রেইনট্রি হোটেলে ধর্ষণ মামলার রায় দেয়া ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর সাবেক বিচারক মোছা. কামরুন্নাহারের ফৌজদারি বিচারিক ক্ষমতা জব্দ করেছে হাইকোর্টের আপিল বিভাগ।
এর আগে ১৪ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের এক প্রজ্ঞাপনে কামরুন্নাহারের বিচারিক ক্ষমতা প্রত্যাহারের কথা জানানো হয়েছিল।
সোমবার আপিল বিভাগের কার্যতালিকার ১নং ক্রমিকের মামলায় শুনানি শেষে এ আদেশ দেয়া হয়।
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনসহ পাঁচ বিচারপতির আপিল বেঞ্চের আদেশের বিষয়টি জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের বিশেষ কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুর রহমান।
তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ রায় পরবর্তীতে প্রকাশ হবে।’ েসাইফুর রহমান জানান, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগে বর্তমানে সংযুক্ত এবং ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর সাবেক বিচারক বেগম মোছা. কামরুন্নাহার সোমবার সকাল সাড়ে ৯টায় সুপ্রিম কোর্ট আপিল বিভাগে সশরীরে উপস্থিত হন।
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনসহ পাঁচ বিচারপতির আপিল বেঞ্চে বিচারক কামরুন্নাহার হাজির হন। সোমবার আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় ১ নম্বর ক্রমিকে ছিল রাষ্ট্র বনাম আসলাম সিকদার নামে একটি মামলা। যেখানে ধর্ষণ মামলায় স্থগিতাদেশ থাকার পরও আসামি আসলাম সিকদারকে জামিন দেয়ায় বিচারক কামরুন্নাহারকে গত বছরের ১২ মার্চ তলব করেছিলেন আপিল বিভাগ। ২ এপ্রিল হাজির হয়ে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়। তবে করোনার পরে এই মামলাটি আর কার্যতালিকায় তালিকায় আসেনি। এরপর মামলাটি ১৫ নভেম্বর কার্যতালিকায় আসে। ওই দিন এ বিষয়ে আপিলে শুনানি হয়।
সকালে আপিল বিভাগের কার্যক্রম শুরু হলে বিচারক কামরুন্নাহার হাজির হন। এ সময় আপিল বিভাগ ওই বিচারককে রেখে উপস্থিত সকল আইনজীবীসহ সকলকে বিচার কক্ষ থেকে বের হয়ে যেতে বলা হয়। পরে আপিল বিভাগের পাঁচ বিচারপতি ও বিচারক কামরুন্নাহার বিচার কক্ষে শুনানি হয়।
সাড়ে ৯টা থেকে প্রায় পৌনে ১১টা পর্যন্ত আর কেউই ওই কক্ষে ঢুকতে পারেননি। দীর্ঘ সময় পর বিচারক কামরুন্নাহার কোর্টের ভিন্ন একটি দরজা দিয়ে বের হয়ে যান। তবে এ বিষয়ে আদেশের বিষয়টি অনেক সময় পরে বিশেষ কর্মকর্তা সাইফুর রহমান বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানান।
মামলা থেকে জানা যায়, ধর্ষণের মামলায় ২০১৯ সালের ১৮ জুন হাইকোর্ট থেকে জামিন পান বেসরকারি একটি টেলিভিশনের সাবেক অনুষ্ঠান ব্যবস্থাপক আসলাম সিকদার। ওই জামিন আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে চেম্বার আদালত ওই বছরের ২৫ জুন জামিন স্থগিত করে বিষয়টি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠান। আবেদনটি আপিল বিভাগে বিচারাধীন থাকা অবস্থায় গত বছরের ২ মার্চ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ ওই আসামিকে জামিন দেন। সর্বোচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশের পরও আসামিকে জামিন দেয়ার বিষয়টি আদালতের নজরে আনে রাষ্ট্রপক্ষ।
রাষ্ট্রপক্ষের এ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ১২ মার্চ আপিল বিভাগসংশ্লিষ্ট বিচারককে ব্যাখ্যা জানাতে আদালতে উপস্থিত হতে নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে আসলাম সিকদারকে দুই সপ্তাহের মধ্যে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দেয়া হয়। এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার মামলাটি আপিল বিভাগের তালিকায় আসে।