রাশিয়ার ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপে হয়েছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা। সৈন্য সমাবেশে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের নির্দেশনার জেরে ইইউ মন্ত্রীরা বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) এক অনানুষ্ঠানিক বৈঠকে নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে একমত হন তারা। খবর: রয়টার্সের।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র নীতির প্রধান জোসেফ বোরেল বলেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর যুদ্ধকালীন সৈন্য সমাবেশে এটিই প্রথম পদক্ষেপ, যার ঘোষণা রুশ প্রেসিডেন্ট দিয়েছেন।
নিউ ইয়র্কে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৭তম অধিবেশন উপলক্ষে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত ২৭টি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা সেখানে অবস্থান করছেন।
জোসেফ বোরেল বলেন, রাশিয়ার বিভিন্ন খাতে এবং ব্যক্তি পর্যায়ে নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত হয়েছে। একই সঙ্গে ইউক্রেনে অস্ত্র সরবরাহ অব্যাহত রাখার বিষয়ে মন্ত্রীরা একমত হয়েছেন বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, পুতিনের ঘোষণায় ইউক্রেনের অঞ্চলসমূহ তাদের অন্তর্ভুক্ত করা এবং নিজেদের রক্ষায় পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের হুমকি যুক্ত হয়েছে। এটি স্পষ্ট যে, পুতিন ইউক্রেনকে ধ্বংস করতে চান।
এর আগে বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) রাশিয়া ও এর নাগরিকদের রক্ষায় যুদ্ধ করার জন্য আরও সেনা সমাবেশের নির্দেশ দেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এই নির্দেশনার ফলে যারা কোনো এক সময় রুশ সেনাবাহিনীতে কাজ করেছেন বা প্রশিক্ষণ নিয়েছেন সেসব রিজার্ভিস্টদের এখন যুদ্ধ করার জন্য ডেকে পাঠানো হবে বলে নির্দেশ দেন তিনি।
পুতিন বলেন, মাতৃভূমি, সার্বভৌমত্ব, আঞ্চলিক অখণ্ডতা আর জনগণের নিরাপত্তা রক্ষা করার জন্য তিনি সেনা সমাবেশের নির্দেশ দিয়েছেন। বুধবার থেকেই সৈন্য সমাবেশ শুরু হয়ে যাবে বলে জানান তিনি।
পশ্চিমা দেশগুলোর প্রতি হুমকি দিয়ে তিনি বলেন, আমাদের দেশের আঞ্চলিক অখণ্ডতা যদি হুমকির মধ্যে পড়ে, রাশিয়া ও এর জনগণকে রক্ষা করার জন্য আমরা সবরকমের ব্যবস্থা নেবো। এটা কোন ফাঁকা বুলি নয়।
এদিকে রুশ প্রেসিডেন্টের এই ঘোষণার পর রাশিয়া ছাড়ার হিরিক পড়ে যায়। রাশিয়ার বাইরে যাওয়ার জন্য সব ফ্লাইটের টিকিট বিক্রি হয়ে যায়।
একই সঙ্গে পুতিনের ঘোষণার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছেন দেশটির নাগরিকরা। বিক্ষোভ করায় শত শত বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতারও করেছে পুলিশ।
রাশিয়ার মানবাধিকার গ্রুপ অভিডি জানিয়েছে, এক হাজারের বেশি মানুষকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি মানুষ গ্রেফতার হয়েছেন সেন্ট পিটার্সবার্গ ও মস্কোতে।