1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : জাতীয় অর্থনীতি : জাতীয় অর্থনীতি
বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:২০ অপরাহ্ন

এক বাড়ি নিয়ে একটি গ্রাম!

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট : শনিবার, ২৬ জুন, ২০২১

দেশে আরেক গ্রামের খোঁজ মিলেছে, যে গ্রামে আছে মাত্র একটি বাড়ি! একটি বাড়ি নিয়ে সেই একটি গ্রাম হলো বিষ্ণুপুর। ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার রূপাপাত ইউনিয়নে বিষ্ণুপুর অবস্থিত।

নাজুক যোগাযোগব্যবস্থার কারণে কম লোকসংখ্যার গ্রাম ছিল বিষ্ণুপুর। মাত্র ৬০ শতাংশ জমিতে ১০-১২টি পরিবার ১০-১২টি বাড়িতে বাস করত। লোকসংখ্যা ও বাড়ি কমতে কমতে এখন মাত্র একটিতে দাঁড়িয়েছে। বাড়িতে রয়েছে ৯টি পরিবার। মা-বাবা, ছেলে-মেয়ে, নাতি-নাতনিসহ পরিবারের সদস্যসংখ্যা ৩৭। এর মধ্যে ভোটার ১৫ জন। বাড়িটির দক্ষিণ পাশে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার জয়নগর গ্রাম, উত্তরে বোয়ালমারীর টোংরাউল গ্রাম। উপজেলা সদর থেকে ১০-১২ কিলোমিটার দূরের রূপাপাত ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডে টোংরাইল, সুতালিয়া, বনমালীপুর ও কদমী গ্রামের মাঝখানে বিষ্ণুপুর গ্রামটি অবস্থিত।

বিষ্ণুপুরের বাসিন্দা সলেমান মোল্লা (৬০) বলেন, ‘অবহেলা আর বঞ্চনার গ্রাম বিষ্ণুপুর। গ্রামটি ফসলি জমি ও কাদামাটিতে পরিবেষ্টিত। রাস্তা নেই। খালি পায়ে কাদামাটি ও পানি পেরিয়ে কোনো রকমে গ্রামে ঢুকতে হয়। অজ্ঞাত কারণে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। গ্রামে বছরের ছয় মাস পানি থাকে। পরের ছয় মাস ফসলি জমির ভেতর দিয়েই চলাচল করতে হয় আমাদের।’ তিনি আরো বলেন, ‘রাস্তা না থাকায় নিত্যদিনের দুর্ভোগ এড়াতে একে একে অনেকেই গ্রাম ছেড়েছে। কেউ পাশের কাশিয়ানী উপজেলায়, আবার কেউ বাপ-দাদার স্মৃতি ভিটেমাটি ফেলে পাশের মাগুরা জেলায় চলে গেছে। আমরা মাত্র একটি পরিবার গ্রামে রয়ে গেছি।’ তিনি অভিযোগ করেন, জনপ্রতিনিধিরা শুধু ভোটের সময় আসেন। উন্নয়নের নানা প্রতিশ্রুতি দেন। ভোট শেষে তাঁদের আর দেখা পাওয়া যায় না। তবে সাবেক এমপি আব্দুর রহমান বিদ্যুৎ লাইনের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। এ জন্য টিকে আছি। বিদ্যুতের জন্য টেলিভিশন ও মোবাইল ফোন চালানো যায়।’

বিষ্ণুপুরের আরেক বাসিন্দা হেমায়েত মোল্লা বলেন, ‘আমাদের মূল সমস্যা যাতায়াতের। দেড় কিলোমিটার দূরে প্রাইমারি স্কুল ও দুই কিলোমিটার দূরে হাই স্কুলে গিয়ে ছেলে-মেয়েদের পড়ালেখা করতে হয়। গ্রামে মসজিদ নেই। প্রায় আধাকিলোমিটার দূরে গিয়ে জুমার ও দুই ঈদের নামাজ পড়তে হয়। এককথায় গ্রামটি ছোট হওয়ায় উন্নয়নবঞ্চিত এবং অবহেলিত।’

পাশের টোংরাইল গ্রামের মহানন্দ বিশ্বাস জানান, বিষ্ণুপুরের যাতায়াতব্যবস্থা খুবই খারাপ। জমির  ছোট একটি আইল দিয়ে চলাচল করতে হয়। বর্ষা মৌসুমে গ্রামের লোকজন নৌকা ছাড়া বাড়ি থেকে বের হতে পারে না। শুকনা মৌসুমেও তাদের কাদামাটি মাড়িয়ে চলতে হয়। ফলে গ্রামে যারা আছে, তাদের প্রতিদিনই অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হয়।

রূপাপাতের ৫ নং ওয়ার্ডের সদস্য রবিন কুমার বিশ্বাস বলেন, ‘রাস্তা তৈরির জন্য বরাদ্দ পেয়েও জমি না দেওয়ায় তা করা সম্ভব হয়নি। কারণ জমির ওপর দিয়ে রাস্তা নির্মাণ করতে গেলে মালিকরা বাধা দেয়। আমাদের সাধ্যমতো উন্নয়ন করার চেষ্টা করেছি। বিভিন্ন ভাতার কার্ডসহ সরকারি সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়েছে ওই গ্রামের বাসিন্দাদের।’

বোয়ালমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঝোটন চন্দ বলেন, ‘আমি শনিবারই ওই গ্রামের কথা জেনেছি। দ্রুত সেখানে গিয়ে সবার সঙ্গে কথা বলে বিস্তারিত বলতে পারব।’

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© ২০২০ দৈনিক জাতীয় অর্থনীতি