আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে কিরগিজস্তানের পার্লামেন্ট নির্বাচনের ফল বাতিল করেছে দেশটির নির্বাচন কমিশন। চাপের মুখে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী কুবাতবেক বোরনোভ। খবর বিবিসি।
এর আগে, রোববার (৪ অক্টোবর) কিরগিজস্তানে পার্লামেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। কিন্তু, নির্বাচনের প্রকাশিত ফলাফলে দেখা গিয়েছিল, প্রেসিডেন্ট সুরোনবাই জিনবেকভের মিত্র দলগুলো অধিকাংশ ভোট পেয়েছে। নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর থেকে কারচুপির অভিযোগে রাজধানী বিশকেকজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়।
মঙ্গলবার (৬ অক্টোবর) বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে অন্তত একজনের মৃত্যু এবং ছয় শতাধিক আহত হওয়ার পর প্রতিবাদকারীরা পার্লামেন্ট ভবন দখল করে নেয়, প্রেসিডেন্টের দফতর তছনছ করে ফেলে।
এদিকে, ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে প্রধানমন্ত্রী বোরনোভ পদত্যাগ করলেও প্রেসিডেন্ট জিনবেকভ এখনও ক্ষমতায় আছেন। তবে, তিনি সরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দিয়েছেন বলে বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
অন্যদিকে, মঙ্গলবার রাতে কিরগিজস্তানের পার্লামেন্টে বিরোধীদলীয় রাজনীতিক সাদির জাপারোভকে নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মনোনীত করতে সম্মত হয় সরকারি কর্তৃপক্ষ। কিন্তু, যে হোটেলে ওই বৈঠক আহ্বান করা হয়েছিল ক্রুদ্ধ একদল লোক সেখানে হামলা চালালে জাপারোভ পেছনের একটি দরজা দিয়ে পালিয়ে যান বলে কিরগিজ গণমাধ্যমের বরাতে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
এর মাত্র একদিন আগে জাপারোভকে কারাগার থেকে মুক্ত করে নিয়ে এসেছিল বিক্ষোভকারীরা। সাত বছর আগে বিরোধীদলের বিক্ষোভ চলাকালে আঞ্চলিক একজন গর্ভনরকে অপহরণের দায়ে জাপারোভের ১১ বছরের কারাদণ্ড হয়েছিল।
এছাড়াও, বিক্ষোভকারীরা আরও যাদেরকে কারামুক্ত করে নিয়ে এসেছিল তাদের মধ্যে দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট আলমাজবেক আতামবায়েভও আছেন। দুর্নীতির দায়ে আতামবায়েভের ১১ বছরের কারাদণ্ড হয়েছিল।
অপরদিকে, বুধবার (৭ অক্টোবর) স্থানীয় সময় সকালে রাজধানীর পরিস্থিতি শান্ত ছিল বলে বিশকেক পুলিশের উদ্ধৃতি দিয়ে জানিয়েছে নিউজ ওয়েবসাইট আকিপ্রেস।
প্রসঙ্গত, কিরগিজস্তানের আইন অনুযায়ী, পার্লামেন্টে আসন নিশ্চিত করতে হলে কোনো দলকে ন্যূনতম সাত শতাংশ ভোট পেতে হয়। রোববারের নির্বাচনে অংশ নেওয়া ১৬ দলের মধ্যে মাত্র চার দল এ শর্ত পূর্ণ করেছে। এই চার দলের মধ্যে তিনটিই প্রেসিডেন্টের পক্ষের শক্তি।
কিন্তু, নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগ তোলা বিক্ষোভকারীরা বলছেন, প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক গোষ্ঠীগুলো ভোট কিনেছে এবং ভোটে হস্তক্ষেপ করেছে। আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরাও বিক্ষোভকারীদের এ ভাষ্যকে ‘বিশ্বাসযোগ্য’ বলে রায় দিয়েছেন।