বাংলাদেশ খ্রীষ্টান এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট মি. নির্মল রোজারিও ও মহাসচিব মি. হেমন্ত আই. কোড়াইয়া এক যুক্ত বিবৃতিতে বলেছেন- সম্প্রতি কোটা পদ্ধতি বাতিলের জন্য আন্দোলন করছে ছাত্র সমাজ। ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে ছাত্র সমাজের দাবির প্রেক্ষিতে সরকার কোটা পদ্ধতি বাতিল করলে তার বিরুদ্ধে ২০২১ সালে কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হাই কোর্টে রিট দায়ের করেছিলেন। গত ০৫ জুন হাই কোর্ট এই মর্মে নির্দেশনা দেয় যে, কোটা পদ্ধতি বাতিল সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক। আর এর পর থেকেই আন্দোলনে নামে ছাত্র সমাজ। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় এই যে, আন্দোলনের নামে শিক্ষার্থীরা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নানাভাবে অপমান, অপদস্ত ও হেয়প্রতিপন্ন করছেন। শুধু তাই নয়, গত ১৪ জুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যায়ল এলাকায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা নিজেদের রাজাকার দাবি করার যে কুৎসিত ও কদাকার বহিপ্রকাশ ঘটিয়েছে তা অত্যন্ত দুঃখ ও লজ্জাজনক এবং একই সাথে ঔদ্ধত্যপূর্ণ।
সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিলের যে দাবি আন্দোলনকারীরা তুলেছেন তা আমাদের সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক। পৃথিবীর সকল রাষ্ট্রেই সরকারী চাকরি থেকে শুরু করে নাগরিক নানা সুবিধা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে সমতা সৃষ্টির লক্ষ্যে রয়েছে কোটা পদ্ধতি। আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্রেসমূহেও কোটা ব্যবস্থা সাংবিধানিকভাবে স্বীকৃত। যে কোন সভ্য রাষ্ট্রে নাগরিকদের সমান সুযোগ নিশ্চিতের জন্য কোটা ব্যবস্থা রয়েছে। কোটা ব্যবস্থা সম্পূর্ণরুপে বাতিলের দাবি অযৌক্তিক এবং আবেগতারিত বলে নেতৃবৃন্দ উল্লেখ করেছেন। তবে তারা সার্বিক দিক বিচার-বিবেচনা করে বর্তমান কোটা পদ্ধতির সংস্কার করা যেতে পারে বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন। তবে কোনভাবেই কোটা পদ্ধতি বাতিল করা যাবে না। কোটা ব্যবস্থা বাতিল করা হলে অনগ্রসর জাতিগোষ্ঠিসহ যাদের জন্য কোটা প্রয়োজন তারা আরো পিছিয়ে পরবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে “আমি রাজাকার” স্লোগান প্রদানের আমরা তিব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাচ্ছি। মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীনতার চেতনা কোন ঠুনকো বিষয় নয় এর সাথে জড়িত রয়েছে লক্ষ লক্ষ মানুষের আত্মদান। এই চেতনার সাথে এধরনের হেয়ালিপনা অপ্রতাশিত, অনভিপ্রেত ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ। আমরা মনে করি যারা কোটা আন্দোলনে সাথে সম্পৃক্ত রয়েছেন দ্রুত তাদের বোধদয় হবে এবং তারা সরকারকে একটি যৌক্তিক সমাধানে সার্বিক সহযোগিতা করবেন।