আন্তঃজেলা নয়, মহানগরীতে বাস চালুর পরামর্শ দিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম। তিনি বলেছেন, আন্তঃজেলায় বাস চলার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। তবে মহানগরীতে বাস চলতে পারে।
সোমবার (৩ মে) মহাখালীর ডিএনসিসি ডেডিকেটেড কোভিড-১৯ হাসপাতালে মেয়র আতিকুল ইসলামের সৌজন্যে দুটি অ্যাম্বুলেন্স এবং একটি লাশবাহী গাড়ি হস্তান্তর অনুষ্ঠানে তিনি এ পরামর্শ দেন। স্বাস্থ্য মহাপরিচালক বলেন, বিশেষজ্ঞদের সুপারিশে দেশে লকডাউন চলছে, এপ্রিল মাসে করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যু বেশি থাকলেও এখন কিছুটা কমে এসেছে। করোনা নিয়ন্ত্রণে আরও কিছুদিন গণপরিবহন চলাচল বন্ধ রাখতে হবে।
তিনি বলেন, ডিএনসিসি কোভিড হাসপাতালে দেশের সবচেয়ে আধুনিক আইসিইউ রয়েছে। এখানে সেন্ট্রাল অক্সিজেন সরবরাহ আছে, যেগুলোতে আইসিইউ সমমানের সেবা দেওয়া যাবে। এছাড়াও এখানে আমাদের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, নার্স আছে।স্বাস্থ্য ডিজি বলেন, আমরা জানি যে করোনা রোগটা হয় ফুসফুসে। সেই ফুসফুসের বিশেষজ্ঞরাই এখানে আছেন। তারা ঢাকা শহরের মধ্যে সবচেয়ে অভিজ্ঞ ও সবচেয়ে ভালো চিকিৎসক।
খুরশীদ আলম বলেন, হাসপাতালটি চালুর শুরু থেকেই পরিচালককে আমরা প্রতিনিয়ত নানাভাবে সহযোগিতা করে আসছিলাম। একদম যখন খালি ছিল, তখন আমাদের ডিজি অফিসের স্টোরের ফার্নিচার দিয়ে এখানে কাজ শুরু করেছি। এই হাসপাতাল চালু হওয়ার পর এখানে কোনো অ্যাম্বুলেন্স ছিল না। আমি উপজেলা থেকে একটি অ্যাম্বুলেন্স এনে রোগী সেবার ব্যবস্থা করেছিলাম। আজ এখানে আরও তিনটি অ্যাম্বুলেন্স যুক্ত হলো। আশা করছি দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে এখানে যারা সেবা নিতে আসবেন তারা এই অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহার করতে পারবেন।
তিনি আরও বলেন, হাসপাতাল চালু হাওয়ার পর আমার পরিপূর্ণ চিকিৎসক দিতে পারিনি। যে কারণে অনেকের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। তবে আপনাদের এটাও বুঝতে হবে রাতারাতি আমরা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক কীভাবে পাব। বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে আমার এই হাসপাতালে চিকিৎসক নিয়ে এসেছি। দেশ থেকে করোনা চলে গেলে এই চিকিৎসকরা আবার আগের হাসপাতালে ফিরে যাবে। তবে এই হাসপাতালটি সাধারণ রোগীর জন্য চালু থাকবে, তখন এখানে যে জনবল থাকবে সেটা স্বাস্থ্য মন্ত্রণায়লয় থেকে দেওয়া হবে। মেয়র আতিকুল ইসলামের সহযোগিতায় এটা করা হবে। তখন এই হাসপাতালটি সম্পূর্ণ কাঠামো তৈরি করে জনবল নিয়োগ দেওয়া হবে।
এসময় স্বাস্থ্য অধিদফতর মহাপরিচালক আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম ছাড়াও অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাসির উদ্দিন, প্রধান নির্বাহী সেলিম রেজাসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
জানা গেছে, এক হাজার শয্যার মধ্যে ২৫০টি শয্যা নিয়ে যাত্রা শুরু করে হাসপাতালটি। রাজধানীর মহাখালীতে ডিএনসিসির পাইকারি কাঁচাবাজারের ভবনে স্থাপন করা এক হাজার বেডের এই হাসপাতালের নাম দেওয়া হয়েছে ‘ডিএনসিসি ডেডিকেটেড করোনা হাসপাতাল’। গত ১৮ এপ্রিল হাসপাতালটি উদ্বোধন করা হয়।
হাসপাতালটিতে ২১২ শয্যার আইসিইউ (নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র) রয়েছে। এছাড়া ২৫০ শয্যার এইচডিইউ (উচ্চ নির্ভরতা ইউনিট), ৫০ বেডের জরুরি বিভাগ (৩০টি পুরুষ, ২০ নারী) ও ৫৪০ (সিঙ্গেল) রুমের আইসোলেশন ব্যবস্থা রয়েছে। এই রুমগুলো অনেকটা কেবিনের মতো। দ্রুতই বেডের সংখ্যা আরও বাড়বে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।