বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক সংকট আগের তুলনায় অনেকটা কমেছে। অনেক দেশ মূল্যস্ফীতি কমাতে সফল হচ্ছে। কিন্তু সিদ্ধান্ত গ্রহণে বিলম্ব, নীতির সমন্বয়হীনতা, মনিটরিংয়ের অভাব, আন্তমন্ত্রণালয় সমন্বয় না থাকা, অতিমাত্রায় আমলাতান্ত্রিক নির্ভরতা এবং জবাবদিহির অভাবের কারণেই বাংলাদেশ সংকট থেকে বের হতে পারছে না। ফলে মূল্যস্ফীতির চাপে দিশাহারা মানুষ ও একটি দুর্বল অর্থনীতির ভিত্তি নিয়েই বাংলাদেশ নতুন আরেকটি নির্বাচনের দিকে যাচ্ছে।
অর্থনীতির সংকট কাটছে না। ডলারের দর এখনো অনেক বেশি। সরকারের হিসাবেই মূল্যস্ফীতি কমেছে অতি সামান্য, বৈদেশিক মুদ্রার মজুতের পতনও ঠেকানো যাচ্ছে না।
২০২০ সালের মার্চ থেকে কোভিড-১৯ শুরু হলে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সচিবালয়ে নিয়মিত আসা বন্ধ করে দেন। আ হ ম মুস্তফা কামাল কেবল সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক করে যাচ্ছেন অনলাইনে। সেখানে কেবল সরকারি কেনাকাটার সিদ্ধান্ত হয়। যেমন গত ২৪ মে একটি কাগুজে কোম্পানি থেকে ১৩১ কোটি টাকা ব্যয়ে সাড়ে ১২ হাজার টন চিনি কেনার প্রস্তাব অনুমোদন করে তাঁর নেতৃত্বাধীন ক্রয় কমিটি, যে কোম্পানির চিনি সরবরাহ করার সক্ষমতা নেই।
বিশ্ব অর্থনীতির এ রকম এক সংকটের সময় সারা বিশ্বেই অর্থনীতিসংক্রান্ত নীতিনির্ধারকেরা আছেন চালকের আসনে। অথচ বাংলাদেশে অর্থনীতি বিষয়ের নীতিনির্ধারকদের দেখাই পাচ্ছেন না সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। অর্থমন্ত্রী নিয়মিত কার্যালয়ে আসেন না। অর্থসচিব কারও সঙ্গে কথা বলেন না। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গেও দেখা পাওয়া দুষ্কর। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান কোনো অনুষ্ঠানেই যান না। এসব নীতিনির্ধারকের সঙ্গে বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তা, গবেষক বা অর্থনীতিবিদ—কারও সঙ্গে কোনো যোগাযোগ নেই। তাঁরা কারও পরামর্শও নেন না। এতেই দেখা দিয়েছে নানা ধরনের সমন্বয়হীনতা। এর ফল ভোগ করছে দেশের সাধারণ মানুষ।
তবে বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের (এফবিসিসিআই) সদ্য বিদায়ী সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘অর্থমন্ত্রী একসময় সক্রিয় মানুষই ছিলেন। কয়েক বছর ধরে তাঁর কী হলো, বুঝতে পারছি না। তাঁর সঙ্গে কোনো ব্যবসায়ীরই বৈঠক হওয়া এখন কঠিন। অথচ পুরো অর্থনীতিই এখন বেসরকারি খাতনির্ভর। অর্থনীতিতে এখন কত সমস্যা। অথচ অর্থমন্ত্রী অনুপস্থিত। এ কারণে অন্যরা ক্ষমতার অপব্যবহারের সুযোগ নিচ্ছেন।’
আব্দুর রউফ তালুকদার বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর এক বছরের বেশি সময় ধরে। এর আগে ছিলেন অর্থসচিব। তাঁকেই এখন নীতিনির্ধারণে সবচেয়ে ক্ষমতাধর ব্যক্তিদের একজন বলে মনে করা হয়। গভর্নর হওয়ার পর ব্যাংকগুলোর অনিয়ম রোধে কিছু পদক্ষেপ নিলেও কিছু ব্যাংকের ক্ষেত্রে আবার তিনি বেশ নমনীয়। যেমন শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকগুলোর অনিয়ম রোধে তিনি নিষ্ক্রিয়। আবার ভালো অবস্থায় থাকা ব্যাংকগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালকেরা (এমডি) বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে গভর্নরের সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা করলেও তিনি সাড়া দেননি। আবার অনেক সিদ্ধান্ত নিয়ে তারপর আবার সরে আসারও একাধিক উদাহরণ রয়েছে।
