1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : জাতীয় অর্থনীতি : জাতীয় অর্থনীতি
রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৩২ অপরাহ্ন

উচ্চমূল্যেই স্থিতিশীল চালের বাজার

রিপোর্টার
  • আপডেট : শনিবার, ২৭ আগস্ট, ২০২২

জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে প্রায় সব ধরনের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়েছে। খাদ্যপণ্যের দাম বাড়ায় নাভিশ্বাস উঠছে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের ক্রেতাদের।

শনিবার (২৭ আগস্ট) রাজধানীর কয়েকটি খুচরা বাজার ঘুরে দেখা যায়, জাত ও মানভেদে প্রতি কেজি মিনিকেট চাল ৭০ থেকে ৭৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। নাজিরশাইল চাল ৭৫ থেকে ৯০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। মাঝারি মানের চাল পাইজাম ও হাস্কি ৫৫ থেকে ৫৮ টাকা। আটাশ চাল ৬০ থেকে ৬৫ টাকা। মোটা চাল স্বর্ণা ৫২ থেকে ৫৫ টাকা। গত সপ্তাহেও চিকন চাল ছাড়া অন্য সব চাল একই দামে বিক্রি হয়েছে।

পাইকারি বাজারে চিকন চাল প্রতি কেজি মিনিকেট মানভেদে বিক্রি হচ্ছে ৬২ থেকে ৭২ টাকা, নাজিরশাইল ৬৫ থেকে ৮০ টাকা, বাসমতি ৭৮ থেকে ৮৫ টাকা। মোটা চাল প্রতি কেজি পাইজাম ৫০ থেকে ৫৩ টাকা, স্বর্ণা ৪৪ থেকে ৪৫ টাকা। মাঝারি মানের প্রতিকেজি আটাশ চাল ৫৩ থেকে ৫৬ টাকা। হাস্কি চাল প্রতি কেজি ৫০ থেকে ৫৩ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলেছেন, হঠাৎ তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় মানুষের মনে আতঙ্ক কাজ করেছে। হঠাৎ করে বাজারে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় চালের সরবরাহ কমে গিয়েছিল। তখন মিলমালিকরা সুযোগ বুঝে চালের দাম বাড়িয়ে দেন। তবে এখন বাজারে চাহিদা কমে গেছে তাই চালের দামও স্থিতিশীল রয়েছে। মোটা চালের দাম আগের মতোই আছে। চিকন চাল বস্তায় ৫০ থেকে ১০০ টাকা কমেছে মানভেদে। অন্যদিকে আমদানিকৃত চালও বাজারে আসতে শুরু করেছে। ডলারের দামও নিম্নমুখী। আমদানি পর্যায়ে আরও ১০ শতাংশ ভ্যাট কমানোর কথা চলছে। ফলে চাল আমদানি বেড়েছে। আশা করা যাচ্ছে, সামনে দাম আরও কমে আসবে।

বাবুবাজারের পাইকারি চাল ব্যবসায়ী রশিদ রাইস এজেন্সির মালিক আব্দুর রশিদ বলেন, তেলের দামের জন্য সব কিছুর দাম বেড়েছে সত্য। তবে গত কয়েকদিন ধরে চালের দর নিম্নমুখী রয়েছে। কারণ ডলারের দাম নিম্নমুখী হওয়ায় চাল আমদানি বেড়েছে। সে চালও বাজারে ঢুকছে। এছাড়া আরও ১০ শতাংশ ভ্যাট কমানোর কথা চলছে, সেটা কমলে সব ধরনের চালের দাম কেজিতে আরও ৩/৪ টাকা কমবে।

বাদামতলি ঘাটের চাল বিক্রেতা ও হাজী রাইস এজেন্সির ম্যানেজার জিয়াউল হক জানান, চিকন চালের দাম বস্তায় ৫০ থেকে ১০০ টাকা কমেছে। কারণ চাহিদা কমে গেছে। হঠাৎ তেলের দাম ৪৫ টাকা বাড়ায় মানুষ আতঙ্কিত হয়ে প্রয়োজনের অতিরিক্ত চাল কিনে ঘরে ঘরে মজুদ করেছে। বর্তমানে গত সপ্তাহ থেকে চালের চাহিদা কমেছে।

