1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : জাতীয় অর্থনীতি : জাতীয় অর্থনীতি
রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৫৭ পূর্বাহ্ন

করোনা ছড়িয়ে পড়ার ভয়ে রোগীর স্বজনরা লাশ নিল না

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : মঙ্গলবার, ২০ এপ্রিল, ২০২১

নারায়ণগঞ্জ তিনশ শয্যা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ভুল তথ্যের কারণে করোনায় মারা যাওয়া বাবুল চন্দ্র দাস নামে এক হিন্দু ব্যক্তিকে মুসলমান হিসেবে জানাজা শেষে দাফন করা হয়েছে।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মারা যাওয়া রোগীর স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ না করেই নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের এক কাউন্সিলরকে জানায়- করোনা ছড়িয়ে পড়ার ভয়ে রোগীর স্বজনরা লাশ নিতে চাচ্ছেন না। পরে তার লাশ জানাজা শেষে দাফন করা হয়।

এদিকে হাসপাতালের দায়িত্বশীলদের এমন কর্মকাণ্ডে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ওই ব্যক্তিকে হাসপাতালে নিয়ে আসা নারায়ণগঞ্জের গোগনগর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য সৈকত হোসেন। তিনি বলেন, রোগী মারা যাওয়ার পর হাসপাতাল থেকে আমাদের জানালে আমরাই তার সৎকারের ব্যবস্থা করতাম।

 

নারায়ণগঞ্জ তিনশ শয্যা হাসপাতালকে বর্তমানে করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে রূপান্তর করা হয়েছে। গত শনিবার সকালে এ হাসপাতালে আইসোলেশনে থাকা করোনা রোগী বাবুল চন্দ্র দাস মারা যান।

সেদিন দুপুরে হাসপাতালের সুপারিনটেনডেন্ট ডা. এম এ বাশার জানান, হাসপাতালের এন্ট্রি খাতার তথ্যানুযায়ী মৃত রোগীর নাম বাবুল। বয়স পঞ্চাশ। সৈকত নামের একজন তাকে হাসপাতালে নিয়ে এসেছেন। ফতুল্লার সৈয়দপুর এলাকায় তার বাড়ি। হাসপাতালে ভর্তির পর থেকে তার আত্মীয়রা কেউ খোঁজ নেননি। মৃত্যুর পর তার পরিবারকে জানানো হলেও করোনা রোগী হওয়ায় তারা লাশ নিতে চাচ্ছিলেন না। তাই লাশ দাফনের জন্য কাউন্সিলর শওকত হাশেমকে জানানো হয়েছে।

এ বিষয়ে ১২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শওকত হাশেম বলেন, যেহেতু হাসপাতালের রেকর্ডে মৃত ব্যক্তিকে মুসলমান হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, তাই আমরা লাশ দাফনের ব্যবস্থা করি। এছাড়া গোসলের সময় ওই ব্যক্তির খৎনা করা দেখতে পাই।

বাবুল দাসকে হাসপাতালে নিয়ে আসা গোগনগর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড সদস্য সৈকত হোসেন বলেন, বাবুল চন্দ্র দাস ছয় বছর ধরে আমাদের এলাকার খোকন মণ্ডলের দর্জি দোকানে কাজ করত। পরিবারের সঙ্গে তার যোগাযোগ নেই বললেই চলে। সে দোকানে ঘুমাত, হোটেলে খেত। গত ১৪ এপ্রিল বাবুল অসুস্থ হয়ে পড়লে আমরা তাকে মহাখালী নিয়ে যাই চিকিৎসা করাতে। সেখানে পরীক্ষা করে জানা যায়, তার করোনা পজিটিভ। এরপর তাকে ১৫ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ তিনশ শয্যা হাসপাতালে এনে ভর্তি করি। ভর্তির সময় আমরা তার নাম বাবুল চন্দ্র দাস বললেও এন্ট্রি খাতায় লেখা হয় শুধু বাবুল। গত রোববার প্রথম আমরা তার মৃত্যুর খবর পাই। পরে যখন হাসপাতাল থেকে আমাকে ফোন করা হয়, তখন লাশ দাফনের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তার মৃত্যুর সাথে সাথেই যদি আমাদের ফোন দিতো তাহলে এই সমস্যা হতো না। তার লাশ সৎকারের ব্যবস্থাও আমরা করতাম। বাবুলের খৎনা করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রাকৃতিকভাবেই তার খৎনা করা ছিল।

বাবুল দাসের সঙ্গে তার স্ত্রীর ১০-১৫ বছর ধরে সম্পর্ক নেই বলে জানা গেছে।

হাসপাতাল সুপার ডা. বাশারের  বলেন, বাবুল করোনা পজিটিভ- এটি জানার পর থেকেই তার পরিবার যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। যেদিন বাবুল মারা যান, সেদিন বারবার তার পরিবারকে ফোন দেওয়া হয়। তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পারায় পরে সিটি করপোরেশনের মাধ্যমে লাশ দাফনের ব্যবস্থা করি। পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি বলেই এ কনফিউশন তৈরি হয়েছে।

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© ২০২০ দৈনিক জাতীয় অর্থনীতি