1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : জাতীয় অর্থনীতি : জাতীয় অর্থনীতি
রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৩৫ পূর্বাহ্ন

কৃষিভিত্তিক শিল্পায়নে জোর দেওয়ার আহ্বান তিন অর্থনীতিবিদের

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : শনিবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২১

বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মহামন্দা ও করোনাভাইরাস মহামারী উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কৃষিভিত্তিক শিল্পায়নে জোর দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন দেশের তিন অর্থনীতিবিদ

শনিবার দুপুরে শিল্পায়ন: শোভন বাংলাদেশের সন্ধানে শিরোনামে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি আয়োজিত এক ওয়েব সেমিনারে অংশ নিয়ে এ আহ্বান জানান তারা

অর্থনীতি সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. জামালউদ্দিন আহমেদের সঞ্চালনায় এতে আলোচক হিসেবে অংশ নেন ঢাকা স্কুল অব ইকনোমিকস-এর পরিচালনা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন এর পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের প্রাক্তন চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. শফিক-উজ জামান এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের প্রাক্তন চেয়ারম্যান ড. মোমোয়াজ্জেম হোসেন খান

গণমানুষের অর্থনীতিবিদ হিসেবে খ্যাত অধ্যাপক আবুল বারকাতের সদ্য প্রকাশিত বড় পর্দায় সমাজ-অর্থনীতি-রাষ্ট্র: ভাইরাসের মহাবিপর্যয় থেকে শোভন বাংলাদেশের সন্ধানে গবেষণাগ্রন্থটির বিষয়বস্তু ঘিরে ১৩ সিরিজের আলোচনা সভার এ ষষ্ঠ পর্বটি অনুষ্ঠিত হয় 

সভায় অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, একসময় বাংলাদেশের ময়মনসিংহ থেকে কলকাতা পর্যন্ত রেললাইন করা হয়েছিল কেবল পাট পরিবহনের জন্য, মানুষের জন্য নয় আবুল বারকাত তার বইয়ে যে কথাটা বলেছেন আমি তার সঙ্গে একমত যে প্রাকৃতিক সম্পদে সবারই সমান মালিকানা থাকবে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ পরিস্থিতি এড়াতে প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষায় কৃষিভিত্তিক শিল্পায়নে আমাদের ফিরে যেতে হবে

 স্বাধীনতার আগে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিম পাকিস্তানের শিল্পায়নের বৈষম্য তুলে ধরে কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, ওই সময়ের মিল মালিকরা ছিলেন সবাই পশ্চিম পাকিস্তানের আমাদের পাটচাষীরা দাম পেতো কম এই শোষণ ও সম্পদ বন্টনে বৈষম্য আবুল বারকাতের বইয়ে উল্লেখ আছে 

অধ্যাপক ড. শফিক-উজ জামান বলেন, প্রকৃতির বিরূপ প্রতিক্রিয়া নিয়ে কার্লস মার্ক্সের একটা কথা আছে এমন যে- আমরা কখনও প্রকৃতিকে জয় করতে পারবো না প্রকৃতিকে জয় করলে তার ক্ষতি হবে, বরং প্রকৃতির সঙ্গে সহাবস্থান করতে হবে আজ করোনাভাইরাসের প্রকোপে আমরা যখন ঘরবন্দি তখন মার্ক্সের এ কথাটা অনেক প্রাসঙ্গিক…আগে পাট ছিলো আমাদের শিল্পায়নের মাধ্যম, কিন্তু আশির দশকের শেষদিক থেকে পোশাকশিল্প হয়ে গেলো আমাদের শিল্পায়নের মূল মাধ্যম এটা সঠিক যে এ খাতটি নারীদের জন্য ব্যাপক আত্মকর্মসংস্থান তৈরি করেছে কিন্তু আজ নদী দূষণের পেছনে শিল্পকারখানা ও তার বর্জ্য ভূমিকা রাখছে, মিঠা পানি ও উর্বর ভূমি ধ্বংস হচ্ছে প্লাস্টিকে 

কৃষিভিত্তিক শিল্পায়নের সুবিধাগুলো উল্লেখ করে অধ্যাপক শফিক-উজ জামান বলেন, এতে কৃষিপণ্যের দাম বাড়বে কৃষক আরও টাকা পাবে কৃষকের ক্রয় ক্ষমতা বাড়বে মনে রাখতে হবে কৃষক একইসঙ্গে উৎপাদক ও শিল্পপণ্যের ক্রেতা 