দেখা যাচ্ছে ইউরোপিয়ান সেন্ট্রাল ব্যাংকের (ইসিবি) গভর্নর মুদ্রানীতির সিদ্ধান্ত ও বাস্তবায়ন পরিস্থিতি জানাতে প্রতি ছয় সপ্তাহ পরপর সংবাদ সম্মেলন করেন। যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যবস্থার (ফেড) অধীনে আছে ফেডারেল ওপেন মার্কেট কমিটি। ফেড চেয়ারম্যান জেরেমি এইচ পাওয়েল এর প্রধান। তিনি ২০২২ সালে মুদ্রানীতির বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সব মিলিয়ে আটবার সংবাদ সম্মেলন করেছেন। আর চলতি ২০২৩ সালে এখন পর্যন্ত করেছেন পাঁচবার। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও টেকসই কর্মসংস্থান সৃষ্টিসহ ফেড চেয়ারম্যানের সুনির্দিষ্ট দায়িত্ব ঠিক করে দেয় মার্কিন কংগ্রেস। কাজের অগ্রগতি নিয়মিতভাবে মার্কিন কংগ্রেসে উপস্থাপন করে তাঁকে জবাবদিহি করতে হয়। ভারতের রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার (আরবিআই) সাবেক গভর্নর রঘুরাম জি রাজন ‘অবিরাম
অবশ্য দেশের ব্যবসায়ীদের বেশি অভিযোগ জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমকে নিয়ে। বাজেটের আগে অনুষ্ঠিত প্রাক্–বাজেট আলোচনা সভা হচ্ছে এখন তাঁর সঙ্গে ব্যবসায়ীদের কথা বলার একমাত্র জায়গা। যদিও বিভিন্ন সমস্যা, অভিযোগসহ নানা বিষয়ে আলোচনার জন্য বেসরকারি খাতের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই ও এনবিআরের সমন্বয়ে একটি টাস্কফোর্স আছে। কিন্তু এই টাস্কফোর্সের কোনো বৈঠকই হয় না। কারণ, এনবিআর চেয়ারম্যান সেখানে যান না।
আবার প্রাক্-বাজেট সভায় সমস্যার কথা বলতে গিয়েও বিরূপ অভিজ্ঞতার মুখে পড়তে হয়েছে কোনো কোনো ব্যবসায়ীর। যেমন গত ৫ মার্চ নিজ দপ্তরে আমন্ত্রণ জানিয়েও ব্যবসায়ীদের কথা শুনতে চাননি। ব্যবসায়ীরা যখন মাঠপর্যায়ে হয়রানি আর অনিয়ম নিয়ে কথা বলা শুরু করেন, তখন এনবিআর চেয়ারম্যান তা মাঝপথে থামিয়ে দেন। একই দিন বাংলাদেশ অ্যাগ্রো ফিড ইনগ্রিডিয়েন্টস ইমপোর্টার্স অ্যান্ড ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের একজন সহসভাপতি হয়রানির অভিযোগ করলে এনবিআর চেয়ারম্যান তাঁকে ধমকান। দেশের স্বনামখ্যাত এক উদ্যোক্তাও সমস্যা নিয়ে দেখা করতে গিয়ে বিব্রত হয়েছিলেন বলে জানা যায়।
এফবিসিসিআইয়ের সদ্য বিদায়ী সভাপতি জসিম উদ্দিন জানান ‘এনবিআরের সঙ্গে আলোচনার জায়গা ছোট হয়ে আসছে। কারণ, এনবিআর চেয়ারম্যান দেখা দেন না। বেসরকারি খাত বড় হয়ে উঠলেও এখন আলোচনা করার জায়গায় শূন্যতা তৈরি হয়েছে।’
গত ৫ মার্চেই ঘটে আরেক ঘটনা। ই–কমার্স প্রতিষ্ঠান ই–অরেঞ্জের প্রতারণার ব্যাপারে আদালত ই–অরেঞ্জ থেকে রাজস্ব আদায়ের বিষয়ে প্রতিবেদন দিতে বললেও এনবিআর দেয়নি। আদালত ওই দিন বলেছিলেন, ‘উনি (এনবিআর চেয়ারম্যান) কেন আদালতের আদেশ ফলো করছেন না? উনি নিজেকে কি সম্রাট ভাবেন?’
