আলোচিত তরুণ ইসলামী বক্তা আবু ত্ব-হা মোহাম্মদ আদনানের নিখোঁজ হওয়ার রহস্য উদঘাটন করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
আজ বুধবার (১৬ জুন) সকালে গাজীপুরের সফিপুরে আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর ব্যাটালিয়ন আনসারদের ৬ মাসের মৌলিক প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ইসলামী বক্তা আবু ত্ব-হা আদনান নিখোঁজের বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরে রয়েছে। তাঁর নিখোঁজের রহস্য উদঘাটন করা হবে। তিনি বলেন, ‘ত্ব-হা কোথায় কী অবস্থায় আছেন, তাঁর রহস্য উদঘাটন করা হবে। তিনি বলেন, ‘যারাই আইন ভঙ্গ করছে, তাদের আইনের আওতায় আনা হচ্ছে, ভবিষ্যতেও আনা হবে।’
এর আগে একাডেমির প্যারেড গ্রাউন্ডে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে আনসার সদস্যদের উদ্দেশে দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দীন ও বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মিজানুর রহমান শামীম এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
অভিবাদন মঞ্চে প্রশিক্ষণার্থীদের সালাম গ্রহণ ও কুচকাওয়াজ পরিদর্শন করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। প্রায় এক হাজার নবনিযুক্ত ব্যাটালিয়ন আনসার ৬ মাসের মৌলিক প্রশিক্ষণ নেন। এদের মধ্যে ৩ কৃতী ও চৌকস প্রশিক্ষণার্থীকে ক্রেস্ট ও পুরস্কার প্রদান করেন মন্ত্রী।
গত ১০ জুন বিকেলে ঢাকায় যাওয়ার কথা বলে বাসা থেকে বের হন আদনান। রাত আড়াইটার দিকে স্ত্রী হাবিবা নূরের সঙ্গে মোবাইল ফোনে শেষ কথা হয় তাঁর। আদনানের সঙ্গে থাকা আব্দুল মুহিত, মোহাম্মদ ফিরোজ ও গাড়িচালক আমির উদ্দিনও নিখোঁজ। তাঁদের সবার মোবাইল ফোনও বন্ধ। এর পর ছয় দিনেও খোঁজ মেলেনি এই তরুণ ইসলামী বক্তার।
আদনানের স্বজন ও প্রতিবেশীদের ভাষ্য, একসময় ভালো ক্রিকেট খেলতেন আদনান। রংপুরের ক্রিকেট অঙ্গনে সবার পরিচিত মুখ ছিলেন তিনি। রংপুর লায়ন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজের গণ্ডি পেরিয়ে ভর্তি হন রংপুর কারমাইকেল কলেজে। সেখান থেকে দর্শনে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করেন তিনি। স্নাতকে পড়ার সময় থেকেই ধর্মের প্রতি তাঁর ঝোঁক বাড়তে থাকে। বাবার মৃত্যুর পর রংপুর নগরীর সেন্ট্রাল রোডের নানার বাড়িতে বড় হয়েছেন তিনি। ৩১ বছর বয়সী আদনান ইসলাম ধর্মের প্রচুর বই পড়তেন এবং গবেষণা করতেন। দর্শনে স্নাতকোত্তর করা আদনান অল্প দিনেই হয়ে ওঠেন একজন ভালো ইসলামী বক্তা। তিনি উগ্রবাদকে সমর্থন করতেন না বলেও দাবি করেছেন স্বজনরা।
ত্ব-হার মা আজেদা বেগম বলেন, ‘রংপুর মেট্রোপলিটন কোতোয়ালি থানায় জিডি করা হয়েছে।’ রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার (অপরাধ) আবু মারুফ হোসেন গতকাল বলেন, ‘ঘটনাটি ঘটেছে ঢাকায়। বাড়ি রংপুরে হওয়ায় আদনানের মায়ের করা জিডির সূত্র ধরে অনুসন্ধান চলছে। আশা করি শিগগিরই এই রহস্যের জট খুলবে।’