চাঁদপুর শহরের ওয়ারলেস এলাকায় এক বছর ধরে গৃহকর্মীকে ধর্ষণ করে আসছিলেন আমজাদ মাহমুদ নিলয় (২১) নামে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া এক শিক্ষার্থী। ধর্ষণের বিষয়টি একাধিকবার নিলয়ের মা-বাবাকে জানালেও কোন প্রতিকার পাননি ভুক্তভোগী। এ ঘটনায় অভিযুক্ত নিলয়ের মা শাহনাজ বেগমকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
ভোলা জেলার দৌলতখান উপজেলার চরশফী গ্রামের আব্দুল মাজেদের ছেলে আমজাদ মাহমুদ নিলয়। মামলার পর থেকে বাবা-ছেলে পলাতক রয়েছে। তবে দ্রুত পুলিশ তাদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হবে বলে জানিয়েছেন চাঁদপুরের পুলিশ সুপার মো. মিলন মাহমুদ।
জানা গেছে, করোনার কারণে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় বাবা-মায়ের সঙ্গে চাঁদপুরের বাসাতেই অবস্থান নেন অভিযুক্ত যুবক। তার বাবা-মা যখন কর্মস্থলে চলে যান তখন গৃহকর্মীকে একা পেয়ে এক বছর ধরে ধর্ষণ করে আসছিল। এ বিষয়টি নিলয়ের বাবা এবং মাকে জানিয়েও কোনো প্রতিকার পাননি অসহায় গৃহকর্মী। উল্টো শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনসহ বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি দেখিয়ে তাকে চুপ থাকতে বাধ্য করে।
সর্বশেষ গত ১৪ এপ্রিল দুপুরে আব্দুল মাজেদ দম্পতি অফিসে চলে গেলে সেই সুযোগে নিলয় ভুক্তভোগীকে ধর্ষণ করে। ভুক্তভোগী সর্বশেষ ঘটনার বিষয়টি আব্দুল মাজেদ দম্পতিকে জানিয়ে প্রতিকার চাইলে মা-ছেলে নির্যাতন করে। এ অবস্থায় ভুক্তভোগী দীর্ঘ দিনের নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে গত ৩০ এপ্রিল বাসা থেকে পালিয়ে সড়কে এসে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। কিন্তু আশপাশের মানুষ তা দেখে ফেলায় এই যাত্রায় রক্ষা পান তিনি।
এমন ঘটনার পর বিষয়টি চাঁদপুর জেলা পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদের নজরে পড়ে। তিনি ঘটনার শিকার তরুণীকে উদ্ধার করে সদর মডেল থানা পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন।
চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রশিদ জানান, এ ঘটনায় গৃহকর্মী তরুণীর কাছ থেকে বিস্তারিত শুনে ওই পরিবারের তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা গ্রহণ করা হয়েছে। শনিবার (০১ মে) চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে গৃহকর্মীর। এ ছাড়া অভিযান চালিয়ে পুলিশ নিলয়ের মা শাহনাজ বেগমকে আটক করেছে। পরে তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়।
এ বিষয়ে পুলিশ সুপার মো. মিলন মাহমুদ বলেন, পুলিশ যাওয়ার আগেই অভিযুক্ত যুবক এবং তার বাবা পালিয়ে যায়। তবে তার মাকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। আশা করি, খুব দ্রুত অভিযুক্ত যুবককে গ্রেফতার করতে সক্ষম হবো।