ই-সিগারেট নিষিদ্ধ হওয়ার পথে আরও একধাপ এগিয়ে গেল বাংলাদেশ। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে, দেশে ই-সিগারেট আমদানি, উৎপাদন, বিক্রি, বিপণন ও ব্যবহার নিষিদ্ধের দাবিতে; যৌথ বিবৃতির মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর নিকট সুপারিশ জানিয়েছেন ১৫৩ জন সংসদ সদস্য।
সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্যসচিব ড. আহমদ কায়কাউসের নিকট সংসদ সদস্যবৃন্দের স্বাক্ষরিত এই চিঠি হস্তান্তর করেন, ‘বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফোরাম ফর হেলথ এন্ড ওয়েলবিং’ এর চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবে মিল্লাত এমপি, সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী অধ্যাপক আফম রুহুল হক এমপি, জাতীয় সংসদের হুইপ মাহাবুব আরা বেগম গিনি, এমপি, হাফিজ আহমেদ মজুমদার এমপি, এডভোকেট সৈয়দা রুবিনা আক্তার এমপি, শবনম জাহান এমপি, অপরাজিতা হক এমপি, শিউলী আজাদ এমপি এবং সিটিএফকে এর লিড পলিসি এডভাইজর মো. মোস্তাফিজুর রহমান।
বিবৃতিতে বলা হয়, ই-সিগারেট ব্যবহারে স্ট্রোকের ঝুঁকি ৭১ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়। অন্যদিকে, হার্ট অ্যাটাক ও হৃদরোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায় যথাক্রমে ৫৯ ও ৪০ শতাংশ পর্যন্ত। ই-জুসে থাকা ক্ষতিকর ফ্লেভারিং এজেন্টের কারণে শ্বাসতন্ত্র, লিভার, কিডনির দীর্ঘমেয়াদী রোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে। একজন স্বাভাবিক ওজনের মানুষের মৃত্যুর জন্য এক চা-চামচ তরল নিকোটিনই যথেষ্ট। এতে ব্যবহৃত তরল ই-জুসের মূল উপাদান হিসেবে থাকে ভেজিটেবল গ্লিসারল ও প্রোপাইলিন গ্লাইকল, যা খাদ্যদ্রব্য হিসেবে বিষাক্ত না হলেও এর বাষ্প শ্বাসতন্ত্রের দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতি করতে পারে। ই-সিগারেটের নিকোটিন শিশু ও গর্ভবতী মায়েদের জন্য ভয়ানক বিপদজনক। উচ্চমাত্রার এই নিকোটিন স্নায়ুতন্ত্রের স্টেম সেলকে ধ্বংস করে অকাল বার্ধক্যসহ স্নায়ুতন্ত্রের বিভিন্ন রোগের কারণ হয়।ইতোমধ্যে ৪২টি দেশে ই-সিগারেট বা ভেপিং নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
তবে বাংলাদেশে ই-সিগারেট নিষিদ্ধ করার একাধিকবার দাবি উঠেছে। বাংলাদেশের ই-সিগারেটের মূল ক্রেতা কিশোর ও তরুণ। বয়োজ্যেষ্ঠদের মাঝেও এর জনপ্রিয়তা বাড়ছে। তাছাড়া এই পণ্য আমদানির বিষয়ে কোন প্রকারের নিয়মনীতি না থাকায় পরিস্থিতি আরও ঝুঁকিপূর্ণ হচ্ছে। এমতাবস্থায় ক্ষতিকর এই পণ্য ব্যবহার ব্যাপকভাবে শুরু হওয়ার আগেই তা নিষিদ্ধ করা জরুরী। একটি সুস্থ ও সুন্দর ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এবং প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুত তামাকমুক্ত বাংলাদেশ বাস্তবায়নে, ই-সিগারেট নিষিদ্ধ করা হতে পারে নজিরবিহীন পদক্ষেপ।
তামাকমুক্ত বাংলাদেশ বাস্তবায়নে সংসদ সদস্যের এই উদ্যোগের বিষয়ে অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবে মিল্লাত, এমপি বলেন, ‘ই-সিগারেট সহ প্রত্যেকটি তামাকজাত পণ্যই স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। বিশেষ করে তরুণ সমাজকে ই-সিগারেটসহ তামাক ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। এজন্য তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন এবং কর বৃদ্ধি করা জরুরী।’
সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী আফম রুহুল হকসহ উপস্থিত সকল সংসদ সদস্যগণ তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন এবং কর বৃদ্ধির ব্যাপারে তাদের মতামত ব্যক্ত করেন। বিশেষ করে ই-সিগারেট অতি দ্রুত নিষিদ্ধ করার দাবি জানান।
আনুষ্ঠানিকভাবে এই চিঠি হস্তান্তর বিষয়ক আলোচনায় প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস বলেন, ক্ষতিকর তামাকের বিরুদ্ধে জাতীয় সংসদ সদস্যদের উদ্যোগ অবশ্যই প্রশংসার দাবিদার। আমরা এ ব্যাপারটি গুরুত্বের সঙ্গে নিচ্ছি। এসময় তিনি আইনগতভাবে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আশ্বাস দেন।
চিঠিতে স্বাক্ষরকারী সংসদ সদস্যবৃন্দদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক শিল্প মন্ত্রী, আমির হোসেন আমু; সাবেক কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী; সাবেক প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন; সাবেক বাণিজ্য মন্ত্রী মুহাম্মদ ফারুক খান; সাবেক চীফ হুইপ আ, স, ম, ফিরোজ; সাবেক চীফ হুইফ ড. মো. আব্দুস শহীদ; সাবেক বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী মো: ইমাদ উদ্দিন প্রামাণিক; সাবেক আইনমন্ত্রী আব্দুল মতিন খসরু; পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন, কৃষিমন্ত্রী ড.মো: আব্দুর রাজ্জাক, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো: তাজুল ইসলাম, শিক্ষা মন্ত্রী ডা. দীপু মনি, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীরপ্রতীক, সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ, মৎস্য ও প্রাণি সম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, রেলপথ মন্ত্রী মোঃ নুরুল ইসলাম সুজন, বিদ্যুৎ, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো: জাকির হোসেন, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক, তথ্য প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসান, গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ, বেসামরিক বিমান পরিবহণ ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মোঃ মাহবুব আলী, ধর্ম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মোঃ ফরিদুল হক খান, মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুননেসা, হুইপ মাহবুব আরা বেগম গিনি; হুইপ মো: শাহীদুজ্জামান সরকার; হুইপ মো: আতিউর রহমান আতিক; সাবেক রেলমন্ত্রী মো: মজিবুল হক; সাবেক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী মেজর (অবঃ) রফিকুল ইসলাম, বীর উত্তম; সাবেক বন ও পরিবেশ মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ; সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো: শামসুল হক টুকু; সাবেক বন ও জলবায়ু পরিবর্তন প্রতিমন্ত্রী আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব; সাবেক মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি; সাবেক ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী শ্রী বীরেন সরকার; সাবেক মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী এ.