নারী শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে নিষিদ্ধ করার প্রতিবাদে বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে আফগানিস্তানে। বিক্ষোভের জেরে পাঁচ নারী শিক্ষার্থীকে আটকের খবর পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার (২২ ডিসেম্বর) রাজধানী কাবুল থেকে তাদের আটক করা হয়।
গত মঙ্গলবার সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে মেয়েদের উচ্চশিক্ষা নিষিদ্ধ ঘোষণা করে তালেবান সরকার। তালেবানের এ ঘোষণার একদিন পরই বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ে নারীদের প্রবেশে বাধা দেয় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা।
তিন জন সাংবাদিককেও আটকের খবর মিলছে। তাখার প্রদেশেও বিক্ষোভ হয়েছে বৃহস্পতিবার।
গত বছর তালেবান ক্ষমতায় ফেরার পর থেকে নারী শিক্ষাকে সীমাবদ্ধ করার সর্বশেষ ঘোষণা এটি। এর আগে আফগান নারীদের মাধ্যমিক স্কুলে যেতে বিধিনিষেধ জারি করে তালেবান সরকার।
দেশটির শিক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রম ও পরিবেশের মূল্যায়ন করছেন সংশ্লিষ্টরা। ‘একটি উপযুক্ত পরিবেশ’ প্রদান না করা পর্যন্ত মেয়েদের বিশ্ববিদ্যালয়ে উপস্থিতি নিষিদ্ধ থাকবে।
এ ঘোষণার পর তালেবানের উচ্চশিক্ষা মন্ত্রী নেদা মোহাম্মদ নাদিম রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে বলেন, ড্রেস কোড অনুসরণ না করার জন্য নারীদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নিষিদ্ধ করা হয়। ‘তারা এমন পোশাক পরে যেন তারা বিয়েতে যাচ্ছে’ বলেও বেফাঁস মন্তব্য করেন তিনি।
ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ে নিষিদ্ধের প্রতিবাদে কাবুলে জড়ো হন নারী শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভকারীদের অনেকেই অভিযোগ করেছেন, তারা মারধরের শিকারও হয়েছেন।
এদিকে, আফগান নারীদের উচ্চশিক্ষা গ্রহণের সুযোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সৌদি আরব, পাকিস্তান, কাতারসহ বিভিন্ন দেশ। সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে তালেবানের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত কাভুসোগলুও। পাকিস্তান সরকারও বিষয়টির নিন্দা জানিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যন্টনি ব্লিঙ্কেন তালেবানকে সতর্ক করে বলেছেন, নারীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে নিষিদ্ধ করার খেসারত দিতে হবে। বৃহস্পতিবার, তিনি বলেন কাবুলের তালেবান নেতৃত্বাধীন সরকার যদি আফগান নারীদের তাদের মৌলিক অধিকার অস্বীকার করতে থাকে তবে বাকি বিশ্বের সঙ্গে তাদের সম্পর্কের উন্নতি ঘটবে না। বছরের সমাপ্তিতে ওয়াশিংটন ডিসিতে সংবাদ সম্মেলনে ব্লিঙ্কেন আরও বলেন, আফগান নারী ও মেয়েদের অন্ধকার ভবিষ্যতের দিকে ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।
সূত্র: বিবিসি, আল-জাজিরা