সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জয়ের সামনে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল। আর মাত্র কয়ে ঘণ্টা।এরপরই ফয়সালা। প্রথমবারের মত শিরোপা জয় করে ইতিহাস গড়বেন সাবিনারা? নাকি আরও একবার বাড়বে অপেক্ষা। আজ ফাইনালে নেপালকে হারাতে পারলেই ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা হবে সাবিনাদের নাম।
এই নিয়ে পঞ্চমবার সাফের ফাইনালে খেলছে নেপাল। এর আগের পাঁচবারের দেখায় প্রতিবারই ভারতের কাছে হারের তেতো স্বাদ পেয়েছে তারা। অপরদিকে এতবার না হলেও স্বপ্নভঙ্গের অতীত সঙ্গী বাংলাদেশেরও। ২০১৬ সালে শিলিগুড়িতে ফাইনালে হেরেছিল তারা সেই ভারতের কাছেই।
আগের সব সাফে বিজয়ী ভারত এবার বিদায় নিয়েছে সেমি-ফাইনাল থেকেই। ফাইনালে ওঠার পথে গ্রুপ পর্বে ভারতকে প্রথমবার হারিয়েছে বাংলাদেশই। এদিকে নেপাল প্রথমবার ভারতকে হারানোর স্বাদ পেয়েছে সেমি-ফাইনালে। আজ (১৯ সেপ্টেম্বর) সোমবার বাংলাদেশ সময় বিকাল ৫টা ১৫মিনিটে প্রথম শিরোপা জয়ের স্বপ্ন নিয়ে কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামের আঙিনায় নামবে দুই দল।
সেমিফাইনালে নেপাল ১-০ গোলে হারিয়েছে ভারতকে। অন্যদিকে গ্রুপ পর্বে ভারতকে ৩-০ গোলে হারিয়েছিল বাংলাদেশের মেয়েরা। তাই মোটা দাগে বলে দেওয়া যায় এবারের আসরের সেরা দুই দলই ফাইনালের মঞ্চে। দুই দলের সামনেই ইতিহাস গড়ার হাতছানি।
ফাইনালে মুখোমুখি হওয়া বাংলাদেশ ও নেপাল- এখনও কোনও গোল হজম করেনি। বাংলাদেশ চার ম্যাচে গোল দিয়েছে ২০টি, নেপাল ৩ ম্যাচে দিয়েছে ১১টি। বাংলাদেশ ও নেপালের যে দলই চ্যাম্পিয়ন হোক তাদের ভাঙতে হবে প্রতিপক্ষের শক্ত রক্ষণ দেয়াল।
যে ধারায় খেলে দুই দল ফাইনালে উঠেছে তাতে কোনো দলকে আগেভাগে ফেভারিট বলে দেওয়ার উপায় নেই। দিনটি যাদের থাকবে তারাই ঘরে তুলবে সাফের শিরোপা। নেপালের অন্যতম শক্তি হবে তাদের সমর্থক। এটা ধরেই নেওয়া যায় দশরথ রঙ্গশালা স্টেডিয়ামের গ্যালারি ভরিয়ে দেবে স্বাগতিক দর্শকরা।
আরেকটি বিষয় হলো নেপালি দর্শকরা গ্যালারিতে চুপচাপ বসে থাকে না। তারা সারাক্ষণ উৎসবের আমেজে দলকে সমর্থন দেয় এবং অনুপ্রেরণা যোগায়। বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত সব ম্যাচই দর্শক অনুকূলে খেলে এসেছে। এই প্রথম খেলতে হবে গ্যালারির প্রতিকূলে।
৪০টি আন্তর্জাতিক গোল করা সাবিত্রা ভান্ডারি ডেঙ্গু থেকে সেরে উঠে শনিবার পুরোদমে অনুশীলন করায় নেপালের আক্রমণভাগ ফিরে পেয়েছে পুরো শক্তি। বাংলাদেশের জন্য আরেকটি দুঃসংবাদ হতে পারে অন্যতম ফরোয়ার্ড সিরাত জাহান স্বপ্নার চোট। তাতে ভড়কে যাচ্ছে না লাল-সবুজ জার্সিধারীরা। আঁখি-মারিয়া-সাবিনাদের নিয়ে উপভোগ্য ফুটবলের পসরা মেলে বাজিমাত করতে চান দলের কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন।
প্রথমবারের মত সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জিতে ইতিহাস লিখবে কোন দল তা সময়ই বলে দেবে। ফুটবলপ্রেমীদের নজর এখন এই দুই দলের দিকেই। শক্তির বিচারে এবার সমান তালে লড়াই করা দুই দলের মধ্যে আজ দিনটি কাদের হবে সেটিই এখন দেখার অপেক্ষায়।