বৃহস্পতিবার (১৫ এপ্রিল) সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি প্রাঙ্গণে তার জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। জানাজার নামাজ পড়ান হাফেজ মাওলানা মুফতি আবু জাফর।
জানাজায় অংশ নেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, এলজিআরডি মন্ত্রী তাজুল ইসলাম, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস, সমাজ কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী মো. আশরাফ আলী খান খসরু, অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, সাবেক রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক কামাল হোসেন, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন ও অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন প্রমুখ।
অংশ নিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের বিচারপতি, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী, আইনজীবী ও আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, সংসদ সদস্য পংকজ দেবনাথ।
জানাজার আগে আবদুল মতিন খসরুর ছেলে আবদুল মুনায়েম ওয়াসিফ তার বাবার জন্য সবার কাছে দোয়া চান। জানাজা শেষে এ বীর মুক্তিযোদ্ধাকে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়।
পরে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও স্পিকারের পক্ষ থেকে তার কফিনে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। প্রধান বিচারপতি আপিল বিভাগের বিচারপতিদের নিয়ে, ডেপুটি স্পিকারের পক্ষে, আওয়ামী লীগের পক্ষে মাহবুব উল আলম হানিফ, আইনমন্ত্রী, অ্যাটর্নি জেনারেল, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম, বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি, কৃষকলীগ, ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগের আইন উপ-কমিটি, আবদুল মতিন খসরু অ্যাসোসিয়েটস, শ্রমিক লীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ, পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদ ও ঢাকা আইনজীবী সমিতিসহ বিভিন্ন সংগঠন কফিনে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
জানাজা শেষে তার মরদেহ গ্রামের বাড়ি কুমিল্লায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কয়েক দফা জানাজা শেষে নিজ গ্রামে দাফন করা হবে।চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত বুধবার (১৪ এপ্রিল) ৪টা ৫০ মিনিটে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে আবদুল মতিন খসরু ইন্তেকাল করেন।
জ্যেষ্ঠ এ আইনজীবী ২০২১-২০২২ সেশনের (মার্চে অনুষ্ঠিত) নির্বাচনে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন। নির্বাচনের পর গত ১৫ মার্চ তিনি করোনা টেস্ট করান। টেস্টে পজিটিভ আসার পর ১৬ মার্চ তিনি সিএমএইচে ভর্তি হন। ২৮ মার্চ তাকে আইসিইউতে হস্তান্তর করা হয়। অবস্থার উন্নতি হলে ৩১ মার্চ তাকে কেভিনে নেওয়া হয়। পর দিন ১ এপ্রিল তার করোনা পরীক্ষার ফলাফল নেগেটিভ আসে। এর মধ্যে ফের তার অবস্থার অবনতি হলে আইসিইউতে নেওয়া হয়। সবশেষ গত মঙ্গলবার (১৩ এপ্রিল) আবদুল মতিনকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়।
উচ্চ আদালতের এ জ্যেষ্ঠ আইনজীবী কুমিল্লা জেলার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নের মিরপুর গ্রামে ১৯৫০ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। তিনি এক ছেলে ও এক মেয়ের বাবা। ১৯৯১ সালে নৌকা প্রতীক নিয়ে কুমিল্লা থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তারপর ১৯৯৬, ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৯ সালে মোট পাঁচ বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
এর মধ্যে সপ্তম সংসদে (১৯৯৬-২০০১) আইনমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমান সংসদে আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি পদে রয়েছেন।