আবু তাহের বাপ্পা: ঝিনাইদহ ৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম কলকাতায় খুন হওয়ার পর তার খুনের আলোচনায় নানা ডালপালা বাড়ছে। নিহত সংসদ আনোয়ারুল আজিম এর স্থানীয় পর্যায়ে সব চেয়ে প্রভাবশালী বন্ধু ও এমপির ব্যবসায়িক পার্টনার হিসেবে পরিচিত মোবারকগঞ্জ সুগার মিলের শ্রমিক কর্মচারি ইউনিয়নের সভাপতি গোলাম রসুলের সম্পৃক্ততার কথা নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়েছে। স্থানীয় সূত্রগুলো বলছে এ খুনের নেপথ্য নায়ক হিসেবে গোলাম রসুলের সম্পৃক্ততা উড়িয়ে দেয়া যায় না। কারণ পূর্ব থেকেই গোলাম রসুল স্বর্ণ ও মাদক চোরাচালানের সাথে সম্পৃক্ত । এ নিয়ে বিভিন্ন সময়ে স্থানীয় পত্র পত্রিকায় লেখালেখিও হয়। কিন্তু এমপি আনোয়ারুলের প্রভাবে অনেক মামলা থেকে তিনি মুক্তি পান।
এ দিকে স্থানীয় একটি সূত্র বলছে খুনের নেপথ্য পরিকল্পনাকারি হিসেবে যে আক্তারুজ্জামান শাহিনের নাম আসছে সেও গোলাম রসুলের বন্ধু। তারা একই ধরণের সোনার ব্যবসার সাথে যুক্ত বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো দাবী করেছে। একটি সূত্র বলছে, আনোয়ারুল আজিম ভারতে যাওয়ার বেশ কিছুদিন আগে থেকে এমপির সাথে কোন একটি কারণে দূরত্ব বজায় রেখে চলছিলো গোলাম রসূল। অন্য যে কোন সময়ে এমপি আনোয়ারুল আজিম ভারত যাওয়ার সময় গোলাম রসুল প্রায়ই সঙ্গী হতেন। এবার তিনি তার সাথে যাননি। এ নিয়েও নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে!
এ দিকে আনোয়ারুল আজিম খুন হওয়ার পর গোলাম রসুল খানিকটা চুপ হয়ে গেছেন। যিনি খুব কম সময় চাকুরি স্থলে উপস্থিত থাকতেন এখন সময় বেধে তিনি অফিসে উপস্থিত থাকছেন বলে জানা গেছে। স্থানীয় সূত্রগুলো বলছে, গোলাম রসুল নারী পাচারকারি আন্তর্জাতিক চক্রের সাথে সম্পৃক্ত বলে অনেকের অভিযোগ। গত বছর কুমিল্লার তাহজেবিন সোনিয়া নামে এক মেয়েকে প্রথমে দুবাইয়ে পাচার করে দেয় গোলাম রসুল। এর পর কোন ভাবে দুবাই থেকে দেশে ফিরে আসার অল্প দিনের মাথায় সেই মেয়েকে পর্তুগালে পাচার করে এই গোলাম রসুল। সেখানে টর্চার সেলে নির্যাতনের শিকার হয় সোনিয়া। সেই নির্যাতনের বিষয়টির বিচার চেয়ে নিহত এমপি আনোয়ারুল আজিমসহ গণমাধ্যম কর্মিদের কাছে বার্তা পাঠায় সোনিয়া। কিন্তু সে ঘটনাটিও এমপি আনোয়ারুল আজিমের মাধ্যমে ধামা চাপা দিতে সমর্থ হন গোলাম রসুল।
সামান্য তৃতীয় শ্রেণীর একজন কর্মচারি গোলাম রসুলের রাজকীয় জীবন যে কারোর চোখে প্রশ্নবিদ্ধ হতে বাধ্য। কোটি কোটি নগদ টাকা এবং সম্পদের পাহাড় গড়েছেন এই শ্রমিক নেতা। রয়েছে এলাকা ও রাজধানী জুড়ে কোটি কোটি টাকার ব্যবসা।
জাতীয় অর্থনীতির অনুসন্ধান দলের হাতে গোলাম রসুলের বেশ কিছু ক্রাইম কানেকশন ও বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানের সন্ধ্যান পাওয়া গেছে। যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ৩/৪ হাজার কোটি টাকা হবে।এমপি আনোয়ারুল আজিমের খুনের ঘটনাটি বন্ধু হিসেবে কিভাবে দেখছেন এমন বন্ধু খুনের মূল পরিকল্পনাকারি আক্তারুজ্জামান শাহিনের সাথে পরিচয় আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে গোলাম রসুল বলেন, এমপি আনোয়ারুল আজিম আমার ব্যবসায়িক পার্টনার এটা ঠিক। আর আক্তারুজ্জামান শাহিনকে আমি এমপির সাথে দুইবার দেখেছি। এর বেশী কিছু বলতে চাননি তিনি।