শফিক-উজ জামান বলেন, উচ্চ প্রবৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান একসঙ্গে চলে না শ্রমিক ছাঁটাই না করে কীভাবে উৎপাদন বাড়ানো যায় তা ভাবতে হবে আভ্যন্তরীণ বাজার সম্প্রসারণ, বৈচিত্র্যপূর্ণ কৃষিপণ্য তৈরি ও কৃষি গবেষণা খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে 

অধ্যাপক আবুল বারকাতকে প্রথাবিরোধী অর্থনীতিবিদ উল্লেখ করে মোয়াজ্জেম হোসেন খান বলেন, অধ্যাপক আবুল বারকাতের লেখা বড় পর্দায় সমাজঅর্থনীতিরাষ্ট্রভাইরাসের মহাবিপর্যয় থেকে শোভন বাংলাদেশের সন্ধানে একটি টাইটানিক গ্রন্থ এ বইয়ে মুক্তিযোদ্ধা বারকাত তার নিজস্ব ভূমি উত্থিত চিন্তাভাবনা গ্রন্থিত করেছেন তিনি দেশের বর্তমান শিল্পায়নকে বিপর্যয়কর শিল্পায়ন বলেছেন ও কল্যাণ শিল্পায়ন গঠনের কথা বলেছেন এর জন্য ১৫টি সুপারিশ করেছেন তিনি, এর মধ্যে প্রথম সুপারিশ হলো মানবায়ন যা মানুষকে তার বাস্তু থেকে কখনও উৎখাত করবে না   

সভার সূচনা বক্তব্যে জামালউদ্দিন আহমেদ বলেন, বিশ্বব্যাপি চলছে অর্থনৈতিক মহামন্দা একইসঙ্গে কোভিড-১৯ এর অপ্রতিরোধ্য প্রতাপ বৈশ্বিক এই মহা দুঃসময়ে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি খুঁজছে শোভন সমাজশোভন রাষ্ট্রশোভন বিশ্বব্যবস্থা সে কারণেই এ আয়োজন আমাদের লক্ষ্য জ্ঞানভিত্তিক প্রভাবকের ভূমিকা পালন করা 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ও প্রাক্তন চেয়ারম্যান এবং জাপানিজ স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ও প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান আবুল বারকাতের ০ বছরের গবেষণার ফসল বড় পর্দায় সমাজ-অর্থনীতি-রাষ্ট্র: ভাইরাসের মহাবিপর্যয় থেকে শোভন বাংলাদেশের সন্ধানে বইটি যৌথভাবে প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি ও মুক্তবুদ্ধি প্রকাশনা। ৭১৬ পৃষ্ঠার এ বইটি সম্পর্কে অভিনন্দনবাণী দিয়েছেন ভাষাবিজ্ঞানী, দার্শনিক ও সমাজ সমালোচক অধ্যাপক নোয়াম চমস্কি। কৃতজ্ঞতাপত্রমুখবন্ধ ও মোট ১২টি অধ্যায় ছাড়াও বইটিতে আছে ২৭টি সারণি৩৯টি লেখচিত্রতথ্যপঞ্জি ও নির্ঘণ্ট 

এ বইটি নিয়েই বড় দাগে ১৩টি ভার্চুয়াল আলোচনার এ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত পূর্বের পাঁচটি সেমিনারের বিষয়বস্তু ছিলশোভন সমাজ ধারণাবৈষম্যঅসমতাদারিদ্র্যশ্রেণি এবং কোভিড১৯ উদ্ভূত পরিবর্তন, ৩নারীর ক্ষমতায়ন এবং শিশুর বিকাশ, ৪ভূমি  কৃষি ও ৫. শিক্ষাবিজ্ঞানপ্রকৃতি 

১৩ পর্বের ভার্চুয়াল আলোচনা সভার অন্যান্য বিষয়বস্তুগুলো হলো: শোভন সমাজ ও মূলধারার সামাজিক বিজ্ঞান, জনগণের স্বাস্থ্যধর্মভিত্তিক সাম্প্রদায়িকতা-মৌলবাদ-জঙ্গীবাদসামষ্টীক ও ব্যষ্টিক অর্থনীতিবিশ্বায়নশোভন সমাজ নির্মাণে রাষ্ট্র টাকা পাবে কোথায়কালো টাকাঅর্থপাচার এবং শোভন সমাজের লক্ষ্যে জাতীয় বাজেট

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© ২০২০ দৈনিক জাতীয় অর্থনীতি