স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে বৃহস্পতিবার ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচে অসাধারণ পারফরম্যান্সে স্মরণীয় এক জয়ের ক্ষণ গুনছিল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। তবে যোগ করা সময়ের শেষের দিকেই কয়েক মিনিটেই সব হিসেব পাল্টে দেয় চেলসি। রোমাঞ্চের নানা বাঁক পেরিয়ে, অবিশ্বাস্য নাটকীয়তার জন্ম দিয়ে স্মরনীয় এক জয় তুলে নিলো দলটি।
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে কোল পালমারের হ্যাটট্রিকে ৪-৩ গোলে জিতেছে চেলসি; তাদের অপর গোলদাতা কনর গ্যালাগার। ইউনাইটেডের আলেহান্দ্রো গারনাচো করেন জোড়া গোল, একবার জালের দেখা পান ব্রুনো ফের্নান্দেস। এ জয়ে ২৯ ম্যাচে ৪৩ পয়েন্ট নিয়ে দশম স্থানে উঠে এলো চেলসি। এক ম্যাচ বেশি খেলা ইউনাইটেড ৪৮ পয়েন্ট নিয়ে আছে ষষ্ঠ স্থানে।
ঘরের মাঠে দারুণ শুরু পায় চেলসি। ব্লুজরা এগিয়ে যায় চতুর্থ মিনিটেই। মাঝমাঠ থেকে কোবি মাইনোর থ্রু পাস ধরে বক্সে আড়াআড়ি ক্রস বাড়ান মালো গুস্তো। বল ইউনাইটেডের রাফায়েল ভারানের পায়ে লেগে চলে যায় কনর গ্যালাগারের কাছে। ১৬ গজ দূর থেকে ডান পায়ের নিচু জোরাল শটে জাল খুঁজে নেন এই মিডফিল্ডার।
শুরুর ধাক্কা সামলে চেলসির রক্ষণে চাপ বাড়াতে থাকে ইউনাইটেড। এরই মধ্যে অষ্টাদশ মিনিটে বক্সে মার্ক কুকুরেইয়াকে ফাউল করে বসেন আন্তোনি, পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। ওনানাকে বিপরীত দিকে ছিটকে দিয়ে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন পালমার। ব্রেন্টফোর্ডের বিপক্ষে সবশেষ ম্যাচে ড্র করে আসা ইউনাইটেড কোণঠাসা হয়ে পড়ে আরও।
৩৪তম মিনিটে নিজেদের ভুলে গোল হজম করে বসে চেলসি। গোলরক্ষককে ব্যক পাস দিলেও পারতেন কাইসাদো, কিন্তু তিনি পাশে থাকা সতীর্থকে দিতে গিয়ে বল তুলে দেন গারনাচোর পায়ে। পিছু নেওয়া ডিফেন্ডারদের ছিটকে দিয়ে লক্ষ্যভেদ করেন এই আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড।
৩৮তম মিনিটে এনসো ফের্নান্দেসের শট ওনানা ঝাঁপিয়ে আটকানোর একটু পরই সমতার স্বস্তি ফিরে ইউনাইটেড শিবিরে। দিয়োগো দালোতের ক্রসে দারুণ হেডে দূরের পোস্ট দিয়ে লক্ষ্যভেদ করেন ফের্নান্দেস।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে ফের্নান্দেসের শট এক ডিফেন্ডার ব্লক করার সময় বল তার হাতে লেগেছে দাবি করে এবং গাসমুস হয়লুন বক্সে পড়ে গেলে পরপর দুটি পেনাল্টির আবেদন করে ইউনাইটেড, সাড়া মেলেনি রেফারির। এরপর ৫৭তম মিনিটে রক্ষণের ভুলে আবারও বিপদে পড়তে বসেছিল চেলসি। তবে ভুল পাস থেকে বল পাওয়া হয়লুন শট নেওয়ার আগে ক্লিয়ার করেন দিয়াসি। পরের মিনিটে গ্লাভসের টোকায় ক্রসবারের উপর দিয়ে পালমারের শট বের করে দিয়ে ইউনাইটেডের ত্রাতা ওনানা।
আধিপত্যের ছড়ি ঘোরাতে থাকা ইউনাইটেড ৬৭তম মিনিটে এগিয়ে যায়। আন্তোনি ক্রস বাড়ানোর সময় চেলসি গোলরক্ষক পোস্টের নিচেও ছিলেন না, আবার পুরোপুরি বেরিয়ে এসে গারনাচোর পথও আগলে দাঁড়াতে পারেননি। হেডে বল জালে জড়িয়ে দেন গারনাচো।
৭৩তম মিনিটে পালমারের বাঁকানো ফ্রি কিক ফিস্ট করে ইউনাইটেডকে জয়ের পথে রাখেন ওনানা। কিন্তু নাটকীয়তার তখনও ঢের বাকি। আট মিনিট যোগ করা সময়ের শেষের দিকে ননিকে বক্সে দালোত ফাউল করলে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। ভিএআরেও টিকে যায় ওই সিদ্ধান্ত। পালমারের স্পট কিক আটকাতে পারেননি ওনানা। এরপরই ফল ঘুরিয়ে দেওয়া শেষ গোল। সতীর্থের ছোট করে নেওয়া কর্নারে বল ধরে জোরাল শট নেন পালমার; বল স্কট ম্যাকটমিনের গায়ে লেগে অনেকটা দিক পাল্টে খুঁজে নেয় জাল। জয়ের উচ্ছ্বাসের সঙ্গে টানা ব্যর্থতার এক বৃত্ত ভাঙার আনন্দও সঙ্গী হয় চেলসির।