বি. তাইজুল ইসলাম; ফজলে হোসেন বাদশা; কাজী নাবিল আহমেদ; মনোরঞ্জন শীল গোপাল; মো: শিবলী সাদিক; মো: আফতাব উদ্দিন সরকার; আহসান আদিলুর রহমান; মশিউর রহমান রাঙা; আবুল কালাম মো: আহসানুল হক চৌধুরী; মো: আসলাম উদ্দিন সওদাগর; শামীম হায়দার পাটোয়ারি; শামসুল আলম দুদু; অধ্যাপক ডা: হাবিবে মিল্লাত, শরীফুল ইসলাম জামান; ডা: সামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুল; মো: হাসানুর রশীদ; মো: আনোয়ার হোসেন হেলাল; এনামুল হক; মো: শিহিদুল ইসলাম বকুল; তানভির শাকিল জয়; আহমেদ ফিরোজ কবির; মো: নুরুজ্জামান বিশ্বাস; গোলাম ফারুক খন্দকার প্রিন্স; মোহাম্মমদ শহীদুজ্জামান; মো: সাইফুজ্জামান শিখর; মাশরাফি বিন মোর্ত্তোজা; মো: আমিনুল আলম মিলন; শেখ সালাহউদ্দিন; আব্দুস সালাম মুর্শেদী; মো: আখতারুজ্জামান; এসএম শাহাজাদা; মো: শাহ ই আলম; পঙ্কজ নাথ; বজরুল হক হারুন; মোহাম্মদ হাসান ইমাম খান; মো: সানোয়ার হোসেন; আহাসানুল ইসলাম (টিটু); আবুল কালাম আজাদ; মো: মোজাফফার হোসেন; জুয়েল আরেং; আনোয়ারুল আবেদীন খান; কাজিম উদ্দিন আহমেদ; অসীম কুমার উকিল; সৈয়দা জাকিয়া নূর; নুর মোহাম্মদ; মমতাজ বেগম; সাগুফতা ইয়াসমিন; কাজী মনিরুল ইসলাম; কাজী ফিরোজ রশীদ; মো: শফিউল ইসলাম; মো: আসলামুল হক; মো: ইলিয়াস হোসেন মোল্লা; মোহাম্মদ হাবিব হাসান; বেনজির আহমেদ; এ.কে.এম. মোজাম্মেল হক; মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন; মো: নজরুল ইসলাম বাবু; লিয়াকত হোসেন খোকা; মনজুর হোসেন; মুজিবুর রহমান চৌধুরী; মো: আব্দুস সোবহান মিয়া; মোয়াজ্জেম হোসেন রতন; পীর ফজলুর রহমান; মহিবুর রহমান মানিক; মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী; হাফিজ আহমেদ মজুমদার; বদরুদ্দোজা মো: ফরহাদ হোসেন; আর. এ. এম ওবাইদুল মুক্তাদির চৌধুরী; মোহাম্মদ সুবিদ আলী ভুঁইয়া; সেলিমা আহমেদ; প্রফেসর মো: আলী আশরাফ; মো: তাইজুল ইসলাম; মো: নুরুল আলম; শিরীন আখতার; মো: মামুনুর রশীদ কিরণ; আনোয়ার হোসেন খান; মাহফুজুর রহমান; এ.বি.এম. ফজলে করিম চৌধুরী; মোসেলেম উদ্দিন আহমেদ; মো: নজরুল ইসলাম চৌধুরী; আশেক উল্লাহ রফিক; সাইমুম সারোয়ার কামাল; শিরিন আহমেদ; শাবনাম জাহান; সুবর্না মোস্তফা; নাহিদ ইজহার খান;
খাদিজাতুল আনোয়ার; ওয়াসিকা আয়েশা খান; কানিজ ফাতেমা আহমেদ; বাসন্তী চাকমা; আন্জুমসু লতানা; আরমা দত্ত; উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম; সুলতানা নাদিরা; হোসনে আরা; শেখ এ্যানী রহমান; অপরাজিতা হক; মোছাঃ শামীমা আক্তার খানম; রাবেয়া আলীম; তামান্না নুসরাত (বুবলী); নার্গিস রহমান; মনিরা সুলতানা; মোছাঃ খালেদা খানম; সৈয়দা রুবিনা আক্তার; কাজী কানিজ সুলতানা; খঃ মমতাহেনা লাভলী; জাকিয়া তাবাসসুম; সালমা চৌধুরী; আদিবা আনজুম মিতা; ফেরদৌসী ইসলাম; খোদেজা নাসরিন আক্তার হোসেন; মোসাঃ তাহমিনা বেগম, রওশন আরা মান্নান এবং রুমিন ফারহানা।