বাবুবাজারের জনপ্রিয় রাইস এজেন্সির মালিক রফিকুল ইসলাম বলেন, একটা শ্রেণি সব সময় আতঙ্ক তৈরি করে চালের বাজারে অস্থিতিশীল করে। আর এর দায়ভার সকল ব্যবসায়ীদের ওপর পড়ে। তাদের বিরুদ্ধে সরকারকে ব্যবস্থা নিতে হবে। সেখানে সরকার কিছুই করছে না। বাজারদর বাড়লে মোবাইল কোর্ট দিয়ে শুধু আমাদের পাইকারি বাজারে জেল জরিমানা করে, এটা ঠিক না। মিলগেটে ঠিক করলে সব ঠিক হয়ে যাবে। বর্তমানে চালের বাজার স্থিতিশীল রয়েছে। যদিও এ দামটা সাধারণ মানুষকে পীড়া দেয়। কিন্তু কী করার? আমরা তো ব্যবসায় লোকসান দিতে পারবো না। সরকার যদি ৪০ টাকায় চাল কিনে তাহলে আমরা কতো টাকায় বিক্রি করবো বলেন? সরকার ৪০ টাকায় চাল কিনে ১৫ টাকায় বিক্রি করছে, এখানে সরকার ভর্তুকি দিচ্ছে। কিন্তু সেই সুবিধাটা কয়জনে পায়?

বাবুবাজার চাল ব্যবসায়ী সমিতির সেক্রেটারি নিজাম উদ্দিন বলেন, জ্বালানি তেলের কারণে ট্রাকভাড়া বেড়েছে। আগে যেখানে কুষ্টিয়া থেকে ১৭ হাজার টাকায় বড় ট্রাক আসতো, সেটা এখন ২৫ হাজার লাগছে। একটি বড় ট্রাকে ২৫০ বস্তা চাল আসে। বাড়তি ভাড়ার কারণে প্রতি কেজি চালে প্রায় ৫০ পয়সার বেশি খরচ হচ্ছে। সে কারণে চালের দাম বেড়েছে। তবে গত কয়েকদিন ধরে চালের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। আমদানি শুল্ক আরও কমানো হলে দাম আরও কমবে। এছাড়া আমদানি করা চাল দেশে ঢুকছে। আশা করছি খুব শিগগিরই চালের দাম কমে আসবে।

সুত্রাপুর বাজারের খুচরা চাল বিক্রেতা মেসাস আদনান রাইস এজেন্সির ম্যানেজার জানান, চালের দাম আগের মতোই আছে। তবে বর্তমানে মানুষের চাল কেনার হার কমেছে। তেলের দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানুষ হুমড়ি খেয়ে চাল কিনেছে। ফলে হঠাৎ চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় বাজারে চালের ঘাটতি পড়েছিল, তখনই চালের দাম বেড়েছিল। এখন আস্তে আস্তে আবার আগের মতো হয়ে যাবে।

কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের তথ্য মতে, ঢাকার বাজারে মোটা চালের (সিদ্ধ) পাইকারি মূল্য প্রতি কেজি ৪৪ থেকে ৫০ টাকা। আর খুচরা মূল্য প্রতিকেজি ৪৮ থেকে ৫২ টাকা।

গত বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, আমদানি নিয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হয়েছে। চাল আমদানির সুবিধাজনক পেমেন্টের জন্য যা যা করার দরকার, তা ক্লিয়ার আছে। আপনারা দেখতে থাকেন, গম আসতে থাকবে, চাল আসতে থাকবে। চালের দামও কমছে তো। গত সপ্তাহে যেটা বাড়িয়েছে, সেটা কমছে। এর মধ্যে ১ সেপ্টেম্বর থেকে ওএমএস দেওয়ার পরে তো কমবে, আমরা আশা করছি। ওএমএস’র বিতরণের ঘোষণা দেওয়ার পরই চালের দাম আস্তে-আস্তে কমছে।

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© ২০২০ দৈনিক জাতীয় অর্থনীতি