সমসাময়িক বিশ্বে সব দেশই উন্নয়নের ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতার সম্মুখীন। উন্নয়নের বিভিন্ন দিক রয়েছে। এটা সত্য যে একটি দেশকে উন্নত দেশ বলা হয় যখন শিল্প থেকে সর্বাধিক রাজস্ব অর্জিত হয়। ‘আরো শিল্প আরো উন্নয়ন’ হল উন্নত দেশগুলির স্লোগান এবং তাদের অর্থনীতি অন্যান্য দেশের তুলনায় শক্তিশালী। উন্নয়নশীল দেশগুলোও উন্নত দেশগুলোর পথে হাঁটার চেষ্টা করছে। উদ্ভিদের আবাসস্থল ধ্বংস করে গড়ে উঠছে বিভিন্ন শিল্প। আবাসন শিল্প বেশি রাজস্ব আয়ের সুযোগ তৈরি করে এবং সরকারি কর্তৃপক্ষ আবাসন ব্যবসায়ীদের উৎসাহিত করার জন্য পরিবেশ আইন এবং নীতি শিথিল করে। বহুতল ভবন নির্মাণের জন্য তারা বৃক্ষরাজি ধ্বংস করে পরিবেশের তোয়াক্কা না করেই এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বনসৃজন করে না। পরিবহন শিল্পে মসৃণ পরিষেবার জন্য দেশগুলি মহাসড়ক প্রশস্ত করার পদক্ষেপ নেয় এবং বনভূমি ধ্বংস করে। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় মহাসড়ক এবং রেলপথ গভীর বনের মধ্য দিয়ে গেছে এবং এটি সম্ভব হয়েছে বৃক্ষচ্ছেদনের ফলে। দেশগুলির অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য খনি শিল্প বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং এই শিল্পের প্রসারের জন্য বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে উদ্ভিদের আবাসস্থলের উপর কোপ পড়ে। উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার জন্য দেশে আরও বিদ্যুৎ প্রয়োজন এবং নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুত সরবরাহের জন্য বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র স্থাপন অত্যন্ত জরুরি। এখানেও বৃক্ষছেদনের ব্যাপারটি সর্বাগ্রে আসে। কিন্তু কোনো ক্ষেত্রেই কোনো কর্তৃপক্ষের মধ্যেই বনসৃজনের জন্য উল্লেখযোগ্য দায়বদ্ধতা চোখে পড়ে না। পরিশেষে উল্লেখ করা যেতেই পারে অর্থনৈতিক উন্নয়নের, রাজস্ব বৃদ্ধির জন্য দেশগুলো প্রতিযোগিতামূলক ভাবে উদ্ভিদের আবাসস্থল ধ্বংস করছে। ফলত পরিবেশ তার ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে ভয়ঙ্কর তাণ্ডবলীলা করছে। যার সরাসরি শিকার হচ্ছে সাধারণ জনগণ।
বিশ্বনাথ দাসচৌধুরী