মোঃআনজার শাহ ,কুমিল্লা: কুমিল্লার মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক বীর মুক্তিযোদ্ধা বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা সাবেক সংসদ সদস্য এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম নেতা লালমাই সরকারী ডিগ্রী কলেজের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ মরহুম অধ্যক্ষ আবুল কালাম মজুমদারের ৩০ তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয়। গতকাল ৩১ শে অক্টোবর বৃহস্পতিবার। সকালে তার প্রতিষ্টিত বাগমারা মহিলা কলেজ সংলগ্ন এতিমখানার সাথে কবরে কালাম মজুমদারের আত্মীয়-স্বজন, বিভিন্ন রাজনীতি দলের নেতাকর্মী, সামাজিক সংগঠন,স্কুল কলেজের ছাত্রছাত্রীরা, শিক্ষকগণ, কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায়। এলাকার সর্বস্তরের মানুষ কবর জিয়ারত করেন। কবরের পাশে এতিমখানায় কুরআন তিলাওয়াত করা হয়। বিশেষ মোনাজাত করে এতিম শিশু বিভিন্ন মাদ্রাসার শিক্ষকরা। অধ্যক্ষ আবুল কালাম মজুমদারের সংক্ষিপ্ত জীবনী : জন্ম ১৯৪৫সালের ২৫শে আগস্ট,গ্রাম:মেহের কুল দৌলতপুর,সাহেব বাড়ি.তিনি পাঁচ ভাই ও দুই বোনের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ। পরিবারে সকলে ছোট বেলায় তাকে আবু বলে ডাকতো।পড়াশুনা শুরু করেন দৌলতপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।তারপর বাগমারা উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হন।স্কুল জীবনে তার মধ্যে নেতৃত্বের আবাস পাওয়া যায়।১৯৬২ সনে ঢাকা বোর্ড থেকে প্রথমবিভাগে SSC পাশ করেন।তারপর ভর্তি হন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে।১৯৬৪ সালে তিনি মেধা তালিকায় ১৪ তম স্থান অধিকার করে
HSCপাশ করে।১৯৬৯ সালে তিনি অর্থনীতির উপর অনার্স মাস্টার্স ডিগ্রী অর্জন করেন।পড়াশুনা শেষ করে তিনি নজরুল একাডিমিতে (পিপুলিয়া) প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।১৯৭০ সালে রাজনীতির সাথে পুরপুরি মনোযোগ দেন।১৯৭০ সালের নির্বাচনে তিনি বিশেষ ভূমিকা রাখেন।১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সংগঠকের ভূমিকায় থেকে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন।১৯৭৩ সালে তিনি স্বেচ্ছাসেবক বাহিনির বৃহওর কুমিল্লা জেলার প্রধান ছিলেন।তিনি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১৯৭৩সালে এবং পরবর্তীতে ১৯৮৬ সালে আওয়ামীলীগের প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।১৯৭৫ সালের ১৫ই আগষ্ট শেখ মজিবুর রহমান স্ব পরিবারে নিহত হবার পর তিনি অসহায় হয়ে পরলেন।অনেকের মতো কালাম মজুমদারের কাছেও লোভনিয় প্রস্তাব এসেছিলো কিন্তু তাতে তিনি পা দিলেন না।তিনি আওয়ামীলীগের হাল দরলেন।তিনি ১৯৯১সালের নির্বাচনে অংশ গ্রহন করেন। ১৯৮৬ সংসদে তার বক্তব্য তাকে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেন। সেই সময় তার বক্তব্য এরশাদ সরকারের ভিতকে কাঁপিয়ে দেয়।রাজপথে এবং সংসদে স্বৈরাচারি এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে তিনি জাতীয় নেতায় পরিনত হন।এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে তিনি কুমিল্লা জেলা ১৫দলের আহ্বায়ক ছিলেন।বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ কার্যকরি পরিষদের সদস্য ছিলেন।বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা কমিশনের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বৃহত্তর কুমিল্লা জেলা রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সাধারন সম্পাদক ছিলেন এবং লন্ডনে এক সেমিনারে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেন।সমবায় ফেডারেশনের কেন্দ্রিয় কমিটির পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।লালমাই ডিগ্রী কলেজ, বাগমারা মহিলা কলেজ,বাগমারা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, দৌলতপুর উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। জীবনের শেষ সময় এসে আবুল কালাম মজুমদার মহিলা কলেজ প্রতিষ্ঠার বীজ বপন করেন।,, কুমিল্লার এই গর্বিত সন্তান কুমিল্লাকে করেছেন আলোকিত ,আজো ওনার সেই বানীটি মানুষের মুখে মুখে বেঝে উঠে ,,ফসলের মাঠ বলে দিবে কুমিল্লার কোথায় শুরু আর কোথায় শেষ ,,মানুষ ভূলেনি ভূলবেনা।