আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
ইউরোপে করোনা সংক্রমণে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে গেছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে ইউরোপের দেশগুলোতে মৃত্যুহার ৪০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। খবর বিবিসির।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মুখপাত্র ডা. মার্গারেট হ্যারিস বলেন, ইউরোপে সংক্রমণের অধিকাংশই ফ্রান্স, স্পেন, যুক্তরাজ্য, নেদারল্যান্ডস এবং রাশিয়ায়। হাসপাতালগুলোতে রোগীর ভিড় বাড়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তিনি।
এক বিবৃতিতে ডা. মার্গারেট হ্যারিস বলেন, উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে… বিভিন্ন হাসপাতালে বেশি অসুস্থ লোকজনকে ইন্টেন্সিভ কেয়ারে নেওয়া হচ্ছে। ফলে ইন্টেন্সিভ কেয়ারেও জায়গা হচ্ছে না।
রাশিয়ায় গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৩২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। ফলে দেশটিতে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ২৬ হাজার ৫৮৯ জন।
ইতালিতেও করোনায় মৃত্যু বেড়ে গেছে। দেশটিতে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে মারা গেছে ২২১ জন। ওয়ার্ল্ডোমিটারের পরিসংখ্যান বলছে, দেশটিতে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ৩৭ হাজার ৭শ জন।
অস্ট্রিয়ায় মঙ্গলবার মৃত্যুর সংখ্যা এক হাজার ছাড়িয়ে গেছে। এদিকে, করোনা সংক্রমণে বিশ্বে ৪র্থ অবস্থানে থাকা রাশিয়ায় মঙ্গলবার নতুন করে আক্রান্ত হয়েছে আরও ১৬ হাজার ৫৫০ জন। ফলে কর্তৃপক্ষ নতুন করে কড়াকড়ি আরোপ করেছে। দেশটিতে সব ধরনের জনাকীর্ণ স্থানে মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
সংক্রমণ বাড়ছে ইতালিতেও। দেশটিতে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছে আরও ২২ হাজার মানুষ। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, করোনার পরীক্ষা-নিরীক্ষাও বাড়ানো হয়েছে।
সংক্রমণ বাড়ায় দেশজুড়ে নতুন করে বিধি-নিষেধ আরোপ করতে বাধ্য হয়েছে ইতালি সরকার। এদিকে সোমবার সন্ধ্যা থেকে নতুন বিধি-নিষেধের বিপক্ষে ইতালির বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ-প্রতিবাদে অংশ নিয়েছে হাজার হাজার মানুষ।
মঙ্গলবার ফ্রান্সে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছে ৩৩ হাজার ৪১৭ জন এবং মারা গেছে ৫২৩ জন। দেশটিতে গত এপ্রিলের পর এটাই একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর সংখ্যা।
এদিকে, বেলজিয়ামেও নতুন করে সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে। ফলে হাসপাতালগুলোতেও এর প্রভাব দেখা যাচ্ছে। দেশটির এক চতুর্থাংশ মেডিকেল স্টাফ বর্তমানে কোভিড-১৯ সংক্রমণে ভুগছেন। দেশটিতে নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা ১২ হাজার ৬৮৭ এবং ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছে ৮৯ জন।
বেলজিয়ামের ১০টি হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ তাদের স্টাফদের কাজ চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। করোনায় আক্রান্ত যেসব স্টাফের দেহে করোনার লক্ষণ দেখা যায়নি তাদের চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে।
পুরো ইউরোপজুড়েই করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়েছে। ফলে অনেক দেশই এখন আবার নতুন করে কড়াকড়ি ও বিধি-নিষেধ জারি করতে বাধ্য হয়েছে। ইউরোপের বিভিন্ন দেশে রেস্টুরেন্ট-বার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কারফিউ ও জরুরি অবস্থাও জারি করেছে বেশ কিছু দেশ।