ঈদ বলে কথা। ঢাকঢোল পিটিয়ে যেন মুক্তির আলোয় এলো নতুন পাঁচটি ছবি। প্রথম দিকে প্রায় এক ডজন ছবির আওয়াজ শোনা গিয়েছিল। তবে কিছু ছবি সরে গেছে সচেতনে।
আবার শেষ মুহূর্তে এসেও ঈদ বাজারে যোগ দিয়েছে একাধিক ছবি। বিভিন্ন প্রেক্ষাগৃহে কথা বলে মুক্তিপ্রাপ্ত ছবিগুলোর অবস্থা জানার চেষ্টা করেছেন কামরুল ইসলাম।
হলে হলে যেমন চলছে ঈদের ছবি
হল সংখ্যায় রায়হান রাফীর ‘তুফান’-এর কাছে বাকি চারটি ছবি প্রায় অস্তিত্ব সংকটে! ফলে ব্যাবসায়িক দিক দিয়েও একচ্ছত্র দাপটে রয়েছে শাকিব খান অভিনীত ছবিটি। অন্যদিকে মো. ইকবালের ‘রিভেঞ্জ’, মোস্তাফিজুর রহমান মানিকের ‘ডার্ক ওয়ার্ল্ড’, রাশিদ পলাশের ‘ময়ূরাক্ষী’ ও সুমন ধরের ‘আগন্তুক’ এখন পর্যন্ত আশানুরূপ সাড়া জাগাতে পারেনি।
মাল্টিপ্লেক্স থেকে সিঙ্গেল স্ক্রিন, যেন ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিচ্ছে ‘তুফান’! সর্বাধিক ১২৯টি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে ছবিটি। এর মধ্যে স্টার সিনেপ্লেক্সের সাতটি শাখায় ৩২টি শো দেওয়া হয় এটিকে। কিন্তু দর্শকের চাপে দ্বিতীয় দিনই শো বেড়ে ৪৭-এ পৌঁছায়! থামেনি এখানেও।
গতকাল নির্মাতা রায়হান রাফী বলেন, “বৃহস্পতিবার (আজ) থেকে স্টার সিনেপ্লেক্সে ‘তুফান’-এর হাফ সেঞ্চুরি। প্রতিদিন ৫১টি শো! আগেই বলেছিলাম, এমন কিছু হবে, যা কেউ ভাবেনি আগে।”
স্টার সিনেপ্লেক্সের জ্যেষ্ঠ বিপণন কর্মকর্তা মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ জানান, এর আগে বাংলা ছবি হিসেবে দৈনিক সর্বোচ্চ ৩২টি শো প্রদর্শিত হয়েছিল ‘পরাণ’-এর। সেটিকে ছাপিয়ে নয়া নজির গড়েছে শাকিব খান, নাবিলা, মিমি চক্রবর্তী ও চঞ্চল চৌধুরী অভিনীত ছবিটি। অন্য ছবিগুলোর শো প্রায় ফাঁকাই যাচ্ছে।
স্টার সিনেপ্লেক্সের টিকিট প্ল্যাটফরম ঘেঁটে বিষয়টির সত্যতা জানা গেছে।
রাজধানীর আরেকটি মাল্টিপ্লেক্স ব্লকবাস্টার সিনেমাস। সেখানেও ঈদের সব ছবি চলছে। তবে হলটির মার্কেটিং ম্যানেজার মাহবুবুর রহমান বলেন, “যেহেতু পাঁচটি ছবি মুক্তি পেয়েছে, আমরা সবাইকে সুযোগ দিয়েছি। দর্শকের আগ্রহের কারণে ‘তুফান’ ছবির শো বেশি রেখেছি। তবু হাউসফুল যাচ্ছে। আগামীকাল (আজ) নাগাদ হয়তো আরো দুটি শো বাড়াতে পারি। অন্য ছবিগুলোতে খুব একটা দর্শক হচ্ছে না।”
খুলনার সংগীতা সিনেমা হলে চলছে মো. ইকবালের ‘রিভেঞ্জ’। জিয়াউল রোশান ও বুবলী অভিনীত ছবিটির অবস্থা জানতে চাইলে হলটির ব্যবস্থাপক আতাহার আলী বলেন, ‘একদম বাজে অবস্থা। হলের খরচটুকুও উঠছে না। চার দিনও চালাতে পারব না মনে হচ্ছে। এই অবস্থায় হয়তো পুরনো ছবি চালাতে হবে।’
আধুনিক ব্যবস্থা থাকলেও ঢাকার শ্যামলী সিনেমাস একটি সিঙ্গেল স্ক্রিন। সেখানে প্রদর্শিত হচ্ছে ‘তুফান’। হলটির ব্যবস্থাপক আহসান উল্লাহ বলেন, “ঈদের দিন থেকেই বেশ ভালো যাচ্ছে। আজ (গতকাল) সকালের শোতে অর্ধেক দর্শক ছিল, তবে বিকেলের শো হাউসফুল। আপনারা তো জানেন, হলগুলোর কী অবস্থা। এর মধ্যে ‘তুফান’-এর মতো ছবি আসায় আমরা কিছুটা আশার আলো দেখতে পাচ্ছি।”
কেরানীগঞ্জের লায়ন সিনেমাসে চলছে তিনটি ছবি। এর মধ্যে ‘তুফান’-এর জন্য রয়েছে সর্বোচ্চ ১০টি শো, তবু দর্শকের সমাগম রয়েছে। অন্যদিকে ‘রিভেঞ্জ’ ও ‘আগন্তুক’ দুটি করে শো পেলেও দর্শকের কোনো চাপ দেখা যাচ্ছে না।
চট্টগ্রামের সিলভার স্ক্রিনে চলছে ‘তুফান’ ও ‘আগন্তুক’। সেখানেও ইতিবাচক সাড়া পাচ্ছে শাকিব অভিনীত ছবিটি। প্রতিদিন চারটি শো প্রদর্শিত হচ্ছে, তবু প্রায় হাউসফুল একাধিক শো। শুধু একটি শো পেয়েও দর্শক টানতে পারছে না পূজা চেরী অভিনীত থ্রিলার গল্পটি।