ইউক্রেনে উত্তেজনার পারদ যেন কেবলই ওপরের দিকে উঠছে। রাশিয়া যেকোনো মুহূর্তে পূর্ব ইউরোপের এ দেশটিতে হামলা করতে পারে বলে আগেই জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। একই কথা বলছে পশ্চিমা অন্যান্য দেশও। তবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন, তার দেশ কোনো ধরনের উসকানিতে পা দেবে না।
ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে রুশ সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সঙ্গে দেশটির সরকারি সেনাদের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের মধ্যে শনিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) এ কথা বলেন তিনি। খবর বিবিসির।
অবশ্য উসকানিতে সাড়া না দেওয়ার কথা বললেও ভলোদিমির জেলেনস্কি বিশ্ব নেতাদের জানিয়েছেন, রাশিয়ার আগ্রাসন থেকে নিজেকে রক্ষা করবে ইউক্রেন। জার্মানির মিউনিখে নিরাপত্তা বিষয়ক একটি বার্ষিক সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে রুশ সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদী এবং ইউক্রেনের সেনাদের মধ্যে সংঘর্ষ চলছে। সংঘর্ষের তৃতীয় দিনে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হামলায় শনিবার দুই ইউক্রেনীয় সেনা নিহতের কথা জানানো হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও বলেছেন, তিনি নিশ্চিত যে- রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা চালাবে। এ ছাড়া ইউক্রেনে হামলা চালাতে রাশিয়া অজুহাত খুঁজছে বলেও মন্তব্য করেছে পশ্চিমা দেশগুলো। অবশ্য সে ধরনের কোনো পরিকল্পনার কথা অস্বীকার করেছে রাশিয়া।
এ পরিস্থিতিতে জার্মানির মিউনিখে নিরাপত্তা সম্মেলনে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, (রাশিয়ার আগ্রাসনের আশঙ্কায়) ইউক্রেনীয়রা ‘আতঙ্কিত নয়, আমরা আমাদের মতো করে জীবনযাপন করতে চাই।’
এ ছাড়া চলমান সংকটে তিনি পশ্চিমা নেতাদেরকে মস্কোর প্রতি ‘তুষ্টির নীতি’ অবলম্বনের জন্য দায়ী করেন এবং ইউক্রেনকে নতুন নিরাপত্তা নিশ্চয়তা দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
বিবিসি বলছে, প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি সশরীরে মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন যদিও বর্তমান পরিস্থিতিতে ভ্রমণ ঝুঁকিপূর্ণ উল্লেখ করে মার্কিন কর্মকর্তারা তাকে দেশ ছাড়তে নিষেধ করেছিলেন।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে রুশ সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদী এবং ইউক্রেনের সরকারি বাহিনীর হামলা-পাল্টা হামলার ঘটনা ‘নাটকীয়ভাবে বৃদ্ধি’ পেয়েছে। পূর্ব ইউক্রেনের দোনেতস্ক এবং লুহানস্ক অঞ্চলে কেবল শনিবারই এক হাজার ৪০০-র বেশি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।
ইউক্রেন সীমান্তে দীর্ঘদিন ধরেই প্রায় এক লাখ সেনাসদস্য মোতায়েন রেখেছে প্রতিবেশী রাশিয়া। এর মধ্যে ট্যাংক ও কামানসহ যুদ্ধবিমানের বহরও ইউক্রেন সীমান্তে পাঠিয়েছে দেশটি। যেকোনো মুহূর্তে রুশ সেনারা দেশটিতে আক্রমণ করতে পারে বলেও আশঙ্কা রয়েছে। যদিও ইউক্রেনে হামলার কোনো পরিকল্পনা নেই বলে বরাবরই দাবি করে আসছে মস্কো।