1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : জাতীয় অর্থনীতি : জাতীয় অর্থনীতি
শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৪৭ অপরাহ্ন

আলমডাঙ্গায় দরবারে গৃহবধূর মৃত্যু: পীরসহ গ্রেপ্তার ৩

সালিকিন মিয়া সাগর
  • আপডেট : সোমবার, ৩ মে, ২০২১

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধিঃ
চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় এক দরবারে গৃহবধূর মৃত্যুর ঘটনায় সেখানকার পীরসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আলমডাঙ্গার এরশাদপুর গ্রাম থেকে রোববার রাতে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। তারা হলেন গৃহবধূর স্বামী জহুরুল ইসলাম, শাশুড়ি জহুরা বেগম ও ‘পান্টু হুজুর’ নামে পরিচিত পীর সালাউদ্দীন।

ওই নারীর নাম মুক্তা মালা। তার বাড়ি মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলার বাথানপাড়ায়।

আলমডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর কবীর জানান, মুক্তা মালার বাবা আব্দুর রশিদ রোববার রাত ১০টার দিকে হত্যা মামলা করেন। আসামি করা হয়েছে মুক্তার স্বামী জহুরুল ইসলাম ও পীর পান্টু হুজুরসহ চারজনকে। রাতেই পীরের দরবার থেকে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

মামলার এজাহারে বলা হয়, আব্দুর রশিদ নিজের চিকিৎসার জন্য মেয়েকে নিয়ে চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গার পান্টু হুজুরের দরবারে কয়েক মাস ধরে নিয়মিত আসা-যাওয়া করতেন। সেখানে পান্টু হুজুরের খাদেম জহুরুল ইসলামের সঙ্গে মুক্তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বিষয়টি জেনে পরিবার থেকে গত সাত মাস আগে তাদের বিয়ে দেয়া হয়। তবে এই বিয়েতে মত ছিল না শাশুড়ি জহুরা বেগমের।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়, বিয়ের পর থেকে মুক্তার স্বামীর সঙ্গে পান্টু হুজুরের দরবারেই থাকতেন। পাশের এলাকায় থাকা শ্বাশুড়ি আসা-যাওয়া ছিল সেখানে। শাশুড়ির সঙ্গে প্রায়ই মুক্তার কলহ লেগে থাকত। এর জেরে বিভিন্ন সময় মুক্তাকে মারধর ও নানাভাবে নির্যাতন করা হতো।

মামলায় অভিযোগ করা হয়, রোববার সকালে কলহের একপর্যায়ে মুক্তা মালাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে মরদেহ পান্টু হুজুরের ঘরের আড়ার সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখা হয়। পরে দরবারের নিজস্ব ভ্যানে করে মরদেহ বাবার বাড়ি মেহেরপুরে পাঠিয়ে দেয়া হয়। মুক্তার পরিবারকে জানানো হয়, তাদের মেয়ে আত্মহত্যা করেছে।

মেয়ের মরদেহ নিয়ে দুপুরে আলমডাঙ্গা থানায় যান আব্দুর রশিদ।

তিনি বলেন, বিয়ের পর থেকেই তার মেয়ের ওপর অমানবিক নির্যাতন চালাতেন জহুরুল, তার মা জহুরা বেগম ও পান্টু হুজুর। মেয়েকে অত্যাচার করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়ার পরিকল্পনা করে তারা। তারাই মুক্তাকে গলা টিপে হত্যা করে মরদেহ ঝুলিয়ে রাখে।

আলমডাঙ্গা থানার ওসি আলমগীর জানান, মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। গলা ও বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। ময়নাতদন্তের জন্য তা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। প্রতিবেদন পেলেই জানা যাবে, কীভাবে মুক্তার মৃত্যু হয়েছে। গ্রেপ্তার আসামিদের সোমবার দুপুরে আদালতে তোলা হবে।

তিনি আরও জানান, পান্টু হুজুরকে এর আগেও ইসলাম ধর্মকে বিকৃত করা, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত আনা, প্রতারণাসহ একাধিক অভিযোগে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তিনি ভণ্ড একজন পীর।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এরশাদপুর গ্রামের অনেকেই জানান, বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিদিন পান্টু হুজুরের আখড়ায় আসতেন অসংখ্য মানুষ। তাদের বেশিরভাগই নারী। ২০০৭ সালে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেছিল। দীর্ঘদিন কারাভোগ শেষে বের হয়ে আবারও পীরবেশে প্রতারণা শুরু করেন।

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© ২০২০ দৈনিক জাতীয় অর্থনীতি