আন্তর্জাতিক ডেস্ক : পূর্ব ভূমধ্যসাগরের বিতর্কিত এলাকাকে কেন্দ্র করে গ্রিস এবং তুরস্কের মধ্যে উত্তেজনা থামছেই না। দু’পক্ষই এ নিয়ে একে অন্যকে দোষারোপ করে যাচ্ছে এবং বাক-বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ছে। ফলে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি শান্ত হওয়ার কোনো লক্ষণই নেই।
এদিকে গ্রিসকে আবারও সতর্ক করলেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান। তিনি সতর্ক করে বলেছেন, পূর্ব ভূমধ্যসাগরের বির্তকিত এলাকার বিষয়ে আঙ্কারার সঙ্গে গ্রিসকে আলোচনায় বসতে হবে। নাহলে তাদেরকে এক বেদনাদায়ক পরিণতি ভোগ করতে হবে।
ইস্তাম্বুলে একটি হাসপাতালের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান বলেন, গ্রিসকে হয় রাজনীতি ও কূটনীতির ভাষা বুঝতে হবে নয়তো বেদনাদায়ক অভিজ্ঞতার জন্য তৈরি থাকতে হবে।
গত বৃহস্পতিবার ন্যাটো প্রধান জেন্স স্টোলটেনবার্গ এক ঘোষণায় বলেন, এই উত্তেজনাকর পরিস্থিতি নিরসনে গ্রিস তুরস্কের সঙ্গে আলোচনা শুরু করতে একমত প্রকাশ করেছে। তবে পরবর্তীতে গ্রিস এই কথা অস্বীকার করেছে।
গ্রিসের এমন আচরণের পর তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত কাভুসোগলু আনাদোলু নিউজ এজেন্সিকে বলেন, তারা (গ্রিস) প্রথমে রাজি হয়েছিল। পরে তারা আবার তা প্রত্যাখ্যান করেছে। প্রকৃতপক্ষে ন্যাটো প্রধান নন বরং গ্রিস মিথ্যা বলছে। গ্রিস আবারও প্রমাণ করেছে যে, তারা আলোচনায় আগ্রহী নয়।
গত ১২ আগস্ট গ্রিক দ্বীপ কাস্তেলোরিজো উপকূলে তুরস্ক তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে ওরাক রেইস নামে একটি জাহাজ পাঠানোর পর থেকেই নতুন করে উত্তেজনা দেখা দেয়। জাহাজটির নিরাপত্তার দায়িত্বে রাখা হয়েছে তুর্কি নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজের ছোটখাটো একটি বহর।
গ্রিসও তুর্কিদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণে ওই অঞ্চলে যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করেছে। ফলে দুই পক্ষের মধ্যে কিছুটা সংঘর্ষ বেধে যায়। গ্রিস এ ঘটনাকে দুর্ঘটনা বললেও তুরস্ক এটিকে উসকানি বলে দাবি করেছে।
এদিকে, তুরস্কের ন্যাশনাল মুভমেন্ট পার্টির প্রধান ডেলভেট বাহচেলি এক ঘোষণায় জানিয়েছেন, গ্রিসের সঙ্গে যুদ্ধ সময়ের ব্যাপার মাত্র।
বাহচেলি এক বিবৃতিতে বলেন, ভূমধ্যসাগর এবং এজিয়ান অঞ্চলে আমাদের ঐতিহাসিক স্বার্থ থেকে আমাদের মুখ ফিরিয়ে নেওয়া সম্ভব নয়। তিনি আরও বলেন, মনে হচ্ছে ভূমধ্যসাগরে তাদের প্রবৃত্তি এবং আকাঙ্ক্ষা আবারও ফুলে-ফেঁপে উঠেছে। ফলে ভূমধ্যসাগর ও এজিয়ানে যুদ্ধ শুধু সময়ের ব্যাপার।
তিনি আরও বলেন, গ্রিসের উদ্দেশ্য আবারও আসা এবং আমাদের জমি দখল করা। অথচ এই এলাকা থেকে ৯৮ বছর আগেই আমরা তাদের ছুড়ে ফেলে দিয়েছি। তুরস্কের ক্ষমতাসীন দলের মিত্র এই তুর্কি রাজনীতিবিদ বলেন, এখন থেকে গ্রিসের মনোভাব ও আচরণের ওপর নির্ভর করবে যে, ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা বাড়বে নাকি কমবে।