1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : জাতীয় অর্থনীতি : জাতীয় অর্থনীতি
বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৪৬ অপরাহ্ন

কোস্টগার্ড সদস্যদের মর্যাদা সমুন্নত রাখার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

রিপোর্টার
  • আপডেট : বুধবার, ২১ জুন, ২০২৩

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ কোস্টগার্ড সদস্যদের দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে সততা ও বিশ্বাসের সঙ্গে দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে বাহিনীর সুনাম ও মর্যাদা সমুন্নত রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘আমি আপনাদের (কোস্ট গার্ড সদস্যদের) আশ্বাস দিচ্ছি যে, আমার সরকার এই বাহিনীর ক্রমাগত অগ্রগতির পাশাপাশি আপনাদের সামগ্রিক কল্যাণে প্রয়োজনীয় সব সহায়তা প্রদান করবে।’
প্রধান অতিথি হিসেবে চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের স্থানীয়ভাবে তৈরি পাঁচটি অত্যাধুনিক জাহাজ কমিশন করার সময় প্রধানমন্ত্রী আজ বুধবার এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা তঁর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে বলেন, তাঁর সরকার ভবিষ্যতে নতুন দায়িত্ব পালনে সক্ষম হিসেবে কোস্টগার্ডকে একটি আধুনিক ও সমসাময়িক বাহিনী হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করছে।
সরকারপ্রধান বলেন, এ ছাড়া গভীর সমুদ্রে জনগণের জানমালের নিরাপত্তার পাশাপাশি জাতীয় স্বার্থে বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের যোগাযোগ ব্যবস্থায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১-এর সঙ্গে ডিজিটাল সংযোগ স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, এছাড়া ভাসানচরে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ কোস্টগার্ডে ড্রোন প্রযুক্তি সংযোজন করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, গভীর-সমুদ্র এবং ‘সুনীল অর্থনীতি’ অঞ্চলের সুরক্ষা প্রদানের জন্য তাঁর সরকারের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ২০২৬-৩০ সালের মধ্যে তারা আরও দুটি সর্ব-আবহাওয়ায় এবং গভীর-সমুদ্রে অফশোর প্যাট্রোল ভেসেল (ওপিভিএস), একটি হাসপাতাল সুবিধাযুক্ত জাহাজ, হোভারক্রাফ্ট এবং বেশ কয়েকটি উচ্চগতির জাহাজ যুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘২০৩১ থেকে ২০৪১ সালের মধ্যে কোস্ট গার্ড একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ, পরিপক্ব, আধুনিক এবং অনুকরণীয় স্মার্ট বাহিনী হবে।’

