগ্রযাত্রা, অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও স্বাস্থ্য খাতে সাফল্য ইত্যাদি বিষয়ের ওপর আলোকপাত করবেন। এর পাশাপাশি বিশ্বশান্তি, নিরাপত্তা, নিরাপদ অভিবাসন, বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমার নাগরিক সংকট, জলবায়ু ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা সম্পর্কিত বিষয়গুলো তাঁর বক্তব্যে উঠে আসবে।
এবারের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের প্রতিপাদ্য হলো ‘বিশ্বাস পুনর্গঠন এবং বিশ্বব্যাপী সংহতি পুনরুজ্জীবিতকরণ : সবার জন্য শান্তি, সমৃদ্ধি, অগ্রগতি এবং স্থায়িত্বের দিকে ২০৩০ এজেন্ডা এবং এর টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যগুলোকে ত্বরান্বিতকরণ।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বলেছেন, এবারের জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের মূল বিষয়গুলো বাংলাদেশের জন্য বিশেষভাবে প্রাসঙ্গিক। বিশেষ করে, যুদ্ধবিগ্রহ পরিহার করে চলমান খাদ্য ও জ্বালানি সংকট নিরসন, আর্থিক অনিশ্চয়তা মোকাবেলা করার লক্ষ্যে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করা, বিশ্বশান্তি, বহুপাক্ষিকতাবাদ ও টেকসই উন্নয়নের জন্য কার্যকর বৈশ্বিক উদ্যোগ, জলবায়ু পরিবর্তন, নারীর ক্ষমতায়ন, টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট অর্জন প্রভৃতি বিষয়ে এবারের আয়োজনে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এবারের অধিবেশনে রোহিঙ্গা সমস্যা এবং এর স্থায়ী ও টেকসই সমাধানের বিষয়টিও ব্যাপকভাবে আলোচিত হবে। এটি রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ অব্যাহত রাখতে সহায়ক হবে।