করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে সারাদেশে আবারও টিকা ক্যাম্পেইন শুরু হচ্ছে। দীর্ঘদিন টিকা পেতে নিবন্ধন করেও যারা টিকা পাননি, ক্যাম্পেইনে তাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিনে সারাদেশে ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে করোনাভাইরাসের ৮০ লাখ ডোজ টিকা দেওয়ার টার্গেট নিয়েছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়।
রোববার (২৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে দেশের করোনা পরিস্থিতি ও টিকা কার্যক্রম নিয়ে আয়োজিত এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব তথ্য জানিয়েছেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, সারাদেশের ছয় হাজারের বেশি কেন্দ্রে সকাল ৯টা থেকে দিনব্যাপী একাধিক শিফটের মাধ্যমে এ টিকা দেওয়া হবে। টিকাদানের ক্ষেত্রে প্রথম দুই ঘণ্টা ৫০ বছরের বেশি বয়সী নারী, শারীরিক প্রতিবন্ধীরা অগ্রাধিকার পাবেন।
মন্ত্রী বলেন, ক্যাম্পেইনে আমাদের লক্ষ্য একদিনে আশি লাখ ডোজ টিকা দেওয়া। আমরা এর আগে একবারে ৪৫ লাখ ভ্যাকসিন দিতে পেরেছি। সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য এবার আমরা টার্গেট নিয়েছি এবং এটা আমরা বৃদ্ধি করতে থাকব। ক্যাম্পেইনে যারা যুক্ত থাকবেন, অবশ্যই এই লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী টিকা দেওয়ার জন্য চেষ্টা করবেন। যেহেতু প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন ২৮ সেপ্টেম্বর, সেজন্য ক্যাম্পেইনটি আমরা শুরু করছি সেদিন থেকে। ইনশাল্লাহ আমাদের লক্ষ্য অর্জন হবে আমরা আশা করছি।
তিনি বলেন, ৪ হাজার ৬০০টি ইউনিয়ন, ১ হাজার ৫৪টি পৌরসভা এবং সিটি করপোরেশন এলাকায় ৪৩৩টি ওয়ার্ডে স্থাপন করা টিকাকেন্দ্র থেকে এই টিকা দেওয়া হবে। ইউনিয়ন পর্যায়ে ৩টি, পৌরসভায় ১টি এবং সিটি করপোরেশন এলাকার কেন্দ্রে ৩টি করে বুথ থাকবে। তৃণমূল পর্যায়ের মানুষের কাছে টিকা পৌঁছে দেওয়ার জন্য এ টার্গেট নেওয়া হয়েছে।
জাহিদ মালেক বলেন, ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে গ্রামগঞ্জ পর্যায় পর্যন্ত টিকা নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। বিশেষ করে যারা দূরে থাকেন, দরিদ্র জনগোষ্ঠী, যারা সবসময় টিকা নিতে আসতে পারেন না এবং বয়স্ক যারা, তাদের অগ্রাধিকার দেওয়ার উদ্দেশ্য নিয়ে আমরা টিকা ক্যাম্পেইন শুরু করছি।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, এখন পর্যন্ত পাঁচ কোটি ৫২ লাখ টিকা পাওয়া গেছে। তার মধ্যে প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ মিলিয়ে চার কোটি দুই লাখ মানুষকে টিকা দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, যারা অনেকদিন নিবন্ধন করেছেন কিন্তু টিকা পাননি এবং অপেক্ষায় আছেন, তাদের অবশ্যই আমরা অগ্রাধিকার দেব। আপনারা জানেন, প্রথমদিকে নিবন্ধন একেবারে অনেক হয়ে গিয়েছিল। যে কারণে আমাদের একটি জট তৈরি হয়েছিল। কোনো কোনো দিন ২০ থেকে ২৫ লাখ লোকের নিবন্ধন হয়েছিল। এখন আমাদের হাতে পর্যাপ্ত টিকা আছে, এখন আর জট থাকবে না।
মন্ত্রী বলেন, দেশে টিকা উৎপাদনের বিষয়টি চলমান আছে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ইনসেপ্টা ফার্মা এ নিয়ে চীনের সঙ্গে কাজ করছে। আমি যতটুকু জানি, তাদের কাজকর্ম চলমান। তারা যেভাবে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, আশা করি তারা সেভাবেই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করবে। আমাদের টিকার কোনো কোনো ঘাটতি হবে না। ডিসেম্বরের মধ্যে কেনার মাধ্যমে এবং কোভ্যাক্স থেকে যথেষ্ট পরিমাণ টিকা পাব।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, এখন পর্যন্ত পাঁচ কোটি ৫২ লাখ টিকা পাওয়া গেছে। তার মধ্যে প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ মিলিয়ে চার কোটি দুই লাখ মানুষকে টিকা দেওয়া হয়েছে।
ভার্চুয়াল এই অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম, অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদি সেব্রিনা ফ্লোরাসহ লাইন ডিরেক্টর ও বিভিন্ন মিডিয়ার সাংবাদিকরা।