অর্থসচিব আরেকজন গুরুত্বপূর্ণ নীতিনির্ধারক। ব্যবসায়ী নেতা বা সাধারণ মানুষের সঙ্গে অর্থসচিবের যোগাযোগ সাধারণত কমই থাকে। তবে অর্থনীতিবিদ ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে যোগাযোগ অতীতের অর্থসচিবেরা রাখতেন। সামষ্টিক অর্থনীতি নিয়ে আলোচনা করার জন্য আওয়ামী লীগের সময়েই আগে অর্থনীতিবিদদের সমন্বয়ে বিশেষ কমিটি নিয়মিত বৈঠক করত। সেখানে অর্থমন্ত্রী ও অর্থসচিব অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করতেন। এ ছাড়া অর্থনীতির যেকোনো বিষয়ের ব্যাখ্যাও পাওয়া যেত অর্থসচিবদের কাছ থেকে।
বর্তমানে ফাতিমা ইয়াসমিন অর্থসচিব হিসেবে এক বছরের বেশি সময় ধরে দায়িত্বে থাকলেও প্রকাশ্যে তাঁর কথা শোনা গেছে মাত্র একবার, তা–ও মাত্র একটি বাক্য। গত ২ জুন অনুষ্ঠিত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট–উত্তর সংবাদ সম্মেলনে শেয়ারবাজার নিয়ে প্রশ্ন করা হলে অর্থসচিব বলেছিলেন, ‘শেয়ারবাজার নিয়ে কী কী কার্যক্রম নেওয়া হয়েছে, তা গভর্নর ভালো বলতে পারবেন।’
ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি আবুল কাসেম খান বলেন অর্থমন্ত্রীর কথা না হয় বাদ দিলাম। এনবিআর চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর—কারও সঙ্গেই তো কথা বলা যায় না। অর্থ খাতের শীর্ষ ব্যক্তিদের মধ্যে সমন্বয়হীনতা ও অপেশাদার মনোভাবের চূড়ান্ত রূপ দেখা যাচ্ছে এখন। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য বেসরকারি খাতের সঙ্গে অর্থনৈতিক নেতৃত্বের আরও সংযোগ দরকার।’
অর্থনৈতিক সংকটের সময় প্রতিটি দেশের অর্থনীতি কীভাবে পরিচালিত হবে—এই নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা অতীতেও হয়েছে। ২০০৮ সালে বিশ্ব অর্থনীতিতে সংকট দেখা দিলে ২০০৯ সালের ২৯ অক্টোবর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ও বিশ্বের আর্থিক ব্যবস্থা নিয়ে কাজ করা সুইজারল্যান্ডভিত্তিক ফিন্যান্সিয়াল স্ট্যাবিলিটি বোর্ড (এফএসবি) জি-২০ দেশের অর্থমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরদের উদ্দেশে একটি প্রতিবেদন তৈরি করেছিল। ‘দ্য ফিন্যান্সিয়াল ক্রাইসিস অ্যান্ড ইনফরমেশন গ্যাপ’ নামের সেই প্রতিবেদনে তারা বলেছিল, সঠিক উপাত্ত সংগ্রহ, সেই উপাত্তের আলোকে অর্থনীতির ঝুঁকি নিয়মিত মনিটর করা, উপাত্ত বিনিময়ের সমন্বিত ব্যবস্থা থাকা এবং অর্থনীতির সঠিক পর্যালোচনাই হচ্ছে অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপায়।
বিদ্যমান অর্থনৈতিক সংকটের সময় এর প্রভাব নিয়ে কয়েকজন বিশেষজ্ঞের সঙ্গে কথা বললে তাঁরা বেশ কিছু সমস্যা তৈরি হওয়ার কথা বলেছেন। যেমন অর্থনৈতিক সংকটের সময় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে পরিবীক্ষণ বা মনিটরিং। অথচ এই ব্যবস্থা এখন দুর্বল এবং অকার্যকর হয়ে আছে। সরকারি অর্থ ও বাজেট ব্যবস্থাপনা আইন, ২০০৯–এর ১৫(৪) ধারা অনুযায়ী ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে সংসদে বাজেট বাস্তবায়ন অগ্রগতি নিয়ে প্রতিবেদন দাখিল করতে হয় অর্থমন্ত্রীকে। অথচ বিগত ২০২২-২৩ অর্থবছরের অক্টোবর-ডিসেম্বর প্রান্তিকের প্রতিবেদন অর্থমন্ত্রী সংসদে জমা দিয়েছেন গত মে মাসে। এরপর আরও দুটি প্রান্তিক পার হয়েছে, দেওয়া হয়েছে নতুন অর্থবছরের বাজেট। কিন্তু প্রতিবেদন আর দাখিল করা হয়নি।
