রিয়াল বেটিসকে হারালেই নিশ্চিত আগামী মৌসুমের চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলা, এমন সমীকরণ সামনে রেখে বেনিতো ভিয়ামারিনে পা রেখেছিল বার্সেলোনা। আনসু ফাতির গোলে সেটার খুব কাছেও চলে গিয়েছিল জাভি হার্নান্দেজের দল। তবে একটু পরই গোল হজম করে সে আশাটা ঢেকে গিয়েছিল শঙ্কার চাদরে।
সে শঙ্কার চাদর সরলো ম্যাচের একেবারে শেষ লাথিতে। আগুনে এক শটে করা জর্দি আলবার গোলে স্বাগতিকদের ২-১ গোলে হারিয়ে নিশ্চিত করে শীর্ষ চারে থাকা, সঙ্গে সঙ্গে নিশ্চিত হয়ে যায় আগামী মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলাটাও।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগ খেলার হাতছানিতে ম্যাচের শুরু থেকেই বার্সেলোনা আক্রমণ শাণিয়েছে বেশ। তবে গোলের দেখা মিলছিলই না। প্রথমার্ধে একবার খুব কাছে চলে গিয়েছিলেন রোনাল্ড আরাউহো। ২০ মিনিটে তার করা হেডার গিয়ে প্রতিহত হয় ক্রসবারে। মিনিট সাতেক পর অবশ্য গোল পেতে পারত বেটিসও। তাদেরও গোলবঞ্চিত রাখে বারপোস্ট। বক্সের বাইরে থেকে করা গিদো রদ্রিগেজের শটটা গিয়ে লাগে বারপোস্টে। ফলে প্রথমার্ধে আর গোলের দেখা পায়নি কোনো দলই।
সময় যত যাচ্ছিল বার্সার আশার প্রদীপটাও নিভে আসছিল ক্রমেই। শেষমেশ ৭৪ মিনিটে বার্সা কোচ জাভি মেমফিস ডিপাইকে তুলে মাঠে আনেন গেল সপ্তাহেই চোট থেকে ফেরা আনসু ফাতিকে। এর ঠিক এক মিনিট পরই দারুণ এক গোলে বার্সাকে আশা দেখান ১৯ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ড। জর্দি আলবার নিচু ক্রসে বক্সের একটু ভেতরে বলটা পেয়েই দুই ডিফেন্ডারে জটলা থেকে করেন শট, তাতেই বোকা বনে যান বেটিস গোলরক্ষক, বলটা গিয়ে আছড়ে পড়ে জালে।
তবে এর মিনিট দুয়েক পরই দানি আলভেসের ভুলে বিপদজনক জায়গায় ফ্রি কিক দিয়ে বসে বার্সা। নাবিল ফেকিরের নেওয়া সেই সেটপিস থেকে গোল করেন বার্সারই সাবেক ডিফেন্ডার মার্ক বার্ত্রা।
এরপর আক্রমণ হচ্ছিল, প্রতি আক্রমণও হচ্ছিল। তবে মিলছিল না গোলের দেখা। তাতে মনে হচ্ছিল আরও এক ম্যাচ বুঝি অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে বার্সাকে। সেটা শেষমেশ হয়নি আলবার কল্যাণে। যোগ করা অতিরিক্ত সময়ের একেবারে শেষ মিনিটে দানি আলভেসের ক্রস থেকে আগুনে এক ভলিতে অবিশ্বাস্য এক গোল করে বসেন বার্সার প্রথম গোলের কারিগর। এর একটু পরই বাজে রেফারির শেষ বাঁশি। বেনিতো ভিয়ামারিনকে স্তব্ধ করে বার্সা মেতে ওঠে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ খেলা নিশ্চিত করার উল্লাসে।
এই জয়ের ফলে ৩৫ ম্যাচ শেষে বার্সার পয়েন্ট দাঁড়াল ৬৯-এ। আর রিয়াল বেটিস সমান ম্যাচে ৫৮ পয়েন্ট নিয়ে রইলো লিগের পঞ্চম স্থানে। লিগের বাকি তিন ম্যাচে বার্সা যদি হেরেও যায়, আর তিন চার পাঁচে থাকা সেভিয়া, অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ আর রিয়াল বেটিস যদি সব ম্যাচ জেতেও, তাহলেও বার্সার শীর্ষ চার থেকে নামা হচ্ছে না আর। এই সমীকরণই নিশ্চিত করে দিয়েছে পরবর্তী মৌসুমে ইউরোপসেরার মঞ্চে বার্সার উপস্থিতি।