কার্ড ও ভাতার বই পাওয়ার সাড়ে চার বছর পার হলেও ভাতা পাচ্ছেন না সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার প্রতিবন্ধী শিশু নিলীমা আক্তার মিতা (১৩)। ‘পরের সপ্তাহেই দেয়া হবে’ বলে, সাড়ে চার বছর তার অসুস্থ পিতাকে ঘুরিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। একাধিক বার যোগাযোগ করায় ‘বই দেয়াই ভুল হয়েছে’ বলে, তাকে তিরস্কারও করেন সমাজ সেবা অফিসের এক কর্মী।
উপজেলার রামপাশা ইউনিয়নের পালের চক গ্রামের, নিলীমার পিতা নুরুল ইসলাম জানান, কৃষি কাজ করে ৭ ছেলে-মেয়ে নিয়ে দিনযাপন করছিলেন তিনি। গত ২-৩ বছর ধরে শারীরিক সমস্যার কারণে জীবিকা নির্বাহে অক্ষম। এ অবস্থায় বড় ছেলের সামান্য আয়ের কোন মতে ঘুরছে সংসারের চাকা। এ অবস্থায় অভাব-অনটনের সংসারে তার ছোট মেয়ে বাকপ্রতিবন্ধী নিলীমাকে নিয়ে বেকায়দায় পড়েন তিনি। মুখে ভাষা না থাকলেও পড়া-লেখায় মনোযোগী হয়ে ওঠা নিলীমা কেবল লিখনি শক্তি দিয়েই গত বছর পাঠশালা উত্তীর্ণ হয়। এ কারণে তার পড়া-লেখা ও চিকিৎসা ব্যয় নির্বাহে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সহযোগীতায় প্রতিবন্ধীদের তালিকায় নিলীমার নাম লিপিবদ্ধ করেন তিনি। ২০১৬ সালের ৩০ জুন তার নামে ইস্যু করা হয় প্রতিবন্ধী কার্ডও। দেয়া হয় ভাতার বই। এর পর অদ্যাবধি কোন সরকারি সাহায্য-সহযোগীতা পায়নি সে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে, মিথ্যে আশ্বাস দিয়ে সমাজসেবা অফিসের লোকজন আমাকে সাড়ে চার বছর হয়রানি করেছেন। অফিসের ইউনিয়ন সমাজকর্মী সুনীল কুমার বৈদ্য ‘তোমাদের বই দেয়াই ভুল হয়েছে’ বলে আমাকে তিরস্কার করেন।
অভিযোগ অস্বীকার করে সুনীল কুমার বৈদ্য বলেন, বরাদ্দ না থাকায় সে ভাতা পাচ্ছে না।উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা জুবায়ের আহমদ বলেন, তথ্যগত সমস্যার কারণে কিছু ভাতায় সমসম্যার তৈরী হয়েছে। তবে, এ (নিলীমার) ভাতাটি কেন পাচ্ছেনা তা আমি দেখছি।
এ বিষয়ে কথা হলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বর্ণালী পাল ‘বাংলাদেশ প্রতিদিন’কে বলেন, অভিযোগ পেলে বিষয়টি আমি তদন্ত করে দেখবো।