অর্থনীতিতে নীতি সমন্বয়ের অভাবও এখন প্রকট। রাজস্ব নীতির সঙ্গে মুদ্রানীতির মিল নেই। বাজেটে বেসরকারি বিনিয়োগ জিডিপির ৪ শতাংশ বাড়িয়ে ২৭ দশমিক ৪ শতাংশ করার অতি উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনার কথা আছে। অথচ বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আইএমএফের শর্ত মেনে মুদ্রানীতির আমূল পরিবর্তন এনে মুদ্রা সরবরাহ কমানোর কথা বলেছেন। এমনকি মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি), মূল্যস্ফীতি ও রাজস্ব বৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ নিয়েও আর্থিক ও মুদ্রানীতির বড় ধরনের বৈপরীত্য আছে।
দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণেও ক্রমাগত ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে যাচ্ছে সরকার। একটার পর একটা পণ্য নিয়ে সংকট দেখা দিচ্ছে। কখনো চাল বা পেঁয়াজ, কখনো কাঁচা মরিচ, মুরগি, ভোজ্যতেল, চিনি কিংবা ডিম-সংকট লেগেই আছে। সংকট মোকাবিলার জন্য আমদানির কথা ওঠে, শুল্ক কমানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়। কিন্তু সময়মতো কোনোটাই হয় না। এসব নিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, কৃষি মন্ত্রণালয়, প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ও এনবিআরের সঙ্গে সমন্বয়ের অভাব দেখা দিয়েছে বিভিন্ন সময়। ফলে দাম নিয়ন্ত্রণে কোনো উদ্যোগই তেমন কাজে আসেনি।
আইএমএফের ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ কর্মসূচির আওতায় বাংলাদেশ। এই ঋণ পেতে বহুরকম শর্ত পূরণ করতে হচ্ছে বাংলাদেশকে। এর মধ্যে আছে রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি ফ্যাসিলিটি (আরএসএফ) বাবদ ১৪০ কোটি ডলারের ঋণ। মূলত জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সংকট মোকাবিলার জন্য এই অর্থ নেওয়া হচ্ছে। সুতরাং শর্ত পূরণের জন্য কেবল বাংলাদেশ ব্যাংক নয়, এর সঙ্গে যুক্ত আছে অর্থ মন্ত্রণালয়, এনবিআর, জ্বালানি মন্ত্রণালয় ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়। অথচ এসব নিয়েও কোনো আলোচনা নেই।
সামগ্রিক বিষয়ে অর্থনীতিবিদ, পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘অর্থনীতি এখন কঠিন সময় পার করছে। অথচ এ সময়ে আর্থিক খাতকে শৃঙ্খলায় আনতে সমন্বিত কোনো পদক্ষেপ নেই। ফলে দেখা যায় সরকার যা বলছে, আর যা করছে—তার মধ্যে বিরাট ফারাক। সব চলছে মান্ধাতা আমলের পদ্ধতি দিয়ে। অর্থমন্ত্রী যে নিয়মিত অফিস করেন না, তা সরকারের শীর্ষ পর্যায়ও জানে। তিনি ঠিকঠাক অফিস করলে অনেক মতবিনিময়ের সুযোগ তৈরি হতো। নীতি পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষেত্রে যত বেশি আলোচনা করা যায়, তত বেশি নির্ভুল সিদ্ধান্ত আসে। সব মিলিয়ে আমি বলব, আমাদের আর্থিক খাতে ভালো কোনো শৃঙ্খলা নেই। খাতটি নিজের মতো করে চলছে। এখানে ঘাটতি রয়েছে নিষ্ঠাবান ও দায়িত্বশীল নেতার। দরকার বেশি বেশি বসা ও আলোচনা করা এবং সবার মতামত আমলে নেওয়া। কিন্তু কে এ সমন্বয়ের দায়িত্ব পালন করবে? আমি কাউকে দেখতে পাচ্ছি না।’