৫৭ বছর বয়সে জেফ বেজোস ঘোষণা দিলেন, আমাজন পরিচালনার প্রধানের দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়াবেন তিনি। অ্যান্ডি জ্যাসিকে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার পদ দিয়ে জেফ হবেন প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী চেয়ারম্যান। অ্যান্ডি এত দিন আমাজনের ক্লাউড কম্পিউটিং বিভাগের প্রধান ছিলেন। আগামী জুলাই থেকে চালাবেন পুরো প্রতিষ্ঠান।
‘সব তো বুঝলাম, এবার বলো, ইন্টারনেট কী?’ ১৯৯৪ সালে যখন আমাজন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন জেফ বেজোস, এ প্রশ্নই ঘুরেফিরে তাঁকে বারবার শুনতে হয়েছে। আমাজনের পরিচয় তখন কেবল অনলাইনে বই বিক্রেতা হিসেবে। আর এখন বলা হয় ‘দ্য এভরিথিং স্টোর’, অর্থাৎ যে দোকানে সবকিছু পাওয়া যায়।
ইন্টারনেট কী, তা এখন সবাই জানে। আমাজনের সম্ভাবনা নিয়ে যাঁরা প্রশ্ন করেছিলেন, তাঁদের উত্তর পেতেও বাকি নেই। ‘আমাজন’ নামের যে মহিরুহ দাঁড় করিয়েছেন জেফ বেজোস, তা কেবল তাঁকে ধনীদের তালিকায় শীর্ষে নিয়ে যায়নি, খুচরা পণ্য বিক্রির ধারণাই বদলে দিয়েছে। আমাজন এখন ই-কমার্সের সমার্থক। সেখানেও থেমে থাকেনি আমাজন। ক্লাউড কম্পিউটিং, ভিডিও স্ট্রিমিং সেবা এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর ডিভাইস মিলিয়ে প্রায় ১ লাখ ৭০ হাজার কোটি ডলারের সাম্রাজ্য। আর এই সাম্রাজ্যের রাজা জেফ বেজোস।
তবে গতকাল মঙ্গলবার হঠাৎ করেই জেফ বেজোস ঘোষণা দিলেন, আমাজন পরিচালনার প্রধানের দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়াবেন। অ্যান্ডি জ্যাসিকে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্ব দিয়ে ৫৭ বছর বয়সী জেফ হবেন প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী চেয়ারম্যান। অ্যান্ডি এত দিন আমাজনের ক্লাউড কম্পিউটিং বিভাগের প্রধান নির্বাহীর দায়িত্ব পালন করেছেন। এখন চালাবেন পুরো প্রতিষ্ঠান। তৃতীয় প্রান্তিক, অর্থাৎ আগামী জুলাই থেকে এই পরিবর্তন আসবে আমাজনে।
আবারও ‘নতুন’ করে শুরু করতে চান বেজোস
আমাজন কর্মীদের এক ই-মেইল বার্তায় কারণ হিসেবে জেফ লিখেছেন, ‘আমার শক্তি ও মনোযোগ নতুন পণ্য এবং নতুন উদ্যোগে খরচ করতে চাই।’
অবশ্য আমাজনের দৈনন্দিন কার্যক্রম থেকে কয়েক বছর ধরেই ক্রমে সরে গিয়েছেন জেফ বেজোস। প্রধান দুই সহকারীকে সে দায়িত্ব বণ্টন করেছেন। অ্যান্ডি জ্যাসি তাঁদেরই একজন। জেফ এখন আমাজনের ভবিষ্যৎ কার্যক্রম এবং ব্যক্তিগত প্রকল্পে মনোযোগ দেবেন। ২০১৩ সালে প্রভাবশালী পত্রিকা দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট কেনেন তিনি। ব্লু অরিজিন নামের তাঁর মহাকাশ ভ্রমণ প্রতিষ্ঠানে বছরে ১০০ কোটি ডলারের বেশি খরচ হয় বলেও জানিয়েছেন।
তাই বলে আমাজন থেকে উধাও হয়ে যাবেন না জেফ বেজোস। বরং দায়িত্ব পুনর্বিন্যাস হলো। প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পর্ষদে থাকবেন। সবচেয়ে বড় শেয়ার হোল্ডারও তিনি, ১০ দশমিক ৬ শতাংশের মালিক।
যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিজনেস স্কুলে পড়াশোনা শেষে ১৯৯৭ সালে আমাজনে যোগ দেন অ্যান্ডি জ্যাসি। প্রতিষ্ঠানটির ক্লাউড কম্পিউটিং বিভাগ ‘এডব্লিউএস’ চালু করেন তিনি। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জ্যাসির নেতৃত্বেই ওরাকল এবং মাইক্রোসফটের মতো বড় প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এগিয়ে থেকেছে আমাজন। ভেরিজন, ম্যাকডোনাল্ডস ও হানিওয়েলের মতো বড় বড় প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হওয়ার মূলেও তিনি।