যৌতুকের দাবীতে নির্যাতনের অভিযোগ এনে মাওলানা ওমর ফারুকের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেন। মাও.ওমর ফারুক হাজির হাট মাখরাজুল উলুম মাদ্রাসা, মাখরাজুল উলুম মহিলা মাদ্রাসাসহ তিনটি প্রতিষ্ঠানের প্রধান ও পরিচালক।
তিনি লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার চর জাঙ্গালিয়া গ্রামের নাজিম উদ্দিনের ছেলে।
দীর্ঘদিন ধরে যৌতুকের দাবিতে মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক মাও.ওমর ফারুক তার স্ত্রী ছালমা বেগম (৩৫) এর উপর অবর্ণনীয় নির্যাতন করে আসছে বলে আদালতে করা মামলার আর্জিতে উল্লেখ করেন।স্বামীর বিরুদ্ধে গৃহবধূকে নির্যাতন করার ঘটনায় লক্ষ্মীপুর জেলার সিনিয়র জুড়িসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে বিবাদীদের প্রতি সমন জারী করেন। এ মামলায় দেবর মাও.গিয়াসউদ্দিনকেও বিবাদী করা হয়।
মামলার বিবরণ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, ২০০৫ সালের ২৯ জুন চর জাঙ্গালিয়া গ্রামের নাজিম উদ্দিনের ছেলে মাওলানা ওমর ফারুক(৪২) এর সাথে নোয়াখালী জেলার সুবর্ণ চর থানার চর জব্বর গ্রামের মৃত মোহাম্মদ উল্ল্যাহর মেয়ে ছালমা বেগমের (৩৫) ইসলামী শরিয়া মোতাবেক বিয়ে হয়। বিয়ের তাদের সংসারে ১ ছেলে ও ৪ মেয়ে সন্তান আছে। বিয়ের কিছু দিন পরে স্বামী ওমর ফারুকের স্থায়ী বসত ভিটা নদীগর্ভে বিলিন হয়ে গেলে স্ত্রী পৈত্রিক ওয়ারিশী সম্পত্তি বিক্রি করে স্ত্রীর নামে জমি ক্রয় করার জন্য ১০ লক্ষ টাকা স্বামীর কাছে দিলে স্বামী স্ত্রীর নামে জমি না ক্রয় করে নিজে নামে ক্রয় করেন। এরপরেও স্ত্রীর কাছে প্রতিনিয়ত আরও টাকা দাবী করেন। টাকা দিতে না পারায় স্বামী ওমর ফারুক ও দেবর মাও. মো: গিয়াস উদ্দিন ছালমা বেগমের উপর অত্যচার ও নির্যাতন চালাতে থাকে এবং বাড়ী থেকে বের করে দেওয়ারও হুমকী দেন।
৩ লক্ষ টাকা যৌতুক দাবী করে গত মাসের ১৪ তারিখে ছালমা বেগমকে মারধোর করেন। স্বামী ওমর ফারুক ও দেবর গিয়াস উদ্দিন ছালমা বেগমকে চুলের মুঠি ধরে মাটিতে আছড়ে ও গলাটিপে ধরে ঘর থেকে বাহির করে দেন। এরপর ওই নির্যাতনের স্বীকার ছালমা বেগম ছেলেমেয়ে নিয়ে তার আপন ভাইয়ের বাড়ীতে বসাবস করে আসলেও কোন খোজখবর নেন না ওমর ফারুক।
এই বিষয়ে ছালমা বেগম বলেন-‘আমার স্বামী আমাকে যৌতুকের দাবীতে অনেক নির্যাতন করে। আমি সামাজিক কারণে কাউকে এতোদিন বলিনি। যতোটুকু পেরেছি পিতার ওয়ারিশি সম্পত্তি বিক্রি করে এনে দিয়েছি। এখনো সে ও তার ভাই আমাকে নির্যাতন করে যাচ্ছে। গত মাসে মারধোর করে ঘর থেকে বের করে দিলে এখন ভাইয়ের বাড়ীতে আছি। ও কোনো খোঁজখবর নেয় না।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে মাওলানা ওমর ফারুকের প্রতিষ্ঠানে গিয়ে তাকে পাওয়া যায় নি। মোবাইল ফোনেও যোগাযোগ করার চেষ্টা করে মাও.ওমর ফারুক ও মাও. গিয়াস উদ্দিনের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।