গত শুক্রবার আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই সভায় জাহাঙ্গীর আলমকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। বহিষ্কারের পর শনিবার দুপুরে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।
আজ দুপুরে জাহাঙ্গীর আলমের বাড়িতে গেলে দেখা যায়, তিনজন নিরাপত্তাকর্মী বাসার সামনে বসে আছেন। বাড়ির নিচতলায় থাকা একটি অফিস কক্ষে তাঁর অনুসারী পাঁচ-ছয়জন বসে গল্প করছেন। তাঁরা বলাবলি করছিলেন, মেয়র কেন আরেকটু সতর্ক হলেন না!
বাড়ির সামনে বসে থাকা অল্প বয়সের এক নিরাপত্তাকর্মী তাঁর নাম বলতে চাননি। তিনি বলেন, দুই-তিন দিন আগেও এই সময়ে বাড়িতে মানুষের ভিড় লেগে থাকত। কে, কার আগে মেয়রের সঙ্গে দেখা করবেন, তাই নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়তেন। কিন্তু দুই দিনের ব্যবধানে সব পরিবর্তন হয়ে গেছে। আজ সকালে মেয়রের কাছে অল্প কয়েকজন লোক এসেছেন।
বাড়ির সামনে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন বাসন এলাকার বাসিন্দা ইমরুল হোসেন। তিনি উৎসুক হয়ে জানতে চান, ‘ভাই, মেয়রের পদটা কি থাকবে, নাকি সেটাও যাবে? থাকলেই মনে হয় আমাগো ভালা হয়তো।’
গত সেপ্টেম্বর মাসে মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের কথোপকথনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়। এতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও জেলার কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্য করা হয়েছে বলে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা অভিযোগ করেন। স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে বহিষ্কারের দাবি জানান।
৩ অক্টোবর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে জাহাঙ্গীর আলমকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। ১৮ অক্টোবরের মধ্যে জাহাঙ্গীরকে এর জবাব দিতে বলা হয়। তিনি জবাবও দেন। ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি ‘সুপার এডিট’ করা বলে বারবার দাবি করেন জাহাঙ্গীর আলম।
ওই ভিডিওর জের ধরে স্থানীয় আওয়ামী লীগের সঙ্গে জাহাঙ্গীর আলমের সম্পর্ক কার্যত ছিন্ন হয়ে যায়। গাজীপুরে সরকারি নানা কার্যক্রমে জাহাঙ্গীর আলমকে এড়িয়ে চলার ঘটনা ঘটতে থাকে। তাঁর শাস্তির দাবিতে অনড় ছিলেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা।