রাজধানীর সেগুনবাগিচায় এনবিআর সম্মেলন কক্ষে এই প্রাকবাজেট আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। বেসিস ছাড়াও এদিন আলোচনায় অংশ নেয় বাংলাদেশ মোবাইল ফোন ইন্ডাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন, টিভি ম্যানুফেকচারার্স অ্যাসোসিয়েশশনসহ বেশ কয়েকটি অ্যাসোসিয়েশন অংশ নেন।
এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মু. রহমাতুল মুনিম ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে আলোচনায় অংশ নেন।
আলোচনায় বেসিস সভাপতি আলমাস কবির বলেন, “বর্তমানে আইসিটি খাতে ৩৫ শতাংশ করপোরেট কর নেওয়া হচ্ছে। এটা এই খাতের ওপর একটি বোঝা। এটি কমিয়ে ১০ শতাংশ করার প্রস্তাব করছি।”
তিনি সফটওয়্যার ও তথ্য প্রযুক্তি পরিষেবা সক্ষমতা খাতের ওপর আগামী ২০৩০ সাল পর্যন্ত কর অব্যাহতিও চান।
এর পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে তিনি বলেন, “দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীরা ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে হিমশিম খাচ্ছেন। টেকসই ব্যবসার জন্য বাজার সৃষ্টি চলমান, তবে নিশ্চিত নয়। কোভিড-১৯ এর কারণে এ খাতের ব্যবসায়ীরা নতুন করে পিছিয়ে পড়েছে। বৈদেশিক বাজার সম্প্রসারণের চেষ্টা অব্যাহত থাকলেও তেমন একটা অগ্রগতি হয়নি।
“বর্তমানে এ খাতে ২০২৪ সাল পর্যন্ত কর অব্যাহতি সুবিধা রয়েছে। এই সুবিধা ২০৩০ সাল পর্যন্ত উন্নীত করা হোক।”
এছাড়া তিনি সাইবার সিকিউরিটি পণ্যের ওপর আরোপিত উচ্চ শুল্কহার কমানোর পাশাপাশি সফটওয়্যার, ডেটাবেইজ, অপারেটিং সিস্টেম আমদানির ক্ষেত্রে কাস্টমস কিম্বা এনবিআরে না গিয়ে সরাসরি ব্যাংকে অর্থ পরিশোধের সুযোগ দেওয়ার প্রস্তাব রাখেন।
এদিন এনবিআরের সঙ্গে আলোচনায় বাংলাদেশ মোবাইল ফোন ইন্ডাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া শাহিদ দেশে মোবাইল ফোনের যেসব যন্ত্রাংশ উৎপাদন করা হয় তার ওপর পাঁচ শতাংশ ভ্যাট কমিয়ে তিন শতাংশ করার প্রস্তাব করেন।
এছাড়া বাংলাদেশ টিভি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সোহেল খান প্রিন্টেড সার্কিট বোর্ডের উপর বর্তমানে যে ১৫ শতাংশ হারে শুল্ক নেওয়া হচ্ছে তা বহাল রেখে সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহারের প্রস্তাব করেন।
টিভি উৎপাদনে যেসব পণ্য বিদেশ থেকে আমদানি করা হয় তার উপর বিদ্যমান শুল্ক হার ২৫ শতাংশের পরিবর্তে ১৫ শতাংশ করার প্রস্তাবও করেন তিনি।
এসময় এলইডির মেটাল ফ্রেম আমদানির উপর এখন আকার ভেদে শুল্কায়ন হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, “যেকোনো আকারের ফ্রেম আমদানির উপর সমান ১০ শতাংশ হারে শুল্কায়নের প্রস্তাব করছি।”
আলোচনায় এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মু. রহমাতুল মুনিম বলেন, “আমরা দেশীয় শিল্পায়নের বিকাশকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে শিল্পবান্ধব প্রস্তাব বিবেচনা করব। কিন্তু এক্ষেত্রে ব্যবসায়ীরা যেসব সুযোগ চাচ্ছেন তা শিল্প সম্প্রসারণে সহায়ক নাকি শুধু তাদের অর্থনৈতিক লাভকে প্রাধান্য দিচ্ছেন, সেই বিষয়টিও আমরা দেখব।”
আলোচনায় অংশ নেন এনবিআরের মো. আলমগীর হোসেন, সৈয়দ গোলাম কিবরিয়া ও মাসুদ সাদিক।