পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার স্ট্র্যান্ড রোডে রেলওয়ের নিউ কয়লাঘাট ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে রেল বিভাগের কর্মকর্তা, ফায়ার সার্ভিস কর্মী ও পুলিশসহ অন্তত নয় জনের মৃত্যু হয়েছে।
কলকাতার দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকা জানিযেছে, নিহত নয় জনের মধ্যে রেলওয়ের একজন কর্মকর্তা, অগ্নিনির্বাপক বাহিনীর চার কর্মী, একজন আরপিএফ কর্মী এবং পুলিশের একজন এএসআই রয়েছেন। শেষ খবর পর্যন্ত বাকি দুই জনের পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি।
হুগলি নদীর কাছে নিউ কয়লাঘাট ভবনের ১৩ তলায় সন্ধ্যা ৬টা ১০ মিনিটের দিকে আগুনের সূত্রপাত হয়। ওই ভবনে যৌথভাবে ইস্টার্ন রেলওয়ে এবং সাউথ ইস্টার্ন রেলওয়ের কার্যালয় রয়েছে। আগুন লাগার চার ঘণ্টা পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এনডিটিভি জানিয়েছে, স্থানীয় সময় সোমবার সন্ধ্যায় আগুন লাগার পর পাঁচটি মৃতদেহ ১৩ তলায় একটি লিফটের ভেতর পাওয়া যায় । এরা লিফটের ভেতরে দমবন্ধ ও দগ্ধ হয়ে মারা গেছেন।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, বদ্ধ কোনো জায়গায় আগুন লাগলে সেখানে অক্সিজেনের মাত্রা কমে যায়, এ সময় বিষাক্ত কার্বন মনোক্সাইড গ্যাস তৈরি হয়; এতে অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যাওয়ার পাশাপাশি দমবন্ধ হয়েও অনেকে মারা যান।
রাতে দমকল ও পুলিশ কর্মকর্তাদের নিয়ে ১৩ তলায় উঠে মৃতদেহ দেখে এসেছেন বলে জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু। তিনি বলেন, “আমরা উপরে উঠে দেখি, লিফটের মধ্যেই পাঁচ জনের মৃতদেহ পড়ে আছে, বাইরে আরও দুই জনের।”
রেলওয়ের আহত দুই কর্মীকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে নিহতদের প্রত্যেকের পরিবারের জন্য ১০ লাখ রুপি ক্ষতিপূরণ দেওয়ার পাশাপাশি প্রত্যেকের পরিবারের একজনকে সরকারি চাকরি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
এ ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
প্রাথমিক অনুসন্ধানে ১৩ তলার এসি বিস্ফোরিত হয়ে আগুন লাগার ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। আগুন লাগার পর পার্শ্ববর্তী আরেকটি ভবনের ক্যান্টিন কর্মীরা প্রথম আগুন দেখতে পেয়ে তা সবার নজরে আনেন। ওই সময় রেলওয়ের ওই দপ্তরে ৫০০ জন কর্মী ছিলেন বলে জানা গেছে।
অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত হবে বলে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। অগ্নিকাণ্ডের পর ভারতের পূর্ব রেলের সব ট্রেনের টিকেট বুকিং বন্ধ হয়ে যায়।