স্টাফ রিপোর্টার ঝিনাইদহ: ঝিনাইদহ জেলার “গরুর গ্রাম” বলে খ্যাত হরিণাকুন্ডের কুলবাড়ীয়া। এ গ্রামে প্রায় তিন হাজার লোকের বসবাস। এখানে বাড়ি আছে পাঁচ শতাধিক। আর প্রতিটি বাড়িতে দুই থেকে ২৫টি পর্যন্ত গরু রয়েছে। প্রতিবছর এই গ্রাম থেকে এক থেকে দেড় হাজার গরু কোরবানির বাজারে বিক্রি হয়ে থাকে।
এই গ্রামের বড় খামারি হলেন শামছুল আলী। বর্তমানে তার ২৪টি গরু রয়েছে। হরিয়ানা, নেপালি ও ক্রসবিড জাতের গরু রয়েছে। এরমধ্যে সব থেকে বড় গরুর ওজন ১ হাজার ৩শ’ কেজি। তিনি হতাশা ব্যক্ত করে বলেন, এইভাবে যদি মহামারী করোনা দিনকে দিন চরতে থাকে তবে নিশ্চিত ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়বো আমরা।
শৈলকুপা উপজেলার দক্ষীন গোপালপুর গ্রামের শাবাজ উদ্দিনের ছেলে আতিয়ার রহমানের রয়েছে প্রায় ৪০ মণ ওজনের ‘বীর বাহাদুর’। তিনি বলেন, করোনায় আমাদের যে কী হবে বুঝতে পারছি না।
প্রতিদিন ‘বীর বাহাদুর’ এর খাবারের জন্য খরচ হচ্ছে প্রায় ২ হাজার টাকা।
কালীগঞ্জ উপজেলার মল্লিকপুর গ্রামের বাসিন্দা এনামুল হোসেনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, তার রয়েছে “নেইমার” নামের প্রায় এক হাজার কেজি ওজনের একটি গরু। প্রতিদিনই প্রায় ৫০০ টাকার খাবার দিতে হয় গরুটির। ব্যাপারীরা না ঢুকতে পারলে আমাদের পথে বসতে হবে।
জানা যায়, ঝিনাইদহে প্রায় ১৭ হাজার ৪৫০টি ছোট-বড় খামারে কোরবানি ঈদের বাজার ধরতে গরু ছাগল প্রস্তুত করেছেন। এসকল খামারে ও কৃষকের বাড়িতে প্রায় ১লাখ ২৬ হাজার পশু কোরবানির জন্য প্রস্তুত রয়েছে। খামারিরা জেলার চাহিদা পুরন করে অন্য জেলাতে বিক্রির আশা করছেন। তবে সঠিক দাম নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন তারা। খামারিরা ধারনা করে বলছেন, গত বছর কোরবানিতে গরু ছাগলের দামে ধস নামে।
ঝিনাইদহের প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের হিসাব অনুযায়ী, কোরবানী ঈদের জন্য প্রস্তুতকৃত গরু ৭১ হাজার ৪১৫টি এবং ছাগল ও ভেড়া রয়েছে ৫৪ হাজার ৪৪৪টি। খামারীরা কৃষিকাজে তারা যে গম, খৈল ও ভুষি পেয়ে থাকেন, তা থেকেই গরুর খাবার যোগান দেন। এছাড়া মাঠের ঘাস তাদের গরু-ছাগলের প্রধান খাদ্য।
ঝিনাইদহ জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার ডাক্তার আনন্দ কুমার অধিকারী বলেন, করোনার প্রকোপ থাকলে গরু-ছাগলের বাজার অনলাইনভিত্তিক করা হবে। এ ক্ষেত্রে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাদের মাধ্যমে খামারিদের নাম-ঠিকানা ও গরুর ছবি সংগ্রহ করে অনলাইনে প্রচার করা হবে। ক্রেতারা নির্ধারিত ওয়েবসাইট থেকে ছবি দেখে খামারিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে পছন্দের পশুটি কিনতে পারবেন। ঝিনাইদহে কোন পশুতে কোন ধরনের ক্যামিক্যাল বা ইনজেকশন পুশ করা হয় না