আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করার ঘোষণা আসবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
রোববার (০৫ জুন) সকালে সচিবালয়ে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এনটিআরসিএর মাধ্যমে শূন্য পদে শিক্ষক নির্বাচন সংক্রান্ত সুপারিশের ফল প্রকাশকালে তিনি এ কথা জানান।
ঘোষণার দিন থেকে শিক্ষক-কর্মচারীরা এমপিও সুবিধা প্রাপ্য হবেন বলেও জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী।
গত মার্চে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির ঘোষণাটি আসার কথা ছিল। এরপর বলা হয় মে মাসে। অবশেষে জুন মাসের শুরুতে এসে এমপিওভুক্তির কথাও জানালেন শিক্ষামন্ত্রী।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, গত বছরের ১০ অক্টোবর থেকে এমপিওভুক্তির জন্য অনলাইনে আবেদন নেওয়া শুরু হয়। ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত আবেদন করার সুযোগ ছিল। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগে নিম্ন মাধ্যমিক স্কুল, মাধ্যমিক স্কুল, উচ্চ মাধ্যমিক কলেজ ও ডিগ্রি কলেজ মিলিয়ে সাড়ে চার হাজারের বেশি আবেদন পড়েছে। আর কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগে প্রায় তিন হাজার ৯০০ মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আবেদন করেছে। আবেদনকৃত মোট সাড়ে আট হাজার প্রতিষ্ঠানের ৯০ হাজার শিক্ষক-কর্মচারী এমপিওভুক্তির জন্য অপেক্ষায় রয়েছেন।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর আবেদন পাওয়ার পর তা যাচাই-বাছাইয়ের জন্য জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়। তারা অবকাঠামো ও জমির কাগজপত্র যাচাই-বাছাই শেষ করেছেন। এরপর বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ড থেকে আবেদনকৃত প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীর সংখ্যা, পরীক্ষার্থীর সংখ্যা, ফলাফল ও স্বীকৃতি নবায়নের কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করা হয়।
মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ২০২১ সালের সংশোধিত এমপিও নীতিমালা অনুযায়ী যোগ্য প্রতিষ্ঠান বাছাই করা হয়।
২০২১ সালের সংশোধিত এমপিও নীতিমালা অনুযায়ী, নিম্ন মাধ্যমিক স্তরের (ষষ্ঠ-অষ্টম) বিদ্যালয় এমপিওভুক্তি পেতে শহর ও মফস্বলে ন্যূনতম ছাত্র-ছাত্রী থাকতে হবে যথাক্রমে ১২০ ও ৯০ জন। মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের (ষষ্ঠ-দশম) ক্ষেত্রে শহর ও মফস্বলে এই সংখ্যা যথাক্রমে ২০০ ও ১৫০। উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের (ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ) ক্ষেত্রে এই সংখ্যা ৪২০ ও ৩২০। উচ্চ মাধ্যমিক কলেজে (একাদশ ও দ্বাদশ) ন্যূনতম ছাত্র-ছাত্রী থাকতে হবে শহরে ১৮০ জন এবং মফস্বলে ১৪০ জন। স্নাতক (পাস) কলেজে এই সংখ্যা যথাক্রমে ৪৯০ ও ৪২৫।
একইভাবে এমপিওভুক্তি পেতে পাসের হারের ক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্ন হার নির্ধারণ করা হয়েছে। জেএসসি পরীক্ষায় শহর, জেলা সদর/পৌরসভা এবং মফস্বল এই তিন ক্যাটাগরিতে পাসের ন্যূনতম হার হতে হবে যথাক্রমে ৭০, ৬৫ ও ৬০ শতাংশ। এসএসসিতে তা যথাক্রমে ৭০, ৬০ ও ৫৫ শতাংশ। এইচএসসিতে শহরে ৬৫, জেলা সদর ও পৌরসভায় ৫৫ এবং মফস্বলে কমপক্ষে ৫০ শতাংশ শিক্ষার্থীকে পাস করতে হবে। এসব শর্ত পূরণ করতে পারলেই ওই প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির যোগ্য হবে।
সর্বশেষ ২০১৯ সালের ২৩ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুই হাজার ৭৩০টি প্রতিষ্ঠান এমপিভুক্তির ঘোষণা দেন। এরপর দীর্ঘ ছয় মাস যাচাই-বাছাই শেষে ২০২০ সালের ২৯ এপ্রিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ এক হাজার ৬৩৩ এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগ ৯৮২টি প্রতিষ্ঠানের তালিকা চূড়ান্ত করে। তবে এ বছর ঘোষণার আগেই যাচাই-বাছাইয়ের কাজ শেষ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।