প্রাণঘাতী রোগ করোনায় দৈনিক মৃত্যুর হিসেবে নতুন রেকর্ড করেছে ভারত। মঙ্গলবার (১৮ মে) দেশটিতে মারা গেছেন ৪ হাজার ৫২৯ জন করোনা রোগী। বিশ্বের কোনো দেশে এর আগে করোনায় একদিনে এই পরিমাণ মানুষের মৃত্যু হয়নি।
আগের দিন সোমবার (১৭ মে) ভারতে মারা গিয়েছিলেন ৪ হাজার ৩২৯ জন করোনা রোগী। সেটিও ছিল বিশ্বের কোনো দেশে একদিনে করোনায় সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড।
গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্তের সংখ্যাও বেড়েছে ভারতে। মঙ্গলবার দেশটিতে করোনা আক্রান্ত নতুন রোগীর সংখ্যা পৌঁছেছে ২ লাখ ৬৭ হাজার ৩৩৪ জনে। সোমবার এই সংখ্যা ছিল ২ লাখ ৬৩ হাজার ৫৩৩ জন।
ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে দেশটির অন্যতম জাতীয় পত্রিকা টাইমস অব ইন্ডিয়া।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, করোনায় ভারতের সবচেয়ে বিপর্যস্ত দুই রাজ্য— দিল্লি ও মহারাষ্ট্রে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা কমে এলেও কর্নাটক, ছত্তিশগড়, হরিয়ানা, পাঞ্জাব, তামিলনাড়ু প্রভৃতি রাজ্যে দৈনিক সংক্রমণ পরিস্থিতির দৃশ্যমান বড় কোনো উন্নতি দেখা যাচ্ছে না।
অন্যদিকে, ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যসমূহ, যেগুলো ‘সেভেন সিস্টার্স’ নামে পরিচিত— আসাম, মণিপুর, নাগাল্যান্ড, মিজোরাম, অরুণাচল, সিকিম ও ত্রিপুরায় কিছুটা অবনতি হয়েছে দৈনিক সংক্রমণ পরিস্থিতির।
মঙ্গলবার এক টুইটে ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রী হর্ষ বর্ধন জানিয়েছেন, দেশের ২২ টি রাজ্যে করোনা আক্রান্তের হার বেড়েছে ১৫ শতাংশেরও বেশি; এবং বর্তমানে ভারতে করোনায় আক্রান্তের গড় হার ১৩ দশমিক ৩১ শতাংশ।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বুধবারের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার দেশজুড়ে করোনা টেস্ট করিয়েছেন ২০ লাখ ৮ হাজার ২৯৬ জন। এটিও একটি রেকর্ড। ভারতে এর আগে এক দিনে এত সংখ্যক মানুষ করোনা টেস্ট করাননি।
বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, মহামারি শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত দেশের মোট জনসংখ্যার ১ দশমিক ৮ শতাংশ বর্তমানে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
দেশবাসীকে সতর্ক করে বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘এই হার যেন কোনোভাবেই ২ শতাংশে উন্নীত না হয়ে সেজন্য আমাদের সবাইকে আরও দায়িত্বশীল হতে হবে। টিকা গ্রহণ ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ক্ষেত্রে কোনো প্রকার শিথিলতা প্রদর্শন না করতে দেশবাসীকে আহ্বান জানানো হচ্ছে।’