যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তানে দ্রুত সময়ের মধ্যে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ। একই সঙ্গে জনসাধারণের নিরাপত্তা এবং আটকে পড়া বিদেশিদের নিরাপদে প্রত্যাবর্তনের আহ্বান জানিয়েছে ঢাকা। আফগানিস্তান পরিস্থিতি নিয়ে ইসলামি সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) স্থায়ী প্রতিনিধিদের এক জরুরি সভায় এ আহ্বান জানানো হয়।
ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারীসৌদি আরবে রোববার এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে বাংলাদেশের পক্ষে অংশ নেন সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও স্থায়ী প্রতিনিধি ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী। রিয়াদের বাংলাদেশ দূতাবাস এ তথ্য জানিয়েছে। বৈঠকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত বলেন, আফগানিস্তানে রাজনৈতিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশ তার নিজস্ব আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের অভিজ্ঞতা আফগান জনগণের সুবিধার জন্য ভাগ করে নেওয়ার জন্য প্রস্তুত রয়েছে। ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, যেহেতু বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দায়িত্বশীল সদস্য সেহেতু প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে বিশ্বাস করে। বাংলাদেশ অন্য কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে না। দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের নীতি আমাদের জাতির জনকের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১৯৭২ সালের ভাষণ থেকে অনুসৃত— যেখানে তিনি ঘোষণা করেছিলেন, ‘আমরা দক্ষিণ এশিয়ায় আমাদের প্রতিবেশীদের সঙ্গে যৌথ উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির জন্য একসঙ্গে কাজ করব।’
আফগানিস্তানে আটকে পড়া বাংলাদেশিসহ সকল বিদেশিদের নিরাপদে প্রত্যাবর্তনের আহ্বান জানিয়ে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত বলেন, আফগানিস্তানের মানুষ দীর্ঘস্থায়ী শান্তি ও স্থিতিশীলতা উপভোগ করুক, সেটা আমরা চাই। আফগান জনগণের জন্য বর্তমান পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উন্নয়ন এবং মানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখা উচিত।
ওআইসির উচিত হবে আফগানিস্তানের পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা- উল্লেখ করে বাংলাদেশের প্রতিনিধি বলেন, দেশটিতে শান্তি, নিরাপওা, স্থিতিশীলতা ও উন্নয়ন নিশ্চিতকল্পে ওআইসি ও এর সদস্য দেশগুলোর করণীয় বিষয়ে বিবেচনার জন্য সুপারিশ করা। বাংলাদেশ ভাতৃপ্রতিম আফগানিস্তানের রাজনৈতিক পরিস্থিতি গভীর আগ্রহ নিয়ে পর্যবেক্ষণ করছে এবং সেখানে স্থায়ী শান্তি প্রত্যাশা করছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
সভা শেষে সর্বসম্মতিক্রমে একটি যৌথ বিবৃতি গৃহীত হয়। বিবৃতিতে বলা হয়, আফগানিস্তান বিষয়ে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণের পাশাপাশি ওআইসি মহাসচিবকে আফগানিস্তানের পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ এবং সদস্য রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে সমন্বয় পূর্বক ব্যবস্থা নিতে হবে।