জাপানে ৪ দিনের দ্বিপাক্ষিক সফর শেষে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি স্থানীয় সময় বিকেল ৩টা ৩৫ মিনিটে ওয়াশিংটনের ডালাস বিমানবন্দরে অবতরণ করেন।যুক্তরাষ্ট্র সফর শেষে সেখান থেকে লন্ডন যাবেন তিনি।
শুক্রবার (২৮ এপ্রিল) টোকিও সময় বিকেল ৪টা ২০ মিনিটে হানেদা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ইউনাইটেড এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে ওয়াশিংটনের ডালাস আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের উদ্দেশে রওনা হন প্রধানমন্ত্রী।
বিমানবন্দরের আনুষ্ঠানিকতা শেষে তিনি ওয়াশিংটনের সফরকালীন আবাসস্থলে যাবেন।যুক্তরাষ্ট্র সফরকালে সোমবার (১ মে) বিশ্বব্যাংক সদরদপ্তরে বাংলাদেশ ও বিশ্ব ব্যাংকের মধ্যে সম্পর্কের ৫০ বছর উপলক্ষে ‘রিফ্লেকশন অন ৫০ ইয়ার্স অব ওয়ার্ল্ড ব্যাংক-বাংলাদেশ পার্টনারশিপ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন।
একইদিন প্রধানমন্ত্রী বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ভাইস-প্রেসিডেন্টদের সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেবেন। এছাড়া বিশ্ব ব্যাংকের বোর্ড মেম্বারদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।
সফরকালে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন যুক্তরাষ্ট্র চেম্বার অব কমার্সের প্রেসিডেন্ট ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে ব্যবসায়ীদের একটি প্রতিনিধিদল।
ওয়াশিংটন সফরকালে প্রধানমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটি আয়োজিত নাগরিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগদানসহ বেশ কিছু কর্মসূচিতে যোগ দেবেন।
বৃহস্পতিবার (৪ মে) ওয়াশিংটন থেকে যুক্তরাজ্যের লন্ডন যাবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ব্রিটেনের রাজা তৃতীয় চার্লসের আমন্ত্রণে লন্ডন সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী।
শুক্রবার (৫ মে) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাকিংহাম প্যালেসে নতুন রাজা ও রানির রাজ্যাভিষেকের আগাম সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। এছাড়া এদিন শেখ হাসিনা কমনওয়েলথ নেতাদের সঙ্গে একটি অনুষ্ঠানেও যোগ দেবেন।
শনিবার (৬ মে) ওয়েস্টমিনিস্টারে রাজা ও রানির রাজ্যাভিষেকের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন।
লন্ডন সফরে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি কর্মসূচি ও যুক্তরাজ্যে প্রবাসী বাংলাদেশিদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগদানসহ বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নেবেন।
এর আগে জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার আমন্ত্রণে মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল) দ্বিপক্ষীয় সফরে টোকিও আসেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এদিন প্রধানমন্ত্রী টোকিও পৌঁছালে হানেদা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানিয়ে লাল গালিচা সংবর্ধনা এবং স্ট্যাটিক গার্ড অব অনার দেওয়া হয়।
সফরকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশটির সম্রাট নারুহিতোর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
এ সফরে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বুধবার (২৬ এপ্রিল) সন্ধ্যায় জাপানের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে দেশটির প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক।
এ বৈঠকে দুই প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যেকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ‘ব্যাপক অংশীদারিত্ব’ থেকে ‘কৌশলগত অংশীদারিত্বে’ উন্নীত করেন।
ফুমিও কিশিদা এবং শেখ হাসিনার মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পর দুই দেশ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়াতে ৮টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই করেন।
সফরকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, জাইকার প্রেসিডেন্ট, জাপান বাংলাদেশ পার্লামেন্টরি ফ্রেন্ডশিপ লীগের প্রেসিডেন্ট, জাপান ব্যাংক ফর ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশনের গভর্নর, প্রখ্যাত স্থপতি তাদাও অ্যান্দো প্রমুখ।
তিনি জাপানের শীর্ষ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন, বাংলাদেশ বিনিয়োগ সম্মেলন উদ্বোধন করেন, জাপানে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
বিজ্ঞান ও উদ্ভাবন বিষয়ে জাতীয় জাদুঘর, মিরাইকান পরিদর্শন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আলাদা অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অবদান রাখা ৪ জাপানি নাগরিককে সম্মাননা দেন তিনি।
তিন দেশ সফর শেষে মঙ্গলবার (৯ মে) সকালে দেশে ফিরবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।