1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : জাতীয় অর্থনীতি : জাতীয় অর্থনীতি
মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৫৭ অপরাহ্ন

ঋত্বিক ঘটকের বাড়ির দেয়ালে সিনেমার চিত্র মুছে ফেলার চেষ্টা

রিপোর্টার
  • আপডেট : শনিবার, ৯ নভেম্বর, ২০২৪

রাজশাহীতে বিশ্ব বিখ্যাত সিনেমা পরিচালক ঋত্বিক কুমার ঘটকের পৈত্বিক বাড়ির দেয়ালে তাঁরই সিনেমার কিছু চিত্র এঁকে তাঁর ৯৯ তম জন্মদিনে শ্রদ্ধঞ্জলি জানিয়েছিলেন স্থানীয় কিছু সিনেমা প্রেমিরা। সে চিত্র মুছে ফেলার থ্রেট করেছে একটা হোমিওপ্যাথি কলেজ। ঋত্বিক ঘটকদের পরিবার ১৯৪৭ সালে দেশভাগের সময় মুসলিম লীগের ম্যাসাকারের মুখে ভারতে উদ্বাস্তু হয়। উদ্বাস্তু জীবনের চিত্র ঋত্বিকের সিনেমায় ঘুরেফিরে বারবার এসেছে। কাদের জন্য এই উদ্বাস্তু সেকথা কখনোই তিনি বলেননি, এতটুকু রাগ ঘৃণা তার ছিল না। উপরন্তু ফেলে আসা মাতৃভূমির জন্য ছিল হাহাকার। এই হাহাকার যে কেবল মাটির জন্য নয় মানুষের জন্য, ঋত্বিক যে তাঁর হারানো স্বদেশের মানুষের জন্যই আসলে কাঁদেন বুঝা গেলো ১৯৭১ সালে। ২৩ বছর আগে যারা একদিন ‘হাতমে বিড়ি মুখমে পান, লড়কে লেঙ্গে পাকিস্তান’ বলে ঋত্বিকদের নিজ দেশ ছাড়ার পরিস্থিতির পটভূমি তৈরি করেছিলো, ভাগ্যের নির্মম পরিহাস তাদেরকেই ২৩ বছর পর ভারতে শরণার্থী হতে হলো।

ঋত্বিক জানতেন বাংলাদেশ স্বাধীন হলেও তার দেশ তিনি ফেরত পাবেন না। সেকথা শ্যামবাজারে একটা অনুষ্ঠানে চরমপত্রের ‘এমন পোলারে বাঘে খাইলো’ খ্যাত এম আর আখতার মুকুল স্পষ্ট করে শুনিয়ে দিয়েছিল। মুকুল নিজের বইতে লিখেছিলেন, যারা দেশ ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন ৪৭, ৬৫ সালে তারা যেন স্বপ্নেও না ভাবেন তাদের ঠাই বাংলাদেশে হবে। মুকুল যখন শরণার্থী হিসেবে তিনবেলা খাচ্ছেন-দাচ্ছেন, মাথা গোজার ঠাই পেয়েছেন, তখন সেই টাকার জোগান করছে কোলকাতার বুদ্ধিজীবী সংস্কৃতিজীবী কবি সাহিত্যিকরা। উত্তম কুমার নিজে পথে নামলেন। তিনি রাজপথে বাংলাদেশের জন্য টাকা তুললেন। একদিন তো উত্তম কুমার কোলকাতার পতিতা পল্লীতে পর্যন্ত গেলেন চাঁদা তুলতে। সেদিন খুব আবেগঘন পরিবেশ তৈরি হয়েছিল। উত্তম কুমার কেঁদে ছিলেন। সমাজে অচ্ছ্যুত বলে পরিচিত এইসব মানুষগুলো সব উজাড় করে উত্তম কুমারের হাতে তুলে দিয়েছিলেন। মুম্বাইতে লতা মুঙ্গেশকর তো শোনা মাত্র এক কোটি টাকার চেক লিখে দিলেন! শক্তি-সুনীল ঘুরছিলেন পথে পথে। ঋত্বিক ঘটককে কোলকাতার রাস্তায় সুচিত্র সেন দেখতে পেলেন। তীব্র দাবদাহে তখন কোলকাতা পুড়ছে। সেই রোদে ধুতি পাঞ্জাবি পরে ঋত্বিক পথে নেমেছেন নাওয়া-খাওয়া বাদ দিয়ে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য ঋত্বিক তখন আবেগপ্রবণ। জনে জনে ধরে বলছেন তার দেশের মানুষদের বাঁচাতে! রবি শংকর যেমন জর্জ হ্যারিসনকে বলেছিলেন, ‘বন্ধু আমার দেশ আক্রান্ত, আমার দেশের মানুষকে বাঁচাও!

কোথায় দেশ? কার দেশ? রবি শংকরই তো উদ্ববাস্তু। ঋত্বিক সুনীল সবাই। তারা কি জানতো না গাঙ পার হলেই এরা তাদেরকে শালা বলে গাল দিবে? জানতো বোধহয়। জেনেই জন্মঋণ শোধ করেছিল। ঋত্বিকের বাড়ি ভেঙে ফেলার পর ফরহাদ মজহার ফেইসবুকে লিখেছিলেন, ঋত্বিক ঘটকের কর্ম বাংলাদেশ প্রাসঙ্গীক নয়। তিনি ভারতীয় নাগরিক। তার স্মৃতিচিহ্ন সংরক্ষণ করে রাখার দায় বাংলাদেশের জনগণের নয়।

সুষুপ্ত পাঠক

 

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© ২০২০ দৈনিক জাতীয় অর্থনীতি