সরকার বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের নিজস্ব জনবল নিয়োগ কার্যক্রম এবং বাহিনী পুনর্গঠনের উদ্যোগও গ্রহণ করেছে উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকায় ২০০৯ সাল থেকে কোস্টগার্ডের জনবল বৃদ্ধি করা হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ কোস্টগার্ড গভীর সমুদ্র নির্ভর অর্থনৈতিক কর্মকান্ডকে গতিশীল ও নিরাপদ রাখার পাশাপাশি সুনীল অর্থনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রকল্প ও ব্যক্তিবর্গকে নিরাপত্তা দিতে আন্তরিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে আসছে।
তিনি বলেন, ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে আওয়ামী লীগ সরকার বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের বিভিন্ন জোনের জন্য জমি, অবকাঠামো নির্মাণ এবং বিভিন্ন ধরনের নৌযান সরবরাহ করে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৯ সালে তাঁর সরকারের দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় এসে উপকূলীয় সংকট ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র, ঘাঁটিতে অফিসার এবং নাবিকদের বাসস্থান, অফিসারদের মেস, নাবিকদের কোয়ার্টার এবং কোস্ট গার্ডের স্টেশন ও ফাঁড়িতে প্রশাসনিক ভবন নির্মাণ করেছে।
তিনি আরও বলেন, পটুয়াখালী অঞ্চলে নিজস্ব প্রশিক্ষণ ঘাঁটি ‘বিসিজি বেস অগ্রযাত্রা’ নির্মাণ করা হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, গত ১৪ বছরে কোস্টগার্ডে মোট ১৫৪টি আধুনিক ও দ্রুতগতির বিভিন্ন আকারের জাহাজ এবং জলযান তৈরি করে কোস্ট গার্ডে সংযোজন করা হয়েছে।
এ ছাড়া চারটি অফশোর প্যাট্রোল ভেসেল (ওপিভি), এবং নিজস্ব ইয়ার্ডে তৈরি অত্যাধুনিক ১০ মিটার রেসকিউ বোট এবং জাপান থেকে আনা ২০ মিটার রেসকিউ বোট বাহিনীর বহরে যুক্ত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, কোস্টগার্ড জাহাজ নির্মাণ, মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য গজারিয়ায় একটি ডকইয়ার্ডও নির্মিত হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন, বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড নিজস্ব ইয়ার্ডে জাহাজ নির্মাণের ফলে স্বয়ংসম্পূর্ণতা ও সক্ষমতার একটি নতুন স্তরে পৌঁছাবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ও জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. মুস্তাফিজুর রহমান অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের মহাপরিচালক রিয়ার এডমিরাল আশরাফুল হক চৌধুরী।
বাংলাদেশ কোস্টগার্ড এবং নতুন কমিশনকৃত জাহাজের অপারেশনাল কার্যক্রম তুলে ধরে একটি সংক্ষিপ্ত ভিডিও প্রদর্শন করা হয়।
পাঁচটি জাহাজের মধ্যে, দুটি অভ্যন্তরীণ টহল জাহাজ ‘বিসিজিএস জয় বাংলা’ এবং ‘বিসিজিএস অপূর্ব বাংলা’ নারায়ণগঞ্জের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ডকইয়ার্ড অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস লিমিটেড নির্মিত এবং দুটি টাগবোট ‘বিসিজিটি প্রত্যয়’ এবং ‘বিসিজিটি প্রমত্তা’ এবং ভাসমান ক্রেন ‘বিসিজিএফসি শক্তি’ তৈরি করেছে খুলনা শিপইয়ার্ড।
প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের মহাপরিচালক নতুন কমিশনকৃত জাহাজের কমান্ডিং অফিসারদের কাছে ‘কমিশনিং ফরমান’ হস্তান্তর করেন।
পরে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের নতুন কমিশনপ্রাপ্ত জাহাজগুলোর নাম ফলক উন্মোচন করেন। কোস্টগার্ডের সদস্যরাও প্রধানমন্ত্রীকে রাষ্ট্রীয় সালাম দেন।
নতুন জাহাজগুলো অতি আধুনিক যন্ত্রপাতি, সেন্সর এবং নজরদারি রাডার দিয়ে সজ্জিত। উপকূলীয় টহল জাহাজগুলোতে তিনটি স্বয়ংক্রিয় কামান রয়েছে, যা অপারেশনাল কার্যক্রম রক্ষা ও পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
জাহাজগুলোর নজরদারি ক্ষমতা ৯৬ নটিক্যাল মাইল এবং কামানের পাল্লা ৪ কিলোমিটার। জাহাজগুলো এই রেঞ্জের মধ্যে অন্যান্য জাহাজ, অপরাধী বা শত্রুদের যে কোনও কিছু শনাক্ত করতে সক্ষম, কামানগুলো বিসিজিকে কার্যক্রম পরিচালনা করতে সহায়তা করবে।
এই পাঁচটি নৌযান চালু হলে, বহির্নোঙরে বাণিজ্যিক জাহাজে চুরি রোধ, সমুদ্র পথে মানব ও মাদক পাচার নিয়ন্ত্রণ, সুনীল অর্থনীতি, সীমান্তে টহল এবং উদ্ধার অভিযান পরিচালনার সক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং সামুদ্রিক দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে বিসিজির অপারেশনাল কার্যক্রম ত্বরান্বিত হবে।
বিসিজি কর্মকর্তাদের মতে, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ১৯৯৪ সালে সংসদে ‘বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড বিল’ উত্থাপন করেছিলেন যখন তিনি সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা ছিলেন। তাঁর প্রস্তাবে ১৯৯৫ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ কোস্টগার্ড প্রতিষ্ঠিত হয়।
পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে কোস্টগার্ডে নতুন প্লাটফর্ম এবং অবকাঠামোগত উন্নয়ন যুক্ত করা হয়, যা বাহিনীর অপারেশনাল কার্যক্রমকে ত্বরান্বিত করে এবং ব্যাপক সাফল্য লাভ করে।
উপকূলীয় জলসীমায় সক্রিয় উপস্থিতি এবং সতর্ক নজরদারি হিসেবে সামুদ্রিক সম্পদের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করার পাশাপাশি, কোস্ট গার্ড সামুদ্রিক সম্পদ সংরক্ষণ, উপকূলীয় অঞ্চলে চোরাচালান রোধ, মাদক চোরাচালান নিয়ন্ত্রণ, বন সম্পদ সংরক্ষণ এবং সাগর ও নদী সংলগ্ন এলাকায় পরিবেশ দূষণ রোধ এবং জাটকা ও মা ইলিশ ধরা বন্ধ করা ও মানব পাচার রোধ করার ক্ষেত্রে শুরু থেকেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে।
খবর বাসস

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© ২০২০ দৈনিক জাতীয় অর